(বাঁ দিকে) শ্রীকান্ত মোহতা, রানা সরকার (ডান দিকে) ছবি: ফাইল চিত্র।
টানা ন’দিনেরও বেশি সময় ধরে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়-ফেডারেশন টানাপড়েন চলছে। নিয়ম ভেঙে বাংলাদেশে শুটিং, কলকাতায় শুটিংয়ের কাজের টাকা বকেয়া অভিযোগে প্রথমে ডিরেক্টর্স গিল্ড তাঁকে তিন মাসের কর্মবিরতির নির্দেশ দেয়। যার জেরে এসভিএফের পুজোর ছবি পরিচালনা হাতছাড়া হয় তাঁর। প্রযোজনা সংস্থা ঘোষণা করে, ফেডারেশন এবং ডিরেক্টর্স গিল্ডের নির্দেশ মেনে রাহুলকে তাঁরা পরিচালক হিসেবে রাখছেন না। তিনি ছবির সৃজনশীল পরিচালক। ছবি পরিচালনার দায়িত্বে সৌমিক হালদার। এর পরেই রাহুল তথ্যপ্রমাণ দিয়ে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভুল। সমস্তটা খতিয়ে দেখে সে কথা স্বীকার করে ডিরেক্টর্স গিল্ড। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পরিচালককে কর্মবিরতি থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে তারা। বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। রাহুল এর পর পুজোর ছবি দিয়েই পরিচালনায় ফিরতে চাইলে বেঁকে বসে ফেডারেশন। কলাকুশলীরা জানিয়ে দেন, তাঁরা পরিচালক রাহুলের সঙ্গে কাজ করবেন না। এতে অপমানিত বোধ করেন টলিউডের বাকি পরিচালকেরা। যার প্রতিবাদে ২৯ জুলাই, সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য শুটিং বন্ধের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
এই চাপানউতরের মধ্যেই টলিউডের অন্দরে উঠেছে একটি প্রশ্ন, ফেডারেশনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ কি বড় প্রযোজনা সংস্থার সৌজন্যে? কারণ, এর আগে পরিচালক অনীক দত্ত, পারমিতা মুন্সি, স্নেহাশিস চক্রবর্তী-সহ বেশ কিছু পরিচালক, প্রযোজক ফেডারেশনের নিয়মের গেরোয় ফেঁসেছেন। সে কথায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সায় জানিয়েছে ছোট পর্দার প্রযোজক সংগঠনও। সেই সময় কেউ কিন্তু টুঁ শব্দ করেননি! একই প্রশ্ন উস্কে দিলেন প্রযোজক রানা সরকার। নাম না করে তিনি বিঁধেছেন প্রযোজনা সংস্থার অন্যতম কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে। তাঁর কথায়, “সমস্যার সমাধানে আন্দোলন হোক। কিন্তু, কোনও ভাবে এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য কর্তার ইগো স্যাটিসফেকশন নয় তো?”
সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল প্রযোজকের সঙ্গে। কেন এমন কথা মনে আসছে তাঁর?
রানার যুক্তি, “যে যে সমস্যা আজ হচ্ছে, সেগুলো সব সময় ছিল। সে সব নিয়ে গত ১২ বছর আমি এবং আরও কিছু প্রযোজক লড়াই করেছি। তখন কাউকে পাশে পাইনি। সে সময়ে প্রযোজনা সংস্থার কর্তাও পাশে এসে দাঁড়াননি।” সেই জায়গা থেকেই তাঁর এই ভাবনা। প্রযোজকের দাবি, এখন কর্তার মান রাখতে আজ যাঁরা প্রতিবাদে মুখর, আগামীতে তাঁরাই আবার ফের নীরব হয়ে যাবেন। সমস্যা থেকেই যাবে। তিনি আরও বলেছেন, “এত বড় আন্দোলনের একমাত্র ফল দাঁড়াবে, একজন পরিচালককে তাঁর পদ ফিরিয়ে দেওয়া। বাকি ১০০ জন পরিচালকের সমস্যা কেউ শুনবেনই না! সেই সব সমস্যার সমাধান অধরা থেকে যাবে।”
এখানেই শেষ নয়। রানার এ-ও দাবি, খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, যাঁরা প্রযোজক-পরিচালক, কেবল তাঁরাই এই প্রতিবাদে শামিল। বাকিরা কোনও না কোনও ভাবে প্রথম সারির প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। যে সমস্ত পরিচালক বা কলাকুশলী ‘দিন আনি দিন খাই’-এর দলে, তাঁরা কিন্তু খুশি নন। পাশাপাশি, ধারাবাহিক-সহ সব মাধ্যমের পরিচালকেরাই রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুটিং করেছেন। এই জায়গা থেকেই ‘জাতিস্মর’ প্রযোজকের প্রশ্ন, “এঁরা কি আগে থেকে জানতেন, এমন কিছু ঘটবেই? তাই আগাম শুটিং সারলেন?”
তা হলে সঠিক সমাধান কী? জবাবে রানার নিদান, “এই আন্দোলনের তীব্রতাকে কাজে লাগিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে নিন। তাতে কর্তারও লাভ। পুরো ইন্ডাস্ট্রির সুদিন। একটি দাবিপূরণেই এই আন্দোলন শেষ হয়ে যেতে দেবেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy