ছবিতে ঋদ্ধি
চোখে কাজল-মাসকারা, ঠোঁটে লিপস্টিক, পায়ে ব্লক হিলস, পরনে শাড়ি! আর পাঁচজন বৃহন্নলার মতোই লেক গার্ডেন্সের ট্র্যাফিক সিগনালে দাঁড়ানো গাড়ি থেকে টাকা তুলতে হয়েছিল ঋদ্ধি সেনকে। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘তুই যদি টাকা তুলতে পারিস, তবেই প্রমাণ হয়ে যাবে তুই ভাল না খারাপ অভিনেতা।’’ সে দিন একশো টাকা তুলেছিলেন ঋদ্ধি।
‘নগরকীর্তন’ ছবিতে বৃহন্নলার চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ‘‘এই চরিত্রের জন্য শারীরিক রূপান্তর একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু তার চেয়েও বড় ক্রাইসিসটা ফুটিয়ে তোলা,’’ বলছিলেন ঋদ্ধি। ‘দ্য ড্যানিশ গার্ল’ ছবিটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি। তবে প্রস্তুতি বলতে শিল্পীর তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ। ‘‘বৃহন্নলাদের একজন আমাকে বলেছিলেন, মাছের কাঁটা খুব আস্তে আস্তে বেছে খেতে। কারণ ছেলে-মেয়েদের খাওয়ার ধরনে বিস্তর ফারাক। বাড়িতে মা আর সুরঙ্গনা কী ভাবে ওড়না নেয়, জল খেয়ে কী ভাবে ঠোঁট মোছে, সে সব লক্ষ্য করেছি।’’
ঋদ্ধির মেকআপ করতে লাগত প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা। ‘‘থ্রেডিং নয়, ক্লিপার ব্যবহার করে ভুরু প্লাক করা হয়েছিল। দিনে দু’বার দাড়ি কামাতে হতো। আমার সকালে কামালেই বিকেলে দাড়ি উঠে যায়। দাড়ি কামানোর পরে সবুজ আভা ঢাকার জন্য আর এক প্রস্ত মেকআপ। ওই সময়ে জিমও বন্ধ রেখেছিলাম,’’ বলছিলেন তিনি। গলার স্বরও পরিবর্তন করতে হয়েছে তাঁকে। একটু ফিসফিস করে, চাপা কণ্ঠস্বরে কথা বলেছেন ছবিতে। সবচেয়ে বড় কমপ্লিমেন্ট পেয়েছেন পরিচালক শেখর কপূরের কাছ থেকে। ‘‘উনি বললেন, আমি গোটা ছবি ধরে তোমার ভুল ধরার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এত নিখুঁত অভিনয় যে, কিছুতেই ভুল বার করতে পারলাম না,’’ শিহরিত কণ্ঠ ঋদ্ধির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy