Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘দু’নৌকায় পা দিয়ে চলছি’

আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি পরিচালক সৌমিক সেনশরৎ বসু রোডের ছেলে সৌমিকের পড়াশোনা সেন্ট জ়েভিয়ার্সে। থিয়েটার আর গানের সঙ্গে প্রেমটা কলকাতায় থাকাকালীনই। নিজের ছবিতে কম্পোজ়ও করেছেন।

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৩২
Share: Save:

তাঁর জন্ম, স্কুল-কলেজ সবটাই কলকাতায়। সাংবাদিকতা ছেড়ে করছেন পরিচালনা। পরপর হিন্দি ছবি করলেও ফিরছেন বাংলার টানেই। ‘গুলাব গ্যাং’, ‘হোয়াই চিট ইন্ডিয়া’ খ্যাত পরিচালক সৌমিক সেনের প্রথম বাংলা ছবি ‘মহালয়া’ মুক্তির অপেক্ষায়।

শরৎ বসু রোডের ছেলে সৌমিকের পড়াশোনা সেন্ট জ়েভিয়ার্সে। থিয়েটার আর গানের সঙ্গে প্রেমটা কলকাতায় থাকাকালীনই। নিজের ছবিতে কম্পোজ়ও করেছেন। বাজাতে পারেন সরোদ। সেটাই কি কম্পোজ়ার হতে সাহায্য করল? ‘‘বাবা আমার চেয়েও ভাল গান করেন। মায়েরও পড়াশোনা আছে গান নিয়ে। কিশোরকুমারের প্রতি আমার ভালবাসা অসীম। মনে আছে, যে দিন উনি মারা গিয়েছিলেন, স্কুলে যাইনি,’’ বলছিলেন সৌমিক। লেখার প্রতি তাঁর প্রেম দিনদিন বেড়েছে। ‘‘আমাদের বাঙালিদের কাছে সত্যজিৎ রায় আছেন। যিনি কোনও প্রতিষ্ঠানের চাইতে কম নন। এত বার ওঁর ছবি দেখেছি যে, ফিল্ম নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়নি।’’

‘মহালয়া’য় তুলে ধরেছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ও উত্তমকুমারের বিতর্ক। বললেন, ‘‘এত দিন বিষয়টা নিয়ে ছবি কেন হয়নি, সেটাই প্রশ্ন। পুরনোর সঙ্গে নতুনের দ্বন্দ্ব, জোর করে একটা ব্যাপার চাপিয়ে দেওয়া, ঐতিহ্যের সঙ্গে স্টারডমের লড়াই... এটা দ্বন্দ্বের কাহিনি। ছবিটা অন্য ভাষায় করা যেত না।’’ ‘মহালয়া’র জন্য শুভাশিস মুখোপাধ্যায় ও যিশু সেনগুপ্তকে নির্বাচন করার কারণও খোলসা করলেন। ‘‘বায়োপিকে দুটো জিনিস খেয়াল রাখতে হয়— চেহারার সামঞ্জস্য ও অভিনয়। আমার কাছে অভিনয়ই প্রাধান্য পেয়েছে। যিশুকে বাছার কারণ, আই নিডেড আ স্টার টু প্লে আ স্টার। উত্তমকুমারকে রিপ্লেস করা অসম্ভব। যিশুকে উত্তমকুমারের মতো দেখতে নয়, তবে স্টারসুলভ ব্যাপার আছে। আর ‘হারবার্ট’-এর পর থেকেই জানি যে, শুভাশিসদা কেমন অভিনেতা,’’ বললেন সৌমিক। প্রযোজক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কাজ করে মুগ্ধ তিনি।

তাঁর কেরিয়ার দেখেছে ইন্ডাস্ট্রির অনেক বদল। ‘‘আগে হাতে গোনা ভাল ছবি হতো। এখন দর্শকের নতুন কিছু চাই। বাঁধাধরা ফর্মুলায় ফেলে ছবি করার ধারণাই বদলে গিয়েছে,’’ মন্তব্য তাঁর। সৌমিকের ছবি নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ে না। তাতে চিন্তিত নন পরিচালক। তাঁর চিন্তা এখনকার সময় নিয়ে। ‘‘এখন যা হচ্ছে, তা নিয়ে ছবি না করতে পারলে তো আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়েও আর কাজ করা যাবে না। জানেন, হংকং ছাড়া চাইনিজ় ছবিতে ব্যাঙ্ক রবারি দেখানো হয় না! প্রশ্ন হল, আমরা কি সেই পথেই যাচ্ছি? ব্যাপারটা সে দিকেই যদি এগোয়, তা হলে চিন্তার। সমস্যা নিয়ে কথা না বললে সমস্যা বুঝতেও পারব না। উত্তরণও হবে না।’’ ‘মহালয়া’ নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা থাকলেও আত্মবিশ্বাসী তিনি। বলছেন, ‘‘আমার গল্পটা বলা নিয়ে কথা ছিল। দর্শকের কেমন লাগবে, সেটা ভেবে নিজেকে বদলাতে পারব না। যেটা যে ভাবে বলতে আমি স্বচ্ছন্দ, সেটাই বলব। মনে হয়, দর্শকের ভালই লাগবে।’’

এখন তিনি ব্যস্ত কিশোরকুমারের বায়োপিক লেখার কাজে। সুযোগ পেলেই ফিরে আসেন এখানে। ‘‘নাড়ির টান তো। এখানেই পড়াশোনা, বন্ধুবান্ধব। এখন তো আবার কাজও। আসলে আমি দু’নৌকায় পা দিয়ে চলছি,’’ হাসলেন সৌমিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Cinema Soumik Sen Screenwriter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE