সৌরভ পালোধী। ছবি: সংগৃহীত।
অভিনয় করতে গেলে নাকি আজকাল কোনও প্রশিক্ষণেরই দরকার পড়ে না। তথাকথিত ‘সুন্দর’ ও সমাজমাধ্যমে অনুরাগীর সংখ্যা ভাল থাকলেই অভিনেতা হওয়ার রাস্তা মসৃণ। শনিবারের সকালে এমনই নিজের সমাজমাধ্যমে এমন একটি পোস্ট ভাগ করে নিয়েছিলেন পরিচালক, অভিনেতা সৌরভ পালোধী। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হল, তিনি বললেন, “আজকেই কোনও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এই পোস্ট করেছি, এমন নয়। এই বিষয়গুলি লাগাতার চলে আসছে। নিজেও সিরিজ় বা ছবি করতে গিয়ে কাস্টিং এর বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখি।”
নিজের পেশাগত জগতে কেউ এগোতে না পারলেই তাঁরা অভিনয়ে চলে আসছেন বলে মনে করেন সৌরভ। তিনি বলেন, “কেউ চিকিৎসক হতে পারেননি বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেননি। তাই অভিনেতা হয়ে গিয়েছেন।” বর্তমানে ছবি বা সিরিজ়ে সঠিক পদ্ধতিতে কাস্টিং হয় না বলে দাবি সৌরভের। থিয়েটার থেকে বহু ছেলেমেয়েকে কাজের সুযোগ দেওয়া হলেও সঠিক পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে না বলেও মনে করেন তিনি।
সৌরভ বলেন, “থিয়েটারের অভিনেতাদের মুখ বন্ধ করে সামান্য আনন্দ দেওয়ার জন্য কাজ দেওয়া হচ্ছে ঠিকই। সেই পরিচালকেরা জাহির করছেন, তাঁর ছবি বা সিরিজ়ে থিয়েটারের ছেলেমেয়েরা অভিনয় করছেন। কিন্তু আসলে তিনি ‘সস্তায় পুষ্টিকর’ অভিনেতাদের পেয়ে যাচ্ছেন। হয়তো একজন অভিনেতা প্রতি দিন দত্তপুকুর থেকে কলকাতায় যাতায়াত করে সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন। তিনি যে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন তাতে তাঁর নিত্য যাতায়াতের খরচটুকুও ওঠে কি না সন্দেহ।”
তবে থিয়েটার থেকে এলেই তিনি ভাল অভিনেতা এমন মানেন না সৌরভ। তাঁর কথায়, “যাঁরাই থিয়েটারে অভিনয় করেন, তাঁরাই ভাল অভিনেতা এমন নয়। এমন অভিনেতাও রয়েছেন যাঁরা থিয়েটারের নাম কাজে লাগিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে বসে আছেন। যাঁরা কাস্টিং করেন, তাঁরা থিয়েটারের কথা শুনেই সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন হয়তো। কাস্টিং যাঁরা করেন, তাঁদেরও তো পড়াশোনার দরকার!”
সৌরভ তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেছেন, সমাজমাধ্যমে বেশি সংখ্যক ফলোয়ার থাকলেই আজকাল কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করতেই পরিচালক বলেন, “ধারাবাহিকের সেট থেকে কেউ কাজ নিয়ে কোনও বলেন না। দেখা যায়, ধারাবাহিকের সেটে চার-পাঁচ জন মিলে নেচে রিল বানাচ্ছেন। এটা কি হওয়ার কথা ছিল? এই বিষয়টিকে উদ্যাপন করা হচ্ছে। এটাই আমার আপত্তি।”
তিনি যোগ করেন, “এমন নয়, সমাজমাধ্যমে ফলোয়ার সংখ্যা বেশি মানেই তিনি খারাপ অভিনেতা। আমার অতি প্রিয় অভিনেত্রী সোহিনী সরকারের তো বহু অনুরাগী রয়েছেন। কিন্তু তিনি তো দারুণ অভিনেত্রী। কিন্তু ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ার সংখ্যা দেখে যদি কাউকে কাজ দেওয়া হয়, সমস্যা সেখানে। নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তা যাচ্ছে, রিল বানিয়েই কাজ পাওয়া যায়। অভিনয়ের প্রশিক্ষণ বা চর্চার কোনও প্রয়োজন নেই।”
অভিনয় দক্ষতার চেয়ে সমাজের তৈরি করে দেওয়া বাহ্যিক সৌন্দর্যের নিরিখেও আজকাল কাজ দেওয়া হয় বলে দাবি সৌরভের। তিনি বলেন, “সমাজের চোখে সুন্দর দেখতে হলেই তিনি কাজ পাচ্ছেন। ১৯-২০ বছরের মেয়ে যদি সুন্দর, মিষ্টি বা লক্ষ্মীমন্ত হন, তা হলেই তিনি কাজ পেয়ে যাচ্ছেন। আর সঙ্গে যদি তাঁর সমাজমাধ্যমে ভাল ফলোয়ার্স সংখ্যা থাকে তা হলে তো আরও সহজ। সকলে কাজ পেলে ভালই লাগে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে কাজ পেলে আমার সত্যিই গাত্রদাহ হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy