Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

পিআর করার সময়টা দিতে চাই রেওয়াজে

বলছেন শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুমিংয়ে তা হলে এত সময় দিচ্ছেন কেন? গায়িকার মুখোমুখি স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়বদলে গিয়েছেন শুভমিতা। নিয়মিত শরীরচর্চা, কার্ব-হীন ডায়েট, ছোট চুল, জিনস, হাতকাটা কুর্তিতে চমকে দিলেন তিনি।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

বদলে গিয়েছেন শুভমিতা।

নিয়মিত শরীরচর্চা, কার্ব-হীন ডায়েট, ছোট চুল, জিনস, হাতকাটা কুর্তিতে চমকে দিলেন তিনি।

শুভমিতার গোল টিপ আর লম্বা চুল কোথায় গেল?

সে ছিল মালদার শুভমিতা। আসলে নচিদা (নচিকেতা চক্রবর্তী)-ই বলেছিল চুলটা কেটে ফেলতে। জিনস, কুর্তা আর স্নিকার্স পরতে।

তা হলে মঞ্চে এ বার আমরা শুভমিতার হেপ লুকটাই দেখব তো?

না। পারফর্ম্যান্সের সময় অন্য রকম পোশাক পরে সকলকে চমকে দিতে চাই না।

এখনও এত জড়তা?

প্রথম দিকে ছিল। এখন কেটে গিয়েছে। আমি যদি স্নিকার্স বা গামবুট পরে জিনস বা স্লিভলেস কুর্তি চড়িয়ে ‘তোমার কাছে ফাগুন চেয়ে’ গাই, তা হলে আমার শ্রোতারা শকড্ হবেন।

আচ্ছা, অন্য কেউ যদি সে রকম পোশাক পরে গান করেন, তা হলে আপত্তি করবেন?

(থামিয়ে দিয়ে) বিশ্বাস করুন, খুব বিরক্ত লাগবে। শ্রাদ্ধ আর বিয়েবাড়ির পোশাক যেমন আলাদা, তেমনই মঞ্চ আর বন্ধু-আড্ডার পোশাক আলাদা।

নচিকেতার টিপস তা হলে মানলেন না?

চুলটা তো কাটলাম। শুধু সাজেই নয়, গানেও বদল আনতে হবে। আগে যে গায়কিতে গান গাইতাম, এখন তা অনেকটাই বদলে ফেলেছি। ধরুন রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম করছি, সেখানে গানের কথা বুঝে একটু ড্রামের ব্যবহার হল। কিন্তু মূল গান একই থাকল। লোপাদি (লোপামুদ্রা মিত্র) তো বলেছে আমায়, ‘আগে তোর গানে একটা গ্রাম্য ছাপ ছিল। সেটা এখন আর নেই।’

আচ্ছা, ‘দেখেছ কি তাকে’ গানটা লোপামুদ্রার গাওয়ার কথা ছিল না? আপনি নাকি নিয়ে নিয়েছিলেন?

(হেসে) উফ্ সে এক কাণ্ড! তবে গানটা রেকর্ড করার পর লোপাদি বলেছিল ওই গানটা শুভমিতারই গান। দেখুন লোপাদির মতো শিল্পী, তারই সমসাময়িক অপর এক মহিলা শিল্পী সম্পর্কে এমন এক মন্তব্য করেছে... আজকের সময়ে এই প্রশংসাটা করতে কিন্তু বুকের পাটা লাগে।

একটা সত্যি কথা বলুন তো... কথায় কথায় কেবল নচিকেতার কথাই বলছেন। আপনাদের প্রেমটা কেমন ছিল?

(চোখ কপালে তুলে) প্রেম! (একটু গম্ভীর হয়ে) এক সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম নচিদা আমার গান শোনে। আমার প্রথম অ্যালবাম ‘আবিষ্কার’ নচিদার উৎসাহেই করা।

সেই অ্যালবামটা তো সুপার ফ্লপ?

অ্যালবামটা নিয়েই সবাই ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। অ্যালবামে নচিদার ছবি দেখে সবাই নচিদার গান শুনতে চেয়েছিল।

খারাপ লাগেনি তখন?

ভেবেছিলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে গান শেখাব বা পড়াব। নচিদা তখন নিজের অনুষ্ঠানে ন্যায্য পারিশ্রমিক কমিয়ে দিয়ে বলত, শুভমিতাকে গাইতে দিন। এই টাকাটা ওকে দিন। আমি নচিদার বড় মেয়ে। এটাই সত্যি।

কিন্তু রূপঙ্করের সঙ্গে নাকি আপনার এখন প্রেম?

আমাদের ডুয়েট অ্যালবাম প্রকাশের পর লোকে তো আমার সঙ্গে রূপঙ্করের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। আমি রূপঙ্করকে বলেছিলাম যা গসিপ ছড়িয়েছে, বাজারে আমাদের অ্যালবাম হিট!

যতই হিট অ্যালবামের কথা বলুন, এটা তো মানবেন যে আইপড আর হানি সিংহ গানের বাজারটা শেষ করে দিল...

দেখুন, গানের বাজার ও ভাবে শেষ হয় না। সিডির বিষয়ে আমি আজও আশাবাদী।

কী বলছেন! মিউজিক ওয়ার্ল্ড খাবারের দোকান হয়ে গিয়েছে...

আমি ওই খাবার দোকানে ঢুকেছিলাম। দেখলাম যেখানে লতাজির কালেকশন ছিল, সেখানে পেস্ট্রি সাজানো আছে। লোপাদি, রূপঙ্কর, রাঘব, শ্রীকান্তদার সিডি বিক্রি হয়ই। আমার শেষ অ্যালবাম ‘তোমায় ভালবেসে’র বিক্রিও ভাল।

আপনি খোঁজখবর রাখেন তা হলে? ফেসবুক পর্যন্ত করেন না। এ ভাবে চলবে?

(মুষড়ে পড়ে) সত্যি ফেসবুকটা আমার দ্বারা হবে না।

কিন্তু এতে তো শ্রোতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। অনুষ্ঠান বাড়ে।

না, ও ভাবে অনুষ্ঠান চাই না।

২০০৩-০৪’এ বাংলা ছবি থেকে টিভি সিরিয়ালের গান মানেই ছিল শুভমিতার গান। কিন্তু এখন শুভমিতা কোথায়? পিআর-টা করলে এমন অবস্থা হত না।

পিআর করার সময়টা আমি রেওয়াজে দিতে চাই। পিআর না করেই পণ্ডিত রবিশঙ্কর আর শিবমণির মতো শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। আর কী চাইতে পারি আমি? এখন কোন সিরিয়াল বা সিনেমায় গাইতে পারলাম না, তা নিয়ে দুঃখ আমার সাজে না।

আপনি তা হলে পারফর্ম্যান্সের ওপরেই বেঁচে আছেন?

একদম। হানি সিংহের মতো চটকদার গান আমি গাইতে পারব না।

ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তকে জিজ্ঞেস করেছেন এখন বাংলা ছবিতে গাওয়ার জন্য উনি আপনাকে ডাকছেন না কেন?

আগে তো ওঁর ছবিতে অনেক গেয়েছি। আমার গাওয়ার মতো গান হলে নিশ্চয়ই ডাকবেন।

শুভমিতা কি কোথাও থেমে আছেন?

বাংলা ছবিতে এখন আমার গান নেই। তবে প্রচুর অনুষ্ঠান করছি।

অরিজিৎ সিংহকে কেমন লাগে?

দারুণ। অসম্ভব গুণী। একটা সময় ওকেও গানের জন্য পথে পথে ঘুরতে হয়েছে।

মুম্বই যেতে ইচ্ছে করে না?

না। তবে অন্বেষা ওখানে ভাল কাজ করবে মনে হয়।

কোনও কিছুর জন্য খুব একটা আফসোস নেই আপনার...

গানের মধ্যে স্বপ্ন দেখি। ওর মধ্যে পুরনো প্রেম, না-পাওয়া, দুঃখ, আবার এগিয়ে যাওয়ার আলো দেখতে পাই।

গানের জন্যই কি ১৪ বছরের বিবাহিত জীবনে সন্তানের কথা ভাবেননি?

সুর আর তাল দিয়ে ঘেরা আমার সংসার। বেশ তো আছি...

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy