রূপঙ্করের যন্ত্রণা নাড়া দেয় তাঁর মেয়েকে।
আর সবার কাছে আমার বাবা তারকা। কিন্তু আমার বা মায়ের কাছে তো তা নয়। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, বাবা খুব ব্যস্ত। সারা দিন গান নিয়ে, অনুষ্ঠান নিয়ে সময় কেটে যায়। তা বলে যে বাবা একটা ভিন্গ্রহের মানুষ, এমনটা কখনও মনে হয়নি। বরং বড় হতে হতে বুঝেছি, সবার বাবাই কাজ করেন, ব্যস্ত থাকেন, আমার বাবার ব্যস্ততাটা শুধু একটু অন্য রকম।
এত ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু বাবা ঠিক সময় বার করে রাখে আমার জন্য। কিছু দিন আগেও রোজ আমায় স্কুলে দিতে যেত। অনুষ্ঠান সেরে ভোর চারটেয় ফিরেও ঠিক স্কুলে যাওয়ার সময় উঠে পড়ত বাবা। বাবা-মেয়ের একান্ত সময়টুকু কোনও দিন মিস করত না। আমার সারা দিনের কথার ঝাঁপি খোলার সময় যে ওই স্কুলে যাওয়ার পথটুকুতেই। বাবাও কী গান গাইল, কোথায় অনুষ্ঠান রয়েছে, সেই সব গল্প করত।
এখনও যে দিনগুলোয় বাবা বাড়িতে থাকে, খুব মজা করি আমরা। বাবার সঙ্গে খেলা, গান শেখা, ছবি আঁকা, টিভি দেখায় দিনটা দারুণ কাটে। কখনও বাবা গল্পের বই পড়েও শোনায়। মাঝেমধ্যে সাইকেল চালাতে বেরোই একসঙ্গে। বাবাকে দেখেই কিন্তু আমিও গান ভালবাসতে শিখেছি।
ইদানিং গান নিয়েই বেশি কথা হয় আমাদের। নতুন কোনও গান শুনলে বাবাকে বলি। বাবারও কোনও গান ভাল লাগলে আমায় শুনতে বলে। আমি ইউকুলেলে বাজাই। তাতে গান তুললে আগে বাবাকেই শোনানো চাই।
এই ‘ফাদার্স ডে’-তে একটা কার্ড বানিয়েছি বাবার জন্য। কবিতা লিখেও উপহার দিই। এই বিশেষ দিনটায় আর পাঁচটা মেয়ের মতোই চাই, আমার বাবা খুব ভাল থাকুক। বাবার সব ইচ্ছে পূরণ করার চেষ্টা করব আমি। আর আমার একটাই আবদার, আরও বেশি সময় কাটাতে চাই একসঙ্গে।
মাঝে ক’টা দিন বাবা সাংঘাতিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে গেছে। ওই সময়টায় চেষ্টা করেছি পাশে পাশে থাকার। যখন যেমন দরকার, সব ব্যাপারে সাহায্য করার। হ্যাঁ, আমার বাবার নাম রূপঙ্কর বাগচি। এক জন শিল্পী। এক জন তারকা। আর তারকাদেরও কিন্তু যন্ত্রণা হয়!
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy