Advertisement
E-Paper

মেয়ের জন্মের সঙ্গে এসেছে বিতর্ক, কত মাসে জন্ম দিয়েছি সন্তানের? বলব না!

আমার তরফ থেকে সব সময়ই অসম্ভব প্রেম ছিল কাঞ্চনের প্রতি। কিন্তু ও অন্য সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। কাঞ্চন কখনওই প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করে না। ভাবিনি ওর সন্তানের মা হতে পারব।

Image of Kanchan Mullick and Sreemoyee Chattoraj

মাতৃত্বের সফর নিয়ে কলম ধরলেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। ছবি: তথাগত ঘোষ।

শ্রীময়ী চট্টরাজ

শ্রীময়ী চট্টরাজ

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৮
Share
Save

প্রথম যখন আলট্রাসোনোগ্রাফি করালাম, দেখলাম একটি ছোট্ট বিন্দু। তার পর প্রতি তিন মাস অন্তর দেখতাম সেই বিন্দুটাই একটু একটু করে বেড়ে উঠছে। আজ সেই মেয়ে চোখ মেলে তাকাচ্ছে। কাঞ্চন এক বার ‘সোনামা’ বলে ডাকলেই ওর দিকে তাকায়। বাবার গলা খুব চিনেছে মেয়ে। এ এক অসাধারণ অনুভূতি।

আমার মনে হয়, মা হওয়ার মধ্যে দিয়ে একটা পরিপূর্ণতা আসে জীবনে। এটা এমনই একটা পদ্ধতি যার কোনও নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে থাকে না। সবটাই ঈশ্বরের নির্ধারিত।

আমি আর কাঞ্চন বাচ্চাদের খুব ভালবাসি। আমার দিদির ছোট মেয়ের সঙ্গে কাঞ্চনের খুব বন্ধুত্ব। প্রথম প্রথম তো মেয়েকে পুতুল বলে মনে হচ্ছিল। ওকে প্রথম বার দেখে বলেছিলাম, ‘হ্যালো’। কাঞ্চন পাশ থেকে বলল, “ওকে হ্যালো বলছিস কী রে, তুই তো মা! তোর মেয়ে রে।”

প্রথম প্রথম কোনও আনন্দ অনুভবই করতে পারিনি। চিন্তায় ছিলাম, সব কিছু ঠিকঠাক হবে তো! চিকিৎসক আশ্বস্ত করলেন। পাঁচ মাসের পর খানিকটা আশ্বস্ত হলাম, যখন দেখলাম বাচ্চা ঠিক মতো বাড়ছে। এই পর্যায়ে কিছু শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। একেবারে শেষ পর্যায়ে ধরা পড়ল জন্ডিস। রাতের পর রাত ঘুমোতে পারতাম না। কিন্তু সব শেষে মেয়ের মুখ দেখে সব কষ্ট চলে গেল। হাসপাতালের ওটি-তে আমার সঙ্গেই ছিল কাঞ্চন। আমরা গল্প করছিলাম। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকই জানালেন, আমার একটি সুস্থ কন্যাসন্তান হয়েছে। তার পরেই কেঁদে উঠল ছোট্ট প্রাণটি। আমি যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, একটি জলজ্যান্ত প্রাণের সৃষ্টি করেছি আমারই গর্ভে।

কাঞ্চনের প্রতি একতরফা প্রেম ছিল শ্রীময়ীর।

কাঞ্চনের প্রতি একতরফা প্রেম ছিল শ্রীময়ীর। ছবি: তথাগত ঘোষ।

কিন্তু একটাই বিষয়, ওর জন্মের সঙ্গে জন্ম নিয়েছে অনেক বিতর্কও। নানা জনে প্রশ্ন তুলেছেন, কত মাসে জন্ম দিয়েছি সন্তানের। কিন্তু সে বিষয়ে কোনও জবাবদিহি করতে আমি রাজি নই। কাঞ্চন আর আমি মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মা-বাবা হওয়ার। হয়েছি। চিকিৎসক আগেই সতর্ক করেছিলেন, এই যাত্রা খুব সহজ নয়। কিন্তু আমি মা হতে চেয়েছিলাম। সময় নষ্ট করতে চাইনি একেবারেই। আমি আর কাঞ্চন অনেক ঘুরে বেড়িয়েছি। একসঙ্গে সময় কাটিয়েছি। বাড়িতেও একই সঙ্গে থাকি। অনেক সময়ই একঘেয়ে লাগত। চাইছিলাম একটি ছোট্ট প্রাণ আমাদের মধ্যে খেলা করুক।

তবে, আমার তো মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া হল না। কারণ, কাঞ্চনের তো সময়ই হচ্ছিল না। যাওয়ার কথা ছিল ইউরোপ। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শেই আমরা বেছে নিলাম মলদ্বীপ। তিনিই বলেছিলেন, “মধুচন্দ্রিমায় যখন যাওয়া হয়নি, তখন আর ইউরোপ গিয়ে কাজ নেই, ‘বেবিমুন’-এ চলে যাও।”

এখানে জানিয়ে রাখি, চিকিৎসক বলেছিলেন ১৭ নভেম্বর আমার সন্তান আসবে। ওই দিনটা আবার কাঞ্চনের বাবার জন্মদিন। ফলে আনন্দেই ছিলাম। কিন্তু কালীপুজোর পরেই ও এল। আমি বুঝতেই পারিনি। দুর্গাপুজোয় ঘুরেছি। কালীপুজোয় মজা করেছি। তার পরেই মেয়ে এল।

কাঞ্চনকে সেরা বাবার তকমা দেব। বন্ধু কাঞ্চনকে দেখেছি আমি। প্রেমিক কাঞ্চনকে আমি খুব কম পেয়েছি। ১২ বছর ওকে আমি চিনি। কিন্তু তার মধ্যে ৮ বছর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। তবে বলতে দ্বিধা নেই, আমার তরফ থেকে সব সময়ই অসম্ভব প্রেম ছিল কাঞ্চনের প্রতি। কিন্তু ও অন্য সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। কাঞ্চন কখনওই প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করে না। তাই আমাকে কোনও দিন বলেনি ভালবাসে। আমার দুর্বলতা ছিল। বিবাহিত মানুষকে ভালবেসেছিলাম। এই নিয়ে অনেক কটাক্ষ ধেয়ে আসবে। প্রশ্ন আসবে, বিবাহিত জীবনে আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করি কি না? আমার উত্তর, না, করি না। আমি ও রকম মানুষ না যে, নিজেরটুকু বুঝে নিয়ে সরে যাব। পরিবারের সকলের ভাল চাই আমি। আমাদের সম্পর্কে কোনও চাওয়া-পাওয়া ছিল না। ও খুশি থাকলেই আমি খুশি। সে জন্যই হয়তো এত বছর পর আমাদের প্রেম পরিণতি পেয়েছে। বিয়ের প্রস্তাব কিন্তু কাঞ্চনের তরফেই এসেছিল।

শ্রীময়ী ভাবতে পারেননি, কাঞ্চনের সন্তানের মা হতে পারবেন।

শ্রীময়ী ভাবতে পারেননি, কাঞ্চনের সন্তানের মা হতে পারবেন। ছবি: তথাগত ঘোষ।

যদিও আমি কখনও ভাবিনি কাঞ্চনের স্ত্রী হব, ওর সন্তানের মা হব! কিন্তু প্রেমিক বা স্বামী কাঞ্চনের যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। বাবা কাঞ্চন কিন্তু সেরা। রাত জাগছে মেয়ের জন্য। সকালে আমি ওঠার আগে ও উঠছে। মেয়েকে খাওয়ানো, যত্ন করা— সবই দায়িত্ব নিয়ে করছে।

মেয়েও চিনেছে বাবাকে। গলা শুনলেই চোখ তুলে তাকায়। কাঞ্চন ওকে ‘সোনামা’ বলে ডাকে। আমি খুব ভাল আছি। কারও কখনও ক্ষতি করিনি। তাই হয়তো ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেয়েছি। কাঞ্চন আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, চাইলে না-ও দিতে পারত। তার পর আমি মা হতে চেয়েছি, আমাকে সেই সেরা উপহারও দিয়েছে কাঞ্চন। আমার শ্বশুরবাড়িও খুব ভাল। আমি ধন্য।

আমি আমার এই মাতৃত্বের সফর দারুণ উপভোগ করেছি। ফোটোশুটও করেছি। চেয়েছি, আমার সন্তান যেন ওর শিকড়টা মনে রাখে। বড় হয়ে দেখতে পারে কেমন ছিল ওর বাবা- মা।

Sreemoyee Chattoraj Kanchan Mullick Celebrity Couple Bengali Actors

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।