Sadhana Shivdasani followed Audrey Hepburn to have her special haircut dgtl
Bollywood
বিপাকে পড়ে হলিউড শিল্পীর শরণ, বিখ্যাত কেশসজ্জা আজীবন সঙ্গী ছিল সাধনার
তিন ও চার দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাধনা বসুর নামে মেয়ের নামকরণ করেছিলেন সাধনার বাবা মা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২১ ১২:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
বলিউডের কিছু নায়ক নায়িকার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ফ্যাশনের কিছু কেতা। সেগুলির মধ্যে অন্যতম ‘সাধনা কাট’। অর্থাৎ কপালের উপর ছোট ছোট চুলের গুচ্ছ। পোশাকি ভাষায়, ‘ফ্রিঞ্জেস’।
০২১৬
সাতের দশকে সাধনার হাত ধরে হিন্দি ছবিতে দেখা যায় কেশসজ্জার এই ধরন। এখনও পর্দার অভিনেত্রীদের মধ্যে তো বটেই, ‘সাধনা কাট’-এ বশ সাধারণ মহিলারাও। কিন্তু সাধনা কেন এই কেশসজ্জা পছন্দ করতেন? জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েক দশক।
০৩১৬
ব্রিটিশ ভারতের করাচি প্রদেশে সাধনার জন্ম ১৯৪১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তাঁর কাকা হরি শিবদাসানিও ছিলেন অভিনেতা। করিশ্মা ও করিনা কপূরের মা ববিতা তাঁর খুড়তুতো বোন।
০৪১৬
পরিবারে অভিনয়ের আবহ ছিলই। তিন ও চার দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাধনা বসুর নামে মেয়ের নামকরণ করেছিলেন সাধনার বাবা মা। তখন অবশ্য তাঁরা স্বপ্নেও ভাবেননি ভবিষ্যতে এই শিশুও শাসন করবে বলিউড।
০৫১৬
ওয়াডালার অক্সিলিয়াম কনভেন্ট স্কুলের পরে সাধনা ভর্তি হন জয় হিন্দ কলেজে। ছোট থেকেই সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন তিনি। কলেজজীবনে নিজেই অভিনয় শুরু করেন নাটকে। সেরকম একটি নাটকে তাঁকে দেখেই পছন্দ হয়ে যায় সিন্ধি ছবির নির্মাতাদের। সাধনা অভিনয় করেন ভারতের প্রথম সিন্ধি ছবি ‘আবানা’-য়।
০৬১৬
দেশভাগের উপর তৈরি এই ছবি মুক্তির আগে সংবাদপত্রে প্রচুর লেখালেখি হয়। সে সময় ছবির পোস্টার দেখে সাধনাকে পছন্দ হয়েছিল প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ের। তিনি নিজের প্রযোজনা সংস্থার ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দিলেন সাধনাকে।
০৭১৬
সেই ছবির নাম ছিল ‘লভ ইন সিমলা’। শ্যুটিং শুরুর আগে সাধনার লুক টেস্ট করা হয়। সেখানে সবকিছুই ছিল প্রযোজকের পছন্দসই। কিন্তু বাধ সাধল সাধনার প্রশস্ত কপাল।
০৮১৬
কিন্তু প্রযোজকের পছন্দমতো কিছুতেই নায়িকার কেশসজ্জা করা যাচ্ছিল না। সমস্যার সমাধান করলেন পরিচালক আর কে নায়ার। তিনি অনুসরণ করলেন হলিউড অভিনেত্রী অর্ড্রে হেপবার্নকে।
০৯১৬
‘লভ ইন সিমলা’-র কয়েক বছর আগে ১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘রোমান হলিডে’। এই ছবিতে নায়িকা অর্ড্রে হেপবার্নের কপালে পড়ে ছিল কয়েক গুচ্ছ চুল। ঠিক সেভাবেই সাধনাকে সাজানোর পরামর্শ প্রযোজককে দেন নায়ার।
১০১৬
পরিচালক এবং প্রযোজক এ বার কথা বলেন সাধনার সঙ্গে। প্রস্তাব দেন সামনের চুল ছোট করে কেটে ফেলার জন্য। সে সময় নায়িকাদের একঢাল লম্বা চুলই ছিল ফ্যাশন। তবু সাধনা ঝুঁকি নেন। রাজি হন চুল কাটাতে।
১১১৬
এক চিনা হেয়ারড্রেসারের হাতে সাধনার চুল নতুন ভাবে সেজে ওঠে। তাঁর এই নতুন সাজ খুবই জনপ্রিয় হয়। নতুন সাজের নামই হয়ে যায় ‘সাধনা কাট’।
১২১৬
সাধনার সমসাময়িক অন্য নায়িকাও এই হেয়ারস্টাইলের ভক্ত ছিলেন। প্রথম ছবি থেকে শুরু করে কেরিয়ারের শেষ অবধি কপালের উপর গুচ্ছ চুলের ফ্রিঞ্জেস ছিল সাধনার সঙ্গী।
১৩১৬
পরে ১৯৬৬ সালে পরিচালক রবি নায়ারকেই বিয়ে করেছিলেন সাধনা। বিয়ের পরেও কয়েক বছর তিনি অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু সাতের দশক থেকে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। কারণ পর্দায় নায়িকা থেকে চরিত্রাভিনেত্রী হতে রাজি ছিলেন না সাধনা।
১৪১৬
অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার পরে দু’ একটি ছবি পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছিলেন সাধনা। তবে তার পরে ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নিয়েছিলেন।
১৫১৬
১৯৯৫ সালে স্বামীর মৃত্যুর পরে একা হয়ে পড়েন সাধনা। সে সময় তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন শারীরিক অসুস্থতা এবং আর্থিক সমস্যায়। শোনা যায়, নিজের সেরা সময়ের মহার্ঘ্যতম নায়িকা সাধনার বার্ধক্যের বড় অংশ কেটেছিল আশা ভোঁসলের সান্তাক্রজের ফ্ল্যাটে।
১৬১৬
দীর্ঘ অসুস্থতার পরে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত হন সাধনা। রেখে যান ‘পরখ’, ‘হাম দোনো’, ‘আসলি নকলি’, ‘মেরে মেহেবুব’, ‘ওহ কৌন থি’, ‘মেরা সায়া’, ‘ওয়ক্ত’, ‘ইন্তেকাম’, ‘রাজকুমার’, ‘এক ফুল দো মালি’-সহ অসংখ্য সুপারহিট ছবি। এবং আদি ও অকৃত্রিম ‘সাধনা কাট’।