দুর্যোগের আগের দিন সমতলে ফিরেছেন সাহানা বাজপেয়ী।
পুজো মিটতেই মেয়ে রোহিণী এবং স্বামী রিচার্ড হেরেটের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে পা়ড়়ি দিয়েছিলেন সাহানা বাজপেয়ী। পুবংয়ের এক চা বাগানকে প্রায় নিজের অস্থায়ী ঠিকানা বানিয়ে ফেলেছেন সঙ্গীতশিল্পী। কিন্তু এ বার সেই ঠিকানার একেবারে অন্যই রূপ! সাহানার মনে হয়েছে, এ যেন আগাম সতর্কতা। পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলেই এমন দুর্যোগ দেখল পাহাড়।
একাদশী থেকে ত্রয়োদশীর দুপুর পর্যন্ত ছিল রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি। তার আগেই গানের এক মাস্টারমশাইয়ের কাছে সাহানা শুনেছিলেন, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস নাকি বেশ গুরুগম্ভীর। তাতে গুরুত্ব না দিয়েই পাহাড়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন তাঁরা। পুবং থেকে দার্জিলিংয়ে গিয়ে ছোট্ট রোহিণীর আবদারও মিটিয়েছেন মা। পায়ে দড়ি বেঁধে পাহাড় থেকে পাহাড়ে যাওয়া থেকে কাঠের পাটাতন বেয়ে পাহাড় পেরোনো— দুঃসাহসিক খেলার রোমাঞ্চ থেকে ঘোরাঘুরির মজা। সব মিলিয়ে দিব্যি কাটছিল পুজো-পরবর্তী ছুটি।
ত্রয়োদশী বিকেলে দার্জিলিং থেকে পুবং ফেরার পথেই বৃষ্টি শুরু। সে আর থামতেই চায় না। সাহানার কথায়, ‘‘বৃষ্টির চোটে রাস্তা এমনই পিছল হয়ে গিয়েছিল যে, একটি গাড়ি উল্টে যায় আমাদের চোখের সামনে। প্রাণহানি হয়নি, এই বাঁচোয়া। কিন্তু রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তখনও আরও তিন কিলোমিটার বাকি পুবং পৌঁছতে। স্থানীয়রা টর্চের আলোয় পথ দেখিয়ে নিয়ে যান আমাদের। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই অতিথিশালায় ফিরি।’’
পরদিন জলপাইগুড়ি নামার কথা। বৃষ্টিতে সেই রাস্তা দিয়ে পাহাড় থেকে নামা বেশ বিপজ্জনক! অতিথিশালার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করতে সাহানা জানতে পারেন, জিপের মতো যে গাড়িগুলিতে চারটি চাকাই ঘোরে, তেমন গাড়ি পাঠানো হবে। অন্যান্য গাড়িতে চেপে ওই রাস্তা বেয়ে নামার বিপদ এড়াতে সাধারণত পাহাড়ি গাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়। সেই গাড়িতেই পরদিন দুপুরে সমতলের দিকে রওনা হন সাহানা এবং তাঁর পরিবার। বৃষ্টিভেজা হয়েই ট্রেনে ওঠেন তাঁরা। সাহানার কথায়, ‘‘দুর্যোগ ভয়াবহ রূপ নেওয়ার ঠিক আগের দিনই আমরা সমতলে নেমে আসি। কলকাতা ফেরার পরে অতিথিশালার ছেলেটি আমায় ওখানকার ছবি পাঠাল। দেখি যে রাস্তা দিয়ে নেমেছি, তার সমস্তটাই ভেঙে পড়েছে।’’
সাহানার একটিই অনুরোধ, ‘‘করোনার প্রকোপ, বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এ সব এমনি এমনি নয়। তাই সকলে এ বার একটু সাবধান হোন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কিন্তু এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে। সতর্ক না হলে সব শেষ হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy