Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Cinema

যুদ্ধ-পিপাসু ঘরের লোকের সঙ্গেই আসল যুদ্ধ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সেই মঞ্চে দুই তরুণ সৈনিক। আর তাদের দুঃসাহসী এক অভিযান। এই নিয়েই ছবির গল্প বুনেছেন মেন্ডিস।

সীমন্তিনী গুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

সোজাসাপটা কাহিনি। টানটান উত্তেজনা। আর দুর্দান্ত ক্যামেরার কাজ। এটাই স্যাম মেন্ডিসের নতুন ছবি ‘নাইন্টিন সেভেন্টিন’-এর ইউএসপি।

তারিখ— ৬ এপ্রিল, ১৯১৭। স্থান— বেলজিয়াম, উত্তর-পূর্ব ফ্রান্স, লুক্সেমবুর্গ এবং পশ্চিম জার্মানি মিলিয়ে ইউরোপের একটা এলাকা, যার পোশাকি নাম ‘ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সেই মঞ্চে দুই তরুণ সৈনিক। আর তাদের দুঃসাহসী এক অভিযান। এই নিয়েই ছবির গল্প বুনেছেন মেন্ডিস।

ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে জার্মানি পিছু হটছে, বীরদর্পে এগিয়ে চলেছে ব্রিটিশ সেনা, এই দিয়ে ছবি শুরু। কিন্তু অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা যায় যে, এটা আসলে জার্মানদের একটা চাল। তারা আদপেই পিছু হটছে না। বরং তাদের শক্ত ঘাঁটি ‘হিন্ডেনবুর্গ লাইন’-এর আড়ালে ব্রিটিশ সেনার ডেভনশায়ার রেজিমেন্টের জন্য ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করছে। সেই ফাঁদে পা দিলে ১৬০০ সেনার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। জার্মানদের সেই পরিকল্পনা জানতে পেরে ব্রিটিশ কমান্ডার এরিনমোর (অনেক দিন বাদে পর্দায় ব্রিটিশ অভিনেতা কলিন ফার্থ) এক সৈনিককে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। যে আগেভাগে গিয়ে ব্রিটিশ রেজিমেন্টের কর্নেল ম্যাকেনজ়িকে (বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ) সাবধান করে দেবে। এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য এরিনমোর বেছে নেয় ল্যান্স কর্পোরাল ব্লেককে (ডিন চার্লস চ্যাপম্যান), যার ভাই সেই ব্রিটিশ রেজিমেন্টেরই এক সদস্য। শুধু সেনাবাহিনীর প্রতি দায়বদ্ধতা নয়, ভাইকে বাঁচানোর তাড়াও ব্লেককে ঠিক সময়ে ডেভনশায়ার রেজিমেন্টের কাছে পৌঁছে দেবে, আশা এরিনমোরের। মাত্র এক জন সঙ্গী, আর এক ল্যান্স-কর্পোরাল স্কোফিল্ডকে (জর্জ ম্যাকে) নিয়ে যাত্রা শুরু করে ব্লেক।

নাইন্টিন সেভেন্টিন
পরিচালনা: স্যাম মেন্ডিস
অভিনয়: কলিন, বেনেডিক্ট,
ডিন, জর্জ, রিচার্ড
৭.৫/১০

পরের পৌনে দু’ঘণ্টা শুধুই বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলার চেষ্টা। এবং প্রতি মুহূর্তে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মারণ অভিজ্ঞতা। সংঘাতে-জীর্ণ একুশ শতকের এই পৃথিবীকে মেন্ডিস মনে করিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা। মনে করিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধ শুধু শত্রুর সঙ্গে নয়। আসল যুদ্ধ যুদ্ধ-পিপাসু ঘরের লোকের সঙ্গেও।

এই যাত্রার পুরো সময়টাই ক্যামেরা খুব কাছ থেকে দুই সেনাকে অনুসরণ করে চলে। এবং এর ফলে সেই যাত্রার শরিক হয়ে ওঠেন দর্শকও। ছবিটিতে ‘সিঙ্গল কনটিনিউয়াস শট’ পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে মনে হয় ক্যামেরা যেন সমানে চলছে, কোনও বিরতি নেই। এই অসামান্য ক্যামেরা ও সম্পাদনার জন্য কুর্নিশ জানাতেই হবে সিনেম্যাটোগ্রাফার রজার ডিকিন্স এবং সম্পাদক লি স্মিথকে।

শিল্প ও শৈলীর এই মিশেলই ছবিটিকে দু’টি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা ছবি ও সেরা নির্দেশক) এবং ১০টি অস্কারের মনোনয়ন এনে দিয়েছে। চিত্র সমালোচকেরা বলছেন, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি অস্কারের মঞ্চে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে স্যাম মেন্ডিসের ছবি আর টড ফিলিপ্সের ‘জোকার’-এর মধ্যেই।

অন্য বিষয়গুলি:

cinema Review Gujrat Lions Amitabh Dayal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy