ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
আজ, ১২ সেপ্টেম্বর সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন। আজও তাঁর জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাটা পড়েনি। বাংলা বইবাজারে বিভূতিভূষণের বইয়ের বিক্রি এখনও শীর্ষ তালিকায়।
সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রের সম্পর্ক এক সময়ে অনেক বেশি নিবিড় ছিল। এখন এই বাঁধন খানিক আলগা হলেও, বিভূতিভূষণের সাহিত্য কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছে আজও প্রিয়। সেই কবে সত্যজিৎ রায় 'পথের পাঁচালী' দিয়ে বিশ্ব জয় করেছিলেন, সেই পরম্পরায় ছেদ পড়েনি এই সময়েও।
২০০৩ সালে তরুণ মজুমদার বিভূতিভূষণের 'কিন্নর দল' গল্পটি অবলম্বনে তৈরি করেছিলেন 'আলো'। সেই ছবির প্রধান অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আজ লেখকের জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
আনন্দবাজার অনলাইনকে ঋতুপর্ণা বলেছেন, "বিভূতিভূষণের কীর্তি অমর। তাঁর সাহিত্য আজও নতুন আলো ছড়ায়। আমি তাঁর লেখা পড়ে অবাক হয়ে যাই। প্রতিটি রচনায় এত বিস্তার! তা সে গল্পই হোক বা উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের চিঠির মতোই বিভূতিভূষণের ডায়েরি মানুষের মনকে সদর্থক রাখতে পারে। বিশেষ করে মনে পড়ে 'আরণ্যক', যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে যেন তিনি মিশে গিয়েছেন। গ্রামবাংলা, সাধারণ মানুষ এবং অরণ্য যেন আমাকে বার বার চিনিয়েছে জীবনের মায়া, বিশ্বপ্রকৃতির রহস্য। পড়তে পড়তে মিশে যাই এই সৃষ্টিরহস্যে।"
বিভূতিভূষণ তাঁর অভিনয়-জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন, এ কথা জানিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, "আমার পরম সৌভাগ্য, তাঁর গল্প থেকে তৈরি 'আলো' ছবিতে অভিনয় করেছিলাম। মূল 'কিন্নর দল' ওইটুকু একটা গল্প। সেটা থেকেই অত বড় মাপের একটা সিনেমা! গল্পে সেই বিস্তারের সুযোগ ছিল বলেই তো এমনটি সম্ভব হয়েছিল। মানুষের মনে স্থায়ী জায়গা করে নেয় 'আলো'। এই সিনেমা থেকেই আমার কেরিয়ার অন্য দিকে ঘুরে যায়। ভাল সিনেমা অনুভব করতে শিখি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই কারণে আমি আজীবন ঋণী থেকে যাব। তরুণ মজুমদারের কাছেও।"
পরিশেষে ঋতুপর্ণা জানান, "আজ বিশ্ব জুড়ে প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে জোরদার আলোচনা। ভালবাসার অভাবে মানুষ নষ্ট করে ফেলেছে অনেকাংশেই প্রকৃতি ও পরিবেশ। করোনা, অতিমারি পরিস্থিতিতে তাই আরও বেশি করে মনে পড়ে বিভূতিভূষণকে। তাঁর সাহিত্য আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছিল, তা গ্রহণ করতে পারিনি বলেই আজকের দুর্ভোগ আমাদের বইতে হচ্ছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy