শ্রীজাত এবং সৃজিত
ভরা হাটে একে অন্যের হাঁড়ি ভাঙলেন হবু পরিচালক শ্রীজাত এবং সৃজিত মুখোপাধ্যায়। শ্রীজাতর প্রথম ছবি ‘মানবজমিন’-এ তিনি অতিথি শিল্পী। রাখিবন্ধনের দিন ছবির নায়ক-নায়িকা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা সরকার, সুরকার জয় সরকারকে নিয়ে নেটমাধ্যমে আড্ডায় এসেছিলেন নব্য পরিচালক। সঞ্চালনায় অগ্নি। সেখানেই মু্ম্বইয়ে ‘সাবাস মিঠু’-র শ্যুটের ফাঁকে আড্ডায় যোগ দিলেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক।
আড্ডায় শ্রীজাতর কপট ক্ষোভ, ‘‘এই ছবিতে অভিনেতা নন, গীতিকার সৃজিতকে চেয়েছিলাম। সৃজিত সপাটে জানিয়েছেন, বলিউডে বড় বড় কাজ করছি! গান লেখার সময় নেই।’’ এর পরেই কবির রসিকতা, তখন বাধ্য হয়েই রামপ্রসাদ সেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শরণ নেন তিনি। ওঁদের হাতে বলিউডের কোনও কাজ নেই বলে! পরিচালকের আরও আক্ষেপ, অথচ অভিনয়ের কথা বলতেই এক কথায় রাজি সৃজিত! তখন আর বলিউড নিয়ে তাঁর কোনও বাহানা নেই।
সৃজিত-শ্রীজাতর যুগলবন্দি মানেই একের পর এক অন্দরের গপ্পো ফাঁস! আড্ডার শুরুতেই সঞ্চালকের দাবি, শ্রীজাত নাকি তাঁকে আলাদা করে জানিয়েছেন, এই ছবি বানিয়ে তিনি আরেকটি মুঠোফোন কিনবেন। সত্যিই কি কবি-পরিচালকের এত করুণ দশা? সুযোগ পেতেই সৃজিতের ছক্কা, ‘‘শ্রীজাত আমার দেখা এমন এক কবি, যিনি মনখারাপ হলে বলেন, ‘যাই একটু প্যারিস ঘুরে আসি!' সাধারণ মানুষ সপ্তাহান্তে মন্দারমণি যাওয়ার কথা ভাবেন। সেখানে কবি ইচ্ছে হলেই সপ্তাহান্ত কাটান প্যারিসে। তাঁর আরেকটি মুঠোফোন কিনতে ছবি বানাতে হবে, এ কথা অবিশ্বাস্য।’’ পরিচালকের আরও দাবি, শ্রীজাতর ছবি তৈরির নেপথ্য কারণ অন্য। কবির কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘‘ছবির পরিচালনায় নিজেকে প্রমাণিত করার পরে গীতিকার হিসেবেও আমি প্রমাণিত। ‘নিজেকে ভালবাস তুমি এ বার’ বা ‘মনটা আহারে’ তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। সে সব দেখেই নাকি শ্রীজাত হতাশ! তখনই ঠিক করে, এ বার ও ছবি পরিচালনা করবে।’’
আড্ডার মধ্যেই মন্তব্য বিভাগে যোগ দেন ছবির প্রযোজক রানা সরকার। প্রশ্ন তোলেন, সৃজিতের এ হেন আচরণের কি শোধ তুলবেন শ্রীজাত? সঙ্গে সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ ছবির ‘ক্যামিও অভিনেতা’র। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিশোধ তো আমার নেওয়া উচিত! এই আড্ডার বিজ্ঞাপনের শুরুতে আমার মুখ দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই ছবি সরিয়ে আমাকেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন শ্রীজাত! আমি বলেই এখানেও ‘ক্যামিও’ করে গেলাম।’’ কবির পাল্টা কটাক্ষ, কী করে গুণে গুণে শোধ নিতে হয় তিনি দেখিয়ে দেবেন।
এ ভাবেই আড্ডাকালে পরমব্রত জানান, তিনি শ্রীজাতর অন্ধ ভক্ত। তাই চিত্রনাট্য শোনার পরেই এক কথায় রাজি। জানিয়েছেন, তাঁর তরফ থেকে নতুন পরিচালককে এটাই তাঁর শুভকামনা। প্রিয়াঙ্কার মতে, তিনি চিত্রনাট্যও শোনেনি। শ্রীজাত অনুরোধ করা মাত্র তিনি সময় দিয়ে দিয়েছেন। একই কথা জয় সরকারের ক্ষেত্রেও। শেষে কবি কথা, 'মানবজমিন’ মানব বন্ধনের গল্প বলবে। তাই শ্যুট শুরু হওয়ার আগেই রাখিবন্ধনের দিন আড্ডায় ছবির শুভ মহরৎ। শ্যুটের জন্য লোকেশন খোঁজা প্রায় সম্পূর্ণ। খুব শিগগিরিই টিম ‘মানবজমিন’ শুরু করবে মানব-শৃঙ্খল বানানোর কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy