এনোলা হোমস
(ওয়েব মুভি)
পরিচালনা: হ্যারি ব্র্যাডবিয়ার
অভিনয়: মিলি ববি ব্রাউন, হেলেনা বোনহ্যাম কার্টার, হেনরি ক্যাভিল
৬/১০
শার্লক হোমসের বোন এনোলা। যে নামের অক্ষরগুলো উল্টে দিলে দাঁড়ায় ‘অ্যালোন’। মা ইচ্ছে করেই মেয়ের এমন নাম রেখেছিল। মেয়েকে বড়ও করেছে স্বতন্ত্র নিয়মে, বাঁচতে শিখিয়েছে নিজের মতো করে। এনোলা জানে সে একাই যথেষ্ট, সঙ্গীর দরকার নেই তার। বাড়িতেই সে মায়ের কাছ থেকে শেখে মার্শাল আর্টস, লাইব্রেরির প্রতিটা বই তার কণ্ঠস্থ। ১৬ বছরের জন্মদিনে ঘুম থেকে উঠে কিশোরী আবিষ্কার করে, মা বাড়িতে নেই। শুধু তার জন্য রেখে গিয়েছে কিছু ক্লু। দুই দাদা মাইক্রফট আর শার্লকও এসে পড়ে ঘটনাস্থলে। এনোলাকে ফিনিশিং স্কুলে দিয়ে নিয়মের নিগড়ে বেঁধে ফেলতে চাইলে সে চুপিসারে পাড়ি দেয় লন্ডন। পথেই শুরু হয় তার অ্যাডভেঞ্চার।
ছবির প্রথম থেকেই এনোলা তার অ্যাডভেঞ্চারে বেঁধে ফেলে দর্শককে। বিস্তীর্ণ ঘাসজমি আর রেলব্রিজের চোখজুড়োনো ল্যান্ডস্কেপে এনোলার ঝরঝরে ন্যারেশনে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলে এই ফ্যান ফিকশন। এগিয়ে চলে ষোড়শী, তার বয়স আর জেন্ডারের ‘বাধা’ অতিক্রম করে। উনিশ শতকের শেষ ভাগে উওমেন’স সাফ্রেজের আঁচ তখন গ্রেট ব্রিটেন জুড়ে। নারীদের ভোটাধিকারের দাবি। মা ও তার সঙ্গীদের কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে কিশোরী এনোলার কাছে। ভিক্টোরিয়ান এরা-র এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে এই অ্যাডভেঞ্চার কাহিনিতে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে। কিন্তু তা আরও তলিয়ে দেখানো যেত। এমব্রয়ডারি আর করসেটে বাঁধা নারীত্বের সংজ্ঞা দুরমুশ করতে চাওয়া এনোলা দাদাদের সাহায্য পায় না। আপাত-নিস্পৃহ শার্লককে সে স্পষ্ট বলে দেয়, এই দুনিয়ার বদলের প্রয়োজন আছে। যেমনটা তার মা-ও চায়।
এনোলার জার্নিতে এসে পড়ে লর্ড টিউকসবারি, রহস্য ঘনিয়ে ওঠে সেখানেও। তবে এই মিস্ট্রি অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান সমস্যা, কোনও রহস্যের দানাই জমাট বাঁধেনি শেষ পর্যন্ত। বুদ্ধিদীপ্ত এনোলার ‘ডিটেকটিভ’ হয়ে ওঠার উপকরণে শুধুই কোড-ব্রেকিং আর ওয়র্ড প্লে। শার্লকের বিখ্যাত ডিডাকশনের ছিটেফোঁটাও এ ছবিতে পাওয়া গেল না। দীর্ঘ দিন পরে বোনের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে ‘জিনিয়াস’ দাদারা চিনতেই পারল না এনোলাকে, যা একেবারেই শার্লক-সুলভ নয়। শার্লক-ভক্তদের হেনরি ক্যাভিলকে এ ছবিতে মেনে নেওয়া কঠিন। মাইক্রফটও প্রয়োজনের অতিরিক্ত ‘লাউড’, পুরুষতন্ত্রের ধ্বজাধারী দেখাতে গিয়ে তাকে প্রায় ভিলেন বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জায়গাটিই আরও সাট্ল আর স্মার্ট হতে পারত। তবে কাস্টিংয়ে অভিযোগের কোনও জায়গা রাখেননি এনোলার চরিত্রে মিলি ববি ব্রাউন। ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’-এর পরে এনোলা হোমস মিলির কেরিয়ারকে আলাদা মাইলেজ দিল, সন্দেহ নেই। বুদ্ধি, সারল্য, সাহস, রসবোধ, ভালনারেবিলিটির মিশেলে এনোলার চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলেছেন মিলি। লর্ড টিউকসবারির সঙ্গে তার একটা সূক্ষ্ম, মিষ্টি প্রেমের অনুষঙ্গটিও বেশ উপভোগ্য। তবে ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র ইউডোরিয়ার ভূমিকায় হেলেনা বোনহ্যাম কার্টার মাত্র কয়েকটি দৃশ্যে এলেন, তাঁকে সে ভাবে ব্যবহারই করেননি পরিচালক হ্যারি ব্র্যাডবিয়ার। ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির পরের ছবির কথা ভেবেই কি?
ইয়ং অ্যাডাল্টদের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি তৈরি হতেই পারে ন্যান্সি স্প্রিঙ্গার সৃষ্ট এই চরিত্রকে ঘিরে। তবে সেই রহস্য-কাহিনিতে চাই আরও মোচড়। নামের শেষে হোমস রয়েছে বলেই প্রত্যাশাটা বেড়ে যায়, আর কী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy