ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। গ্রাফিক : আনন্দবাজার অনলাইন।
মন ছটফট করছে। না লিখে আর পারলাম না। আমায় বা কোনও মানুষকেই অকারণ ছোট করে কিছু পাওয়া যাবে না। আমি নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার। আকাশের মতো পরিষ্কার। এত বছর ধরে একটানা একজন মহিলা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমার অভিজ্ঞতার বোধ আমায় যা শিখিয়েছে আমি তা-ই বলেছি।
যে দিন রেড রোডে পুজোর কার্নিভালের আয়োজন হল ঠিক একই সঙ্গে রানি রাসমণি রোডে চলছিল দ্রোহ কার্নিভাল। সেই রেড রোডের কার্নিভালে আমার নাচ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তোলা ছবি ঘিরে এখন নানা কথা। এই অনুষ্ঠানের জন্য কলকাতা পুলিশ বডিগার্ড লাইন আবাসিক দুর্গাপুজোর তরফে আমার কাছে আবেদন আসে। লালবাজারের পুলিশের দফতর থেকে আবেদন জানানো হয় আমার কাছে। তাদের সমর্থন করেছি। অনুষ্ঠান করেছি। রাজ্যে প্রশাসনকে আমাদের প্রয়োজন। তাদের সমর্থন করার জন্যই একটা নাচ পরিবেশন করেছিলাম। একজন শিল্পী হিসাবে এটা আমিই করতেই পারি। শিল্পসত্তাকে বাদ দিয়ে আমি বাঁচব কী করে! আমার বিবেক, আমার বোধ কারও কাছে জমা রাখিনি। অনেক বছরের পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের ফলে আমার এই অবস্থান। একই ভাবে পরিশ্রম করে চলেছি। কাজ করলে তো কথা শুনতেই হবে।আমার সম্বন্ধেও অনেক কথা শুনি। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকি।
আমি অত্যন্ত পীড়িত এবং বিধ্বস্ত তিলোত্তমার ঘটনা নিয়ে। যে সব চিকিৎসক অনশন করছেন তাঁদের নিয়েও চিন্তিত আমি। আমার ভিতরের কষ্ট বা প্রতিবাদ আমার কাছেই রাখতে চাই। সবাইকে চিৎকার করে বলে বা লিখে জানাতে হবে কেন? আর আমি কারও সঙ্গেই কিছু ভাগ করতে চাই না। কিছু নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর অবস্থান থেকে বুঝি, সব কিছুকেই তাঁরা খারাপ চোখে দেখেন আর বিরূপ মন্তব্য করেন। তাঁদের আমি কোনও সুযোগ দিতে চাই না। যেচে অপমানিত হতেও চাই না। আত্মসম্মান আর মর্যাদা আমার জন্মগত অধিকার। মা-বাবার শেখানো সংস্কারে নিজেকে তৈরি করেছি আমি। যে সংস্কার ছোটবেলা থেকে শিখিয়েছে অন্য মানুষের জন্য কিছু ভাল ভাবতে। সেই ভাবনার অন্বেষণে ফিরেছি। অন্যের সমস্যায় কী ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ব, সেটাই শিখেছি। কাউকে প্রমাণ দিতে চাই না। আজও অনেকের জীবিকা এবং পরিবার আমার উপর নির্ভর করে থাকে। আমি সেই নিয়ে শান্তিতে আছি।
এই পুজোয় অনেকেই হয়তো পুজো বাতিলের পক্ষে ছিলেন। আমার সেটা করার উপায় নেই। যদিও এ বার অনেক অনুষ্ঠান, অনেক পুজোর উদ্বোধন বাতিল করেছি। পুরস্কার নিতেও যাইনি, কিন্তু দু’-একটা কাজের দিকে আমার নাচের দল তাকিয়ে থাকে। তাদেরও সংসার খরচ বহন করতে হয়। সেই জায়গায় আমাকে যেতে হয়েছে ।
আচ্ছা, কাজ না করলে বাঁচব কী করে? কর্ম আমাদের ধর্ম। কর্মের মধ্যেই প্রতিবাদ থাকবে। থাকবে সুবিচারের প্রতীক্ষা। তিলোত্তমার পরিবারকে আমার প্রণাম। ডাক্তারদের প্রতি সহমর্মিতা রইল।
শ্যামবাজারে সে দিনের প্রতিবাদ মিছিল হোক কিংবা প্রতীকী প্রতিবাদ— অনেকেই সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশে বলব, তিলোত্তমা-কাণ্ডে বিচার চাই প্রতিনিয়ত। সিবিআই, সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের কাছে আশাপ্রার্থী যে তিলোত্তমা এবং ডাক্তারেরা বিচার পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy