তরুণ মজুমদারকে নিয়ে লিখলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
আমি দেশের বাইরে। সেখানে বসেই খবর পেলাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তরুণ মজুমদার আর নেই। শুনেই ভেঙে পড়েছি। ভেঙে পড়ার মতোই খবর। চারপাশটা কেমন যেমন ফাঁকা লাগছে! মনে হচ্ছে, আমরা শেষ। আমাদের বাংলা ছবির দুনিয়ার ভাঁড়ার যেন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। যে সমস্ত পরিচালকদের নিয়ে বাংলা ছবির দুনিয়া, আমরা, গর্বিত তাঁদের মধ্যে অন্যতম তরুণ মজুমদার। আমার ‘তনু জেঠু’।
টলিউড বরাবরই রত্নগর্ভা। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, অজয় কর, তপন সিংহ প্রকৃতির নিয়মে একটা সময়ের পরে আর ‘নেই’। আমাদের শেষ 'মহীরুহ' তরুণ মজুমদার। তিনিও চোখ বুজলেন। আমরা আবারও অভিভাবকহীন। তনু জেঠু আমার গুরু। ওঁকে আমি সেই আসনেই বসিয়েছিলাম। বয়স হয়েছিল। অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন। তবুও বটগাছের মতোই আমাদের মাথার উপরে ছিলেন তো!
প্রায় সবাই জানেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় ‘পথভোলা’ আর ‘আপন আমার আপন’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। যেটা জানেন না, তনু জেঠুর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ হিন্দি ছবি ‘রাহগীর’-এ। তখন আমি সাত কি আট। আমার বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ছোটবেলা’টা আমি করেছিলাম। ছবিটি ১৯৬৩ সালে তনু জেঠুরই কালজয়ী ছবি ‘পলাতক’-এর হিন্দি রূপান্তর। এই ছবি করতে গিয়েই ওঁর কাছে অভিনয় শিখেছি। আমাদের প্রজন্মের প্রতি 'তনু জেঠু'র অফুরন্ত স্নেহ। একই ভাবে কাজের সময় কড়া শিক্ষক। আজ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যা, যেটুকু, সবটাই তরুণ মজুমদারের অভিনয় শিক্ষার জোরে।
বেশ কিছু দিন ধরেই ভুগছিলেন বর্ষীয়াণ পরিচালক। নিয়মিত ওঁর শারীরিক অবস্থার খবর রাখতাম। আর ইচ্ছে হলেই ওঁর কাছে পৌঁছতে পারব না। কিছু জিজ্ঞেস করতেও পারব না। এ বার আমায় শিখতে হবে 'তনু জেঠু'র ছবি দেখে। ওঁর কাজ বাংলা এবং ভারতীয় সিনেমার গর্ব। ওঁকে কেউ ভুলতে পারবেন না। ওঁর কাজকেও না। 'তনু জেঠু' বরাবর দু'হাত ভরে দিয়েছে আমাদের। আমাদের গড়েপিটে অভিনেতা বানিয়েছে। এ বার তুমি বিশ্রাম নাও। আমি জানি, তুমি যেখানেই থাকবে চারপাশ ‘আলো’ করে রাখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy