অভিষেক
মহিলা অনুরাগীদের নয়নের মণি তিনি বরাবরই ছিলেন। তবে ‘লেজেন্ড’ বাবার সঙ্গে তুলনা তাঁর কেরিয়ারে সব সময়েই একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে ঝুলে রয়েছে। তবু ফিল্ডে ব্যাটিং চালিয়ে গিয়েছেন অভিষেক বচ্চন। দু’বছরের বিরতি নিয়ে ২০১৮ সালে অনুরাগ কাশ্যপের ‘মনমর্জ়িয়া’ দিয়ে ময়দানে ফিরেছিলেন অমিতাভ-পুত্র। ছবি হিট না হলেও অভিষেকের অভিনয় প্রশংসিত। ফের তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন আগ্রহ। বিশেষত, পরপর যে ক’টি প্রজেক্টে তাঁকে মুখ্য ভূমিকা দেওয়া হয়েছে, তার কোনওটিই কম ওজনের নয়। বলিউডের যে পিচে অক্ষয়কুমার, আয়ুষ্মান খুরানা, ভিকি কৌশল দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে অভিষেকের উপরে কেন ভরসা রাখছেন প্রযোজকেরা?
সুজয় ঘোষের কন্যা দিয়া অন্নপূর্ণা ঘোষের প্রথম ছবি ‘বব বিশ্বাস’-এ মুখ্য চরিত্রে অভিষেক। যে ছবির প্রযোজনায় শাহরুখ খান। হাতে রয়েছে অনুরাগ বসুর ‘লুডো’, অজয় দেবগণের প্রযোজনায় ‘দ্য বিগ বুল’। এই ছবিতে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত বাস্তব চরিত্র হর্ষদ মেহতার ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। আর রয়েছে অ্যামাজ়ন প্রাইমের হিট সিরিজ় ‘ব্রিদ টু’।
স্টারের সংখ্যা কমেছে
ইন্ডাস্ট্রির মতে, মুম্বইয়ে নির্ভরযোগ্য বা ব্যাঙ্কেবল স্টারের সংখ্যা কমেছে। সিনিয়রদের মধ্যে অক্ষয় এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে আয়ুষ্মানই শুধু পরপর হিট দিচ্ছেন। কিন্তু বলিউড এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি, যেখানে এই ক’জনকে নিয়ে সারা বছর ছবি বানালে চলে না। তাই অন্য অভিনেতাদেরও সামনে আনার খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন: সোনার সংসারে টলি তারকাদের মেলা, দেখুন ফোটো অ্যালবাম
২০০০ সালে ‘রিফিউজি’ দিয়ে বলিউডে এসেছিলেন অভিষেক। একই বছরে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন হৃতিক রোশন। বছর কুড়ি পরেও হৃতিকের সুপারস্টার ট্যাগ নিয়ে সংশয় নেই। তবে কেরিয়ারে ফ্লপ ছবির সংখ্যা বেশি হওয়ায়, অভিষেকের সেই ট্যাগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। যদিও অভিনেতা হিসেবে অভিষেক কখনওই খারাপ ছিলেন না। প্রমাণ, মণি রত্নমের ‘যুবা’, ‘গুরু’ এবং ‘রাবণ’।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিনেতা হিসেবে আরও পরিণত হয়েছেন অভিষেক। কনটেন্ট-নির্ভর হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে নায়কের সংজ্ঞা বদলেছে। তাই অভিষেকের হাতে এখন যে ছবিগুলি রয়েছে, তাতে চরিত্র হয়ে উঠতে হবে তাঁকে। ‘স্টার’ অভিষেক নয়, বরং তাঁর অভিনয় ক্ষমতার উপরে আস্থা রাখছেন প্রযোজকেরা।
নেটফ্লিক্স-অ্যামাজ়ন প্রভাব
মুম্বইয়ে ছবির ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি প্যারালাল ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে জমি শক্ত করছে নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজ়ন। এই দু’টি প্ল্যাটফর্ম তাদের সিরিজ় বা সিনেমার জন্য কিন্তু স্টার খোঁজে না। তাই অ্যামাজ়ন প্রাইমের ‘ব্রিদ’-এ অভিষেকের কাস্টিং, তাঁর ছবি পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে বলে ইন্ডাস্ট্রির একাংশ মনে করছে। এই প্রসঙ্গে সেফ আলি খানের দৃষ্টান্তটি দেখা যেতে পারে। তাঁর কেরিয়ারে নেটফ্লিক্সের ‘সেক্রেড গেমস’ নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক। সেফের সোলো রিলিজ় ‘লাল কাপ্তান’ বা ‘জওয়ানি জানেমান’ বক্স অফিস সফল না হলেও, তাঁর হাতে ছবি এবং সিরিজ়, দুটোই রয়েছে।
নেগেটিভ মেকওভার
‘বব বিশ্বাস’-এ অভিষেকের চরিত্র পুরোপুরি নেগেটিভ না হলেও, ধূসর যে হবে, তা হলফ করে বলা যায়। ‘ব্রিদ’ সিজ়ন ওয়ানের একটি মুখ্য চরিত্র (অমিত সাধ) সিজ়ন টু-তেও রয়েছে। অমিতের চরিত্রটি পুলিশের। তাই ধরে নেওয়া যায়, এই সিজ়নে ভিলেন হবেন অভিষেক। ‘ব্লাফমাস্টার’, ‘বান্টি অউর বাবলি’ ছবিতে তাঁর ‘কন ম্যান’ ইমেজ দর্শকের পছন্দ হয়েছিল। রোম্যান্টিক হিরোর চেয়েও ধূসর চরিত্রে তিনি বেশি প্রশংসা পেয়েছেন। তাই নেগেটিভ অবতারে অভিষেককে দেখা দর্শকের কাছে নতুন আগ্রহ তৈরি করবে।
পারস্পরিক সম্পর্ক
শাহরুখ খান এবং অজয় দেবগণ, দু’জনের সঙ্গেই ব্যক্তিগত স্তরে বচ্চন পরিবার এবং অভিষেক বচ্চনের ভাল সম্পর্ক বলে শোনা যায়। তাই ছবি পাওয়ার ক্ষেত্রে খানিকটা হলেও এই সমীকরণ কাজ করে বইকি।
বলিউডে তারকার জন্ম হয়। আবার তারা খসে পড়ে। দ্বিতীয় সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফিরেও এসেছেন অনেকে। যেমন তাঁর বাবা অমিতাভ বচ্চনের কামব্যাক দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। অভিষেক তাঁর হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে পারেন কি না, সেটাই তাঁর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ এখন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy