Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সৌন্দর্যের বাস কোথায়?

একেবারে সাদামাঠা একটা গল্প বলেছেন অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। একটাই প্যাঁচ, যেখানে কনজিউমারিজ়মের দশচক্রে ভগবান ভূত হয়ে যান, সেখানে অলকেশের তো স্রেফ চুল খোয়া গিয়েছে!

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

কোনও অভিনেতা প্রতি ইনিং‌সেই যদি চার-ছয় হাঁকান, তা হলে মাঝে মাঝে মুশকিল হয়। আসলে প্রত্যেক বার প্রশংসা করার জন্য নিত্যনতুন ভাষার জোগান দিতে সমস্যা হয়। ঋত্বিক চক্রবর্তীর ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা বার বার হচ্ছে। তিনি অভিনয় করেন না, বিহেভ করেন। যে চরিত্রটা করতে হয়, ঠিক সেটাই হয়ে যান। ‘টেকো’ ছবিতে কখনও তিনি আলু, কখনও বা অলকেশ। রোম্যান্টিক থেকে গোঁয়ার, সব রকমের পরত অনায়াসে মেখে নিয়েছেন ঋত্বিক। গোটা ছবির শুরু থেকে শেষ তিনি একা টেনেছেন।

একেবারে সাদামাঠা একটা গল্প বলেছেন অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। একটাই প্যাঁচ, যেখানে কনজিউমারিজ়মের দশচক্রে ভগবান ভূত হয়ে যান, সেখানে অলকেশের তো স্রেফ চুল খোয়া গিয়েছে! বিজ্ঞাপনের ঢক্কানিনাদে তেল মাখার ফল। অনেকের কাছে এলেবেলে সমস্যা হলেও, অলকেশ মরমে মরে যায়। তার বিয়ে ভেঙে যায় মীনার (শ্রাবন্তী) সঙ্গে। চুল ফিরে আসবে না জেনেও যাদের জন্য এই চুলোচুলি, তাদের শাস্তির দাবিতে উঠেপড়ে লাগে অলকেশ।

সৌন্দর্যের বাস কোথায়? চেহারায় না কি অন্তরে? এই দ্বন্দ্ব চিরকালীন। মুখে যতই উদারতার বুলি আওড়াই, সব ঝোঁক আসলে দেখনদারিতেই। মানবিকতাও সেখানে ঠুনকো। এই কনসেপ্টেই সম্প্রতি দু’টি ছবি হয়েছে হিন্দিতে। ‘বালা’, ‘উজড়া চমন’-এর সঙ্গে ‘টেকো’র তুলনা না করাই ভাল। তিনটি ছবির থিম ‘টাক’ হলেও, এখানে বিজ্ঞাপনের আগ্রাসী ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। যদিও কাহিনির শেষটা আগাম আঁচ করে নেওয়া যায়। ঋত্বিক-শ্রাবন্তী কিন্তু রোম্যান্টিক জুটি হিসেবে বেশ ভাল। শ্রাবন্তী অল্প পরিসরে ভাল কাজ করেছেন।

টেকো
পরিচালনা: অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়
অভিনয়: ঋত্বিক চক্রবর্তী,
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
৬/১০

গল্প বলতে গিয়ে অভিমন্যু একাধিক জায়গায় সুর চড়িয়েছেন। কিছু জায়গা দুর্বলও। কোনও পণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা এত সহজে পিছিয়ে আসে না। অভিযোগের ভিত্তিতে পণ্যের গুণমান পরীক্ষার প্রসঙ্গও এল না। সমাধানের রাস্তাটাও যেন অতিরিক্ত মসৃণ। কনজ়িউমারিজ়মের আগ্রাসী দিকটায় কি আর একটু নজর দেওয়া যেত না? পরিচালক হয়তো বিষয়টি সিরিয়াস করতে চাননি। সেই সঙ্গে পরিবেশনে একটু মন দিলে ‘টেকো’ আরও মনোগ্রাহী ছবি হয়ে উঠতে পারত।

অন্য বিষয়গুলি:

Cinema Review Teko
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE