Shravan Kumar Rathod and Nadeem Akhtar Saifi's association dates back to 1973 dgtl
Bollywood
দুই ভাই গায়ক, নদীমের সঙ্গে জুটি বাঁধার ১৭ বছর পর বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হন শ্রবণ
হিন্দি ছবির দর্শকদের কাছে সে রকমই স্মৃতিমেদুর নদীম-শ্রবণ। তাঁদের নাম বললেই মনের মধ্যে ভিড় করে আসে আট ও নয়ের দশকের সুরেলা সফর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ১১:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
শুধু নায়ক নায়িকাই নন। ‘রোমান্টিক’ বিশেষণ কখনও কখনও সমার্থক হয়ে যায় অন্য জুটির সঙ্গেও। হিন্দি ছবির দর্শকদের কাছে সে রকমই স্মৃতিমেদুর নদীম-শ্রবণ। তাঁদের নাম বললেই মনের মধ্যে ভিড় করে আসে আট ও নয়ের দশকের সুরেলা সফর।
০২১৮
শ্রবণের পরিবারে সঙ্গীতচর্চার শিকড় দীর্ঘ দিনের। তাঁর বাবা পণ্ডিত চতুর্ভুজ রাঠৌর ছিলেন নামী ধ্রুপদ সঙ্গীতশিল্পী। বাবার তত্ত্বাবধানে অনেক ছোট বয়স থেকেই শ্রাবণের সঙ্গীতচর্চা শুরু হয়েছিল।
০৩১৮
শ্রবণের দুই ভাই রূপকুমার এবং বিনোদ রাঠৌরও হিন্দি ছবির জগতে পরিচিত নাম। রূপকুমার জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক এংব গায়ক। বিনোদও নেপথ্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন বহু ছবিতে।
০৪১৮
১৯৭৩ সালে এক অনুষ্ঠানে আলাপ হয়েছিল নদীম এবং শ্রবণের। সে বছরই তাঁরা প্রথম একসঙ্গে কাজ করেন ভোজপুরী ছবি ‘দঙ্গল’-এ। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৭ সালে।
০৫১৮
হিন্দি ছবিতে সুযোগ পেতে তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল আরও কয়েক বছর। ১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘ম্যাঁয়নে জিনা শিখ লিয়া’-য় তাঁদের সুরে গান করেন অমিতকুমার।
০৬১৮
তার পরেও কাজের সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এই জুটিকে। আটের দশক থেকে ছবিটা ক্রমশ পাল্টাতে থাকে। কাজের সুযোগ পেতে থাকেন নদীম-শ্রবণ। ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া তিনটি ছবিতে কাজ করে এই সুরকার জুটি।
০৭১৮
‘ইলাকা’, ‘হিসাব খুন কা’ এবং ‘লশকর’ নামে ওই তিনটি ছবিই বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। সমালোচক এবং দর্শকদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয় ছবিগুলির গানও।
০৮১৮
ক্রমাগত ব্যর্থতার পরে নদীম-শ্রবণ একসময় ভেবেছিলেন অন্য পেশায় চলে যাবেন। ভেবেও ফেলেছিলেন ব্যবসার কথা। কিন্তু জীবন তাঁদের জন্য ভেবে রেখেছিল অন্য কিছু। ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বাপ নম্বরি বেটা দশ নম্বরি’ ছবিটি এই জুটির পায়ের নীচের জমি কিছুটা মজবুত করে।
০৯১৮
ছবির বাইরে নদীম-শ্রবণ জুটির গান প্রথম মুক্তি পেয়েছিল গুলশন কুমারের সংস্থা থেকে। তাঁদের গান ‘নজর কে সামনে জিগর কে পাস’ তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিল। এই গানটির সঙ্গে তাঁদের আরও চারটি গান মহেশ ভট্ট ব্যবহার করেছিলেন তাঁর ‘আশিকি’ ছবিতে।
১০১৮
বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল হয়েছিল ‘আশিকি’। ছবির গানগুলিও ছিল জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে। বলিউডের জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে এখনও এই ছবির গানগুলির জায়গা উজ্জ্বল।
১১১৮
ইন্ডাস্ট্রিতে ১৭ বছর কাটানোর পরে ‘আশিকি’-র হাত ধরে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হলেন নদীম-শ্রবণ জুটি। এর পর ১৯৯০ থেকে ২০০৫ অবধি ১৫০টি ছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন তাঁরা।
১২১৮
এর পর ‘সাজন’,‘সড়ক’, ‘দিল হ্যায় কি মানতা নহিঁ’, ‘সৈনিক’, ‘রাজা’, ‘দিলওয়ালে’, রাজা হিন্দুস্তানি’, ‘ফুল অউর কাঁটে’-এর মতো বক্সঅফিস সফল ছবিতে সুরকার হিসেবে কাজ করেছেন নদীম-শ্রবণ।
১৩১৮
তাঁদের সুর দেওয়া ছবির তালিকায় বাকি উল্লেখযোগ্য নামগুলি হল ‘দিওয়ানা’, ‘বেখুদি’, ‘জুনুন’, ‘দামিনী’, ‘হম হ্যায় রাহী প্যায়ার কে’, ‘রং’, ‘দিল তেরা আশিক’, ‘সাজন কে ঘর’, ‘বরসাত’, ‘রাজা’, ‘অগ্নিসাক্ষী’, ‘রাজা হিন্দুস্তানি’, ‘জুদাই’, ‘পরদেশ’, ‘আ অব লওট চলে’, ‘সির্ফ তুম’, ‘ধড়কন’, ‘কসুর’, ‘হম হো গ্যয়ে হ্যায় আপ কে’, ‘ইয়ে দিল আশিকানা’, ‘রাজ’, ‘অন্দাজ’ এবং ‘বেওয়াফা’।
১৪১৮
সাফল্যের পাশাপাশি এই জুটির সঙ্গী হয়েছে বিতর্কও। উঠেছে সুর চুরির অভিযোগ। ১৯৯৭ সালে নদীম জড়িয়ে পড়েন গুলশন কুমার হত্যারহস্যে। অভিযোগ ছিল, দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন নদীম। কিন্তু পরে তিনি অভিযোগ থেকে মুক্তি পান।
১৫১৮
তাঁর নামে অভিযোগ ওঠার সময়ে নদীম ছিলেন লন্ডনে। তিনি আর ভারতে ফেরেননি। পরে চলে যান দুবাইয়ে। সুগন্ধীর ব্যবসা শুরু করেন। আগের থেকে কমে গেলেও সুরকার হিসেবেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
১৬১৮
কয়েক বছর ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরে থাকার পরে আবার একসঙ্গে কাজ শুরু করে নদীম-শ্রবণ জুটি। কিন্তু ২০০৫ সালে তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ২০০৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘দোস্তি: ফ্রেন্ডস ফরএভার’। এর পর তাঁরা বেশ কয়েক বছর একসঙ্গে কাজ করেননি।
১৭১৮
এর পর কিছু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন নদীম। অন্য দিকে, শ্রবণ নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে। তাঁর লক্ষ্য ছিল ছেলেদের ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠা করানোর। তাঁর দুই ছেলে সঞ্জীব এবং দর্শনও সঙ্গীত পরিচালক।
১৮১৮
সব স্বপ্ন অধরা রেখেই চলে গেলেন শ্রাবণ। চিরতরে ভেঙে গেল তাঁদের জুটি। অনেকটাই বিবর্ণ ও সুরহীন হয়ে গেল বলিউড।