Advertisement
E-Paper

চার বছর পরে রাজীব পদ পেতেই তৃণমূলের অন্দরে তোলপাড়

দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বিভিন্ন জেলায় দলের পর্যবেক্ষক ও রাজ্য মুখপাত্র হয়ে কাজ করার পরে প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বার সরকারি পদে ফিরিয়ে আনা হল।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৪
Share
Save

দল থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন ছ’মাস। বিজেপিতে যোগ দিয়ে ডোমজুড় থেকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। সেই নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার কয়েক মাস পরেই ফিরে এসেছিলেন তৃণমূলে। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বিভিন্ন জেলায় দলের পর্যবেক্ষক ও রাজ্য মুখপাত্র হয়ে কাজ করার পরে প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বার সরকারি পদে ফিরিয়ে আনা হল। তাঁকে হাওড়া জেলা পরিষদের পরামর্শদাতা বা মেন্টরের পদে বসানো হয়েছে। এ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই হাওড়া জেলা তৃণমূলের অন্দরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।

একটি মহলের মতে, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রায় নেতৃত্বহীন হাওড়ায় দলের যোগ্য নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভূমিপুত্র রাজীবকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

জেলা পরিষদে পরামর্শদাতা নিয়োগ নতুন বিষয় নয়। হাওড়াতেই এক সময়ে ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষকে পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। পরে এই পদকে অবলুপ্ত করে দেওয়া হয়। কয়েক বছর পরে ফের ওই পদে পরামর্শদাতা নিয়োগের ঘোষণা করে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রমোন্নয়ন দফতর।

ওই পদে রাজীবকে কেন? হাওড়া জেলা পরিষদে দীর্ঘদিন সহ সভাধিপতির পদ সামলানো তৃণমূলের প্রবীণ নেতা অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার মনে করেছে, জেলা পরিষদের কাজের জন্য পরামর্শের দরকার। তাই তাঁকে নিয়োগ করেছে। সরকার যাঁকে মনোনীত করেছে, তাঁকে আমরা স্বাগত জানাব।’’ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে জেলা পরিষদের লাগাতার ব্যর্থতাই কি এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কারণ? অজয়ের দাবি, ‘‘ব্যর্থতা কেন? এই ধরনের পরামর্শদাতা নিয়োগ নতুন নয়। ওঁকে সম্মান জানিয়ে ওই পদ দেওয়া হয়েছে। আমরা আলোচনা করে কাজ করব। তা ছাড়া পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নিজস্ব বিধি মেনে সকলকে চলতে হবে।’’

প্রায় একই বক্তব্য, রাজীব বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘এটা দল ও সরকার মনে করেছে, তাই করেছে। ২০২৬ এর ভোটকে লক্ষ্য রেখে এই নিয়োগ কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। পরামর্শদাতা নিয়োগ নতুন
বিষয় নয়। আমিও এক সময়ে ওই পদে ছিলাম।’’

তৃণমূলের একটা অংশের বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরে হাওড়া জেলা পরিষদের অর্থ কমিশনের টাকা খরচে টানা ব্যর্থতার জন্য রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরে প্রথম স্থান থেকে ২৯ নম্বরে অবনমনের কারণে রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের অন্য অংশ অবশ্য বর্তমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দল পরিচালনায় ঢিলেঢালা মনোভাবকেই সামনে এনেছেন।

তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার মতে, ‘‘এক সময়ে দক্ষ সংগঠক রাজীব হাওড়ার গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেছিলেন। আর কল্যাণ ঘোষ নিজের ডোমজুড় কেন্দ্র নিয়ে ব্যস্ত থাকায় হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রে সংগঠনের কাজ ঢিলেঢালা
হয়ে গিয়েছে।’’

এ প্রসঙ্গে রাজীব বলছেন, ‘‘আমি চিরকালই দিদির সৈনিক। দলের কর্মী। বিগত দিনে প্রশাসনিক ও দলীয় কাজে যখন যা দায়িত্ব দিয়েছেন দিদি, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। হাওড়ার উন্নয়ন আমার পাখির চোখ। আগামী দিনের দিদির নির্দেশ মতো উন্নয়নে ব্রতী থাকব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rajib Banerjee TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}