Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
mukul roy

মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা ঘটনাচক্রে, তা নিয়ে এত বিতর্ক কেন: প্রসেনজিৎ

ছেলে মিশুকের বিদেশে পড়তে যাওয়া নিয়ে ব্যস্ত তিনি! ছবির কাজ, নিজের প্রোডাকশনের দায়িত্ব, এর মধ্যেই মুকুল রায়ের সঙ্গে প্লেনে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। কী বলছেন প্রসেনজিৎ?

প্রসেনজিৎ ও মুকুল রায়। এখন বিতর্কের দুই মুখ।

প্রসেনজিৎ ও মুকুল রায়। এখন বিতর্কের দুই মুখ।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ১৬:০৪
Share: Save:

আপনি নাকি মুকুল রায়ের সঙ্গে প্ল্যান করে দেখা করেছেন?

দেখুন, আমি ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি যাচ্ছিলাম। ঘটনাচক্রে একই এয়ারক্রাফ্টে বিজনেস ক্লাসে আমার মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা হয়। আমি ওঁকে চিনি। উনিও আমায় চেনেন। ওঁর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় হয়। ওই একই ফ্লাইটে কিন্তু তৃণমূলের অন্য নেতারাও ছিলেন, তাঁরাও দিল্লি যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে মুকুল রায় আর আমাকে নিয়েই এ রকম একটা রসালো গল্প তৈরি হল! বলা হল, মুকুল রায়ের সঙ্গে নাকি প্ল্যান করেই আমি প্লেনে দেখা করি। তা-ও আবার রাজনীতিতে যোগ দেব বলে! মানে অবস্থাটা এ রকম, ফ্লাইটে কোনও পরিচিত জনের সঙ্গে দেখা হল, হতে পারে তিনি কংগ্রেসের চেনা মুখ, তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচিত মুখ বা বিজেপির মুখ, আমি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে চিনলেও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারব না? কথা বললেই ধরে নেওয়া হবে আমি সেই পার্টিতে যোগ দিচ্ছি! আর কী বলব বলুন তো? অথচ সে দিন শুধু মুকুল রায় নয়, তৃণমূলের যে নেতারা ছিলেন তাঁদের সকলের সঙ্গেই কথা হয় এবং এক বারের জন্যও রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়নি!

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ নিয়ে কিন্তু আগেও প্রচুর লেখা হয়েছে...

আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। গত পাঁচ-ছ’ বছর ধরেই চলছে এমন। আসলে দীর্ঘ দিনের কাজের সূত্রে আমার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই পরিচয়। একটা কথা এখানে বলা খুব জরুরি। সকলে আমায় ভালবাসেন, পছন্দ করেন আমার অভিনয়ের জন্য, কাজের জন্য। রাজনীতির জন্য কিন্তু নয়।

এ রকমও বলা হয়েছে যে আপনি এয়ারপোর্ট থেকে মুকুল রায়ের গাড়িতেই নাকি যান?

আমার নিজের গাড়িতেই যাই আমি। বানিয়ে তো অনেক কিছু লেখা যায়। সেখানে আমার কিছু করার নেই। তবে একটা কথা বলি। আমি ইচ্ছা প্রকাশ করলে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস— যে কোনও রাজনৈতিক দল আমায় সাদরে গ্রহণ করবে। তাঁরা তো নিজেরাই আমাকে অনেক সময় রাজনীতিতে যোগ দিতে অনুরোধ করেছেন। এই অ্যাক্সেপট্যান্স আমার কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে। আমি সেই কাজেই নিজেকে নিয়োজিত করে রেখেছি। আর তা-ই করব।

আরও পড়ুন: চোখে নেই কালো চশমা, নেই ‘চামচা’দের উপস্থিতি, সারাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত টুইট ঋষির

এই সুসম্পর্কের ছবিতে চিড় ধরেছে বলে গুঞ্জন টলিপাড়ায়।

এটা কি মনে হয়, ইডির তদন্ত আর মুকুল রায়ের সাক্ষাৎকারকে মানুষ দু’য়ে দু’য়ে চার করছে?

বুদ্ধিমানেরা করছে না। যারা আমার বন্ধু তারা করছে না। আর এই সাক্ষাৎকারের পর আরও মানুষ আছেন যাঁরা আর করবেন না। আর ইডি-র সঙ্গে আমার অফিস থেকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়ে গেছে।

আজ না হোক, কিছু দিন পরে কি রাজনীতি নিয়ে ভাববেন আপনি?

(হেসে) যে সিনেমা আমায় বেস্ট পলিটিশিয়ানের চরিত্র দেবে আমি সেই সিনেমা করব। সেই ছবি নিয়ে ভাবব।

মুকুল রায়ের সঙ্গে এই সাক্ষাৎকার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে কোনও বার্তা এসেছে?

না।

শোনা যাচ্ছে আপনার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নাকি ভাল নেই?

এটাও রটনা। একেবারেই ভুল রটনা। উনি নিজে যা ব্যস্ত তাতে বেশ কিছু দিন আমাদের সরাসরি কথা বা আড্ডা হয়নি। দিদি আমায় স্নেহ করেন। আমার ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা আছে। আর দেখুন, আমিও আমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। যে দিন দু’জনের সময় মিলে যাবে সে দিন নিশ্চয়ই আমরা একসঙ্গে বসব। কথা বলব। এই ভুল তথ্য ছড়ানো এ বার বন্ধ হোক!

কিন্তু কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের তরফ থেকে আপনাকে কিছু জানানো হয়েছে কি?

নাহ্। এ বিষয়ে কিন্তু আজ অবধি কিছু জানি না। আমি চেয়ারম্যান নেই এ রকম কিছু তো জানানোই হয়নি! এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে গত দশ বছর ধরে আমি জড়িয়ে আছি। কত ছবি দেখেছি ওখানে গিয়ে। কে কী বলল বা কী হল তা দিয়ে ভালবাসার টান মুছে যায় না। আমি তো ওই উৎসবে যাবই। তবে এটাও ঠিক, ওই কমিটির একটা-দু’টো মিটিংয়ে আমি থাকতে পারিনি। ‘গুমনামি’-র শুটের জন্য আমি নর্থ বেঙ্গল আর লখনউতে তখন শুট করছিলাম। আমার এত রকমের কাজের চাপ। আর্টিস্ট ফোরামের দায়িত্ব। নিজের ছবি। নিজের প্রোডাকশন হাউজের দায়িত্ব। সব দিক তো সামলাতে হয়।

আরও পড়ুন: স্ত্রীর আত্মহত্যা! গ্রেফতার হলেন ‘বাহুবলী’র অভিনেতা

আর্টিস্ট ফোরামের দায়িত্ব থেকেও সরতে চাইছেন প্রসেনজিৎ? শুরু হয়েছে জল্পনা।

শোনা যাচ্ছে, আর্টিস্ট ফোরামের দায়িত্ব থেকেও আপনি সরে আসতে চাইছেন?

না, সরে আসার প্রশ্ন নয়। আমি চাই নতুন ছেলেমেয়েরা দায়িত্ব নিক। একটা নতুন কাজের টিম তৈরি হোক যারা রোজের কাজকর্মের দেখাশোনা করবে। আমি তো আছি।

রাজনীতিতে যোগ না দেওয়ার আসল কারণ কিন্তু বললেন না?

ছবির কাজ। বললাম তো!

আরও একটা বিশেষ কারণ...

হুমম! আমি এখন পরিচালনার কথা ভাবছি। বাকিটা পরের স্টোরিতে...

(ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ ও সংগৃহীত)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE