Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Movie Review

Review: ভাবনা উদ্রেককারী প্রেমের গল্প

দাদা পড়াশোনা করলেও, তার কলেজে পড়ার অনুমতি নেই। এমব্রয়ডারির কাজ করে সে সিনেমা দেখার টাকা জোগাড় করে।

অনকহি কহানিয়া ছবির দৃশ্য।

অনকহি কহানিয়া ছবির দৃশ্য।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৩৩
Share: Save:

অনকহি কহানিয়া
পরিচালনা: অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি, অভিষেক চৌবে, সাকেত চৌধুরী

অভিনয়: অভিষেক, রিঙ্কু, দেলজ়াদ, জ়োয়া, কুণাল, পালোমি, নিখিল

৬.৫/১০

নেটফ্লিক্স এবং অ্যান্থলজি ছবি গত কয়েক মাসে সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘লাস্ট স্টোরিজ়’, ‘গোস্ট স্টোরিজ়’, ‘আজীব দস্তানস’-এর পরে বলিউডের তিন নামী পরিচালক একত্রিত হয়েছেন ‘অনকহি কহানিয়া’র গল্প বলতে। ‘রে’ সিরিজ়ের পরে আবারও এই অ্যান্থলজিতে শীর্ষ স্থান বজায় রাখলেন ‘সোনচিড়িয়া’খ্যাত পরিচালক অভিষেক চৌবে। হতাশ করেছেন অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি। সাকেত চৌধুরীর ছবিতে গল্প বলায় নতুনত্ব রয়েছে। তিনটি ছবির কেন্দ্রেই প্রেম। তবে তা ‘ফিলস লাইক ইশক’ নয়। এখানে প্রেম একাকিত্বের দোসর, কোথাও বা নতুন জীবন বেছে নেওয়ার রাস্তা, আবার কোথাও ধুলো পড়ে যাওয়া দাম্পত্যের আয়নাকে মুছে নেওয়ার অজুহাত।

কন্নড় লেখক জয়ন্ত কৈকিনীর ‘মধ্যান্তর’ গল্প অবলম্বনে অভিষেকের ছবি। মুখ্য চরিত্রে মরাঠি ছবি ‘সাইরাট’খ্যাত রিঙ্কু রাজগুরু (মঞ্জরী) এবং দেলজ়াদ হিওয়ালে (নন্দু)। ছবির প্রথম দৃশ্য থেকেই ইঙ্গিতপূর্ণ দৃশ্যকল্প বুঝিয়ে দেয়, সিনেমার নিজস্ব ভাষার উপরে পরিচালকের কতটা দখল রয়েছে। মুম্বইয়ের সাদামাঠা সিনেমা হলে কাজ করে নন্দু। টিকিটে স্ট্যাম্প দেওয়া, হল-সংলগ্ন ক্যান্টিন চালানোর পাশাপাশি মদ্যপ কাকার সেবা করাও তার রোজনামচা। অন্য দিকে চওলে থাকা মঞ্জরী নিজের পরিবারে অনাদৃত। দাদা পড়াশোনা করলেও, তার কলেজে পড়ার অনুমতি নেই। এমব্রয়ডারির কাজ করে সে সিনেমা দেখার টাকা জোগাড় করে। সিনেমার মতো করেই মঞ্জু-নন্দুর চার চোখ এক হয়। মঞ্জরীর চোখে নন্দু সেই নায়ক, যার এক ঘুষিতেই ভিলেন ঘায়েল। আবার নন্দুর কল্পনায় সে ড্রিমগার্ল।

কিন্তু প্রেম মানেই মিলন নয়। নন্দু এবং মঞ্জরীর প্রেমের অস্ফুট সমীকরণ ফুটে ওঠে একটি দৃশ্যে—সিনেমা হলে দেখা করতে আসা মঞ্জরীকে আইসক্রিম খাওয়ায় নন্দু। কিন্তু একাই সবটুকু গোগ্রাসে খেয়ে নিয়ে সে জিজ্ঞেস করে, ‘‘আর একটা হবে?’’ নন্দুর হাতে ধরা চামচ রয়ে যায় আড়ালেই! বাড়ি ছেড়ে যখন মঞ্জরী অজানার উদ্দেশে পাড়ি দেয়, তখন ‘সাইরাট’ ছবির দৃশ্য মনে পড়বে। এই ধরনের চরিত্রে রিঙ্কু যে অপ্রতিরোধ্য, তা ফের প্রমাণিত। দেলজ়াদও যোগ্য সঙ্গত করেছেন। ছবিতে ভাবনার খোরাক ছড়িয়ে রেখেছেন নির্দেশক।

অভিষেকের ছবিতে যতটা নৈর্ব্যক্তিকতা রয়েছে, ঠিক তার বিপরীত পথে হেঁটেছেন অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি। তাঁর ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (প্রদীপ)। মুম্বইয়ের এক রেডিমেড জামাকাপড়ের দোকানে কাজ করে সে। মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা প্রদীপের জীবনে নেই নারীর সংসর্গ, শরীরী স্পর্শ। দোকানের ম্যানেকুইন হয়ে ওঠে তার প্রেমিকার পরিবর্ত। শেষে প্রদীপের বলা সংলাপগুলি ছবির ভাষাই যেন মাটি করে দেয়। গোটা ছবিজুড়ে দর্শক বুঝতে পারেন, কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে। তা স্পষ্ট বলে দেওয়ায় চিত্রনাট্যকারদের দৈন্য প্রকাশ পায়। প্রাপ্তি শুধু অভিষেকের অভিনয়।

সাকেত চৌধুরীর ছবিতে অপেক্ষাকৃত চেনা মুখেদের ভিড়। কোটিপতি অর্জুন মাথুরের (নিখিল দ্বিবেদী) স্ত্রী তনু (জ়োয়া হুসেন)। কুণাল কপূর (মানব) এবং পালোমি ঘোষ (নাতাশা) আর এক দম্পতি। অর্জুনের সঙ্গে নাতাশার পরকীয়া সম্পর্ক সন্দেহ করে তনু আলাপ করে মানবের সঙ্গে। তাদের চোখ দিয়ে দর্শক চেনেন অর্জুন এবং নাতাশাকে। মানবের সঙ্গে মিশে তনুও আবিষ্কার করে নিজেকে। চেনা বিষয়। তবু কুণাল, জ়োয়া, পালোমির অভিনয়গুণে দেখতে ভাল লাগে।

গল্প বলার নিরিখে নেটফ্লিক্সের অন্য অ্যান্থলজির চেয়ে এগিয়ে থাকবে ‘অনকহি কহানিয়া’।

অন্য বিষয়গুলি:

Movie Review Netflix Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy