ফাইল চিত্র
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং সোহিনী সরকার। যেন গল্পের বইয়ে ধরে রাখা দুই চরিত্র। কারণ তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণই যেন গল্প। সিনেমার সেটে দেখা হয়েছিল দু’জনের। কাজের মধ্যে দিয়েই সোহিনী ‘এই মেয়েটা’-র সর্বনাম ছাড়িয়ে সৌমিত্রের কাছে পরিচিত হয়েছিলেন নিজের নামে, নিজের কাজে। সৌমিত্র নিয়ে প্রশ্ন করায় সোহিনী বললেন, ‘‘সৌমিত্রজেঠুর সঙ্গে ‘রূপকথা নয়’-তে আমি একটি দৃশ্যে অভিনয় করেছিলাম। যেখানে সৌমিত্র জেঠু একটি বেঞ্চে বসেছিলেন। আমার অভিনীত চরিত্রটি সেখানে এসে বসে। সামান্য দু’টো কথা হয়। ব্যাস, আর কোনও দৃশ্য একসঙ্গে ছিল না।’’
২০১৩ সালে অতনু ঘোষের ছবি ‘রূপকথা নয়’ মুক্তি পায়। এই ছবিতেই সোহিনীকে প্রথম বড় পর্দায় দেখতে পান দর্শক। সেই ছবিতে সৌমিত্রের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে তিনি বললেন, ‘‘আমার মনে আছে, সৌমিত্রজেঠু বলছিলেন, ‘মেয়েটিকে ভাল করে পার্টটা পড়িয়েছ? ওর মুখস্থ হয়ে গিয়েছে তো?’ আমার নাম উনি জানতেন না। আমাদের চিত্রগ্রাহককে বলে রেখেছিলাম, আমি বেঞ্চে গিয়ে বসলেই কয়েকটি ছবি তুলে রাখতে। বাড়িতে গিয়ে মা-কে দেখাব ছবিগুলো। মা সৌমিত্রের বিশাল বড় ফ্যান। আর আমি তো উড়ছি। প্রথম ছবিতেই সৌমিত্রজেঠুর পাশে অভিনয়!’’ ‘রূপকথা নয়’ ছবি হিসাবে সমাদৃত হয়। দর্শক ও সমালোচকদের নজর কাড়েন সোহিনী। ওই বছরই মুক্তি পায় ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী পরিচালিত ছবি ‘ফড়িং’। সোহিনীর অভিনয়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন বাংলা ছবির দর্শকরা। তিনি বললেন, ‘‘এর পর ‘রূপকথা নয়’ ছবির ছবির সাফল্য উদ্যাপন উৎসব হয়। সেখানে সৌমিত্রজেঠুর সঙ্গে দেখা হয়। তখন আমার কাজের প্রশংসা করেন। তত দিনে ‘ফড়িং’ও দেখে ফেলেছেন তিনি। আমি দেখলাম, যে মানুষটা কয়েক দিন আগে ‘এই মেয়েটা, এই মেয়েটা’ বলে ডাকছিলেন, তিনি এখন আমার নাম জানেন। আমার পরিচয় তৈরি হল কাজের মধ্যে দিয়েই।’’
কয়েক বছর পর ‘সেলফি’ ছবিটি তৈরি করেন পরিচালক শোভন তরফদার। সেখানে সৌমিত্রের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সোহিনী। ‘রূপকথা নয়’-এর পর ফের ‘সেলফি’ ছবিতে বড় চরিত্রে সৌমিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে অভিনয় নিয়ে সোহিনী বললেন, ‘‘‘সেলফি’-র শুটিংয়ের সময় আমাদের মধ্যে অনেক গল্প হত। সৌমিত্রজেঠু কবিতা শোনাতেন। বাংলা সিনেমা জগতের এমন কিছু গল্প শোনাতেন, যা ভীষণ লোভনীয়। তবে সব গল্প বলা যাবে না। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো গল্পগুলো গিলতাম। ছবিতে ভাস্কর চক্রবর্তীর অনেকগুলো কবিতা ছিল। সৌমিত্রজেঠু ভাস্করের কবিতা তেমন শোনেননি। আমি ওঁকে একটি বই উপহার দিয়েছিলাম। সৌমিত্রজেঠু আমাকে ওঁর লেখা একটি কবিতার বই উপহার দিয়েছিলেন। এটা আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy