রাজ কুন্দ্রা
মাত্র দেড় বছরে পর্ন ব্যবসা থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন রাজ কুন্দ্রা। তদন্তে নেমে এমনই তথ্য জানতে পেরেছে মুম্বই প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রশাসনের দাবি, লকডাউন শাপে বর হয়েছিল অভিযুক্তের কাছে। ওই সময়েই রাজের পর্নোগ্রাফির ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। নিজেকে আড়ালে রাখতে প্রচুর মাথা খাটিয়েছিলেন রাজ। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে রাজ ‘আর্মস প্রাইম মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা খোলেন। তার ছ’মাস পরেই সংস্থাটি ‘হটশট’ নামে একটি মুঠোফোন অ্যাপ তৈরি করে। পরে এই অ্যাপটি পুলিশের খাতায় ‘পর্ন অ্যাপ’ নামে চিহ্নিত হতেই পর্ন ভিডিয়ো পাঠানোর পদ্ধতি বদলে ফেলেন রাজ। সন্দেহ এড়াতে উইট্রান্সফারের মাধ্যমে ভিডিয়ো পাঠাতে থাকেন।
যুগ্ম নগরপাল (অপরাধ শাখা) মিলিন্দ ভরাম্বে আরও জানিয়েছেন, পুরো ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন রাজের আমেরিকাবাসী শ্যালক প্রদীপ বক্সী। শ্যালকের লন্ডনের পর্নোগ্রাফি সংস্থা কেনরিন লিমিটেডকে সাহায্য করতেই দেশে পর্ন হাব খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্ত। পুলিশের নজরে পড়লে কী করে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেবেন, তার জন্য ‘বলি ফেম’ নামে আরও একটি পরিকল্পনা ছিল রাজের।
কী ভাবে রাজের এই ব্যবসা নজরে এল প্রশাসনের? প্রকৃত ঘটনাই বা কী? রইল বিস্তারিত তথ্য--
কী ভাবে প্রকাশ্যে আসে রাজ কুন্দ্রার কু-কীর্তি?
মুম্বই পুলিশের কথায়, ২০২১-এর ৪ ফেব্রুয়ারি জোর করে পর্ন ছবিতে নামানোর অভিযোগ জানান এক মহিলা। এর পরেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। প্রশাসন সূত্র খবর, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বলিউডে অভিনয়ের জন্য আসা উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেত্রীদের ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের প্রতিশ্রুতি দিতেন রাজ এবং তাঁর সংস্থা। শ্যুটের দিন চিত্রনাট্যে বদলে ভয় দেখিয়ে জোর করে তাঁদের নগ্ন করা হত। আক্রান্তরা প্রত্যাখ্যান করলে তাঁদের শ্যুটের যাবতীয় খরচ বহনের হুমকি দেওয়া হত।
অভিযুক্তদের গ্রেফতারির পর জানা যায়, ছবি তৈরির পর তার বিজ্ঞাপনও নেটমাধ্যমে প্রচার করতে হত অভিনেত্রীদেরই। কারণ, ভারতে পর্ন ছবি এখনও বেআইনি। তাই সরাসরি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের প্রচার সম্ভব নয়। পুলিশের দাবি, যদিও অভিনেত্রীরা যে ভাবে প্রচার চালাতেন সেটিও বেআইনি।
কোথায়, কী ভাবে শ্যুটিং হত?
পুলিশের দাবি, মুম্বইয়ের উপকণ্ঠে মাড আইল্যান্ডের ভাড়া নেওয়া একটি বাংলোয় দিনভর শুটিং হত। পাঁচ থেকে বড় জোর ছ’জন কর্মী উপস্থিত থাকতেন। তাঁরাই পরিচালনা করতেন। সংলাপ লিখতেন। শ্যুটিংয়ের জায়গা বাছতেন। প্রযুক্তির দিকটিও দেখতেন। প্রশাসনের কথায়, রাজের আনা নতুন অ্যাপ ‘হটশট’ লকডাউনের সময় প্রচণ্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কয়েক মাসে যার গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল কয়েক লক্ষ!
রাজের ভূমিকা কী ছিল?
পুলিশের নজর দু’টি দিকে ছিল। যারা এই ধরনের ছবি বানাতেন, তাঁদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছিল প্রশাসন। যাঁরা ক্লিপগুলি সম্প্রচার করতেন, তাঁদের খোঁজ চলছিল। এর মধ্যে কয়েকটি প্রযোজনা সংস্থা দেশের বাইরে থেকে ছবি সম্প্রচার করত বলে খবর।
এই রকমই একটি প্রযোজনা সংস্থার কার্যনির্বাহী অফিসার উমেশ কামাত ইতিমধ্যেই গ্রেফতার। ব্রিটেনের এই প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযোগ, তিনি ভারতে তৈরি পর্ন ছবি নিজের অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতেন। এ বিষয়ে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কামাত দেশের বাইরে বসে পর্ন ছবি ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করতেন।
কুন্দ্রার কত আয়?
তদন্তে নেমে মুম্বই অপরাধ শাখা জানতে পেরেছে, কুন্দ্রা প্রথম দিকে অ্যাপ থেকে প্রতিদিন ২-৩ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। লকডউনে সেই আয় বেড়ে হয়েছিল ৬-৮ লক্ষ টাকা। যুগ্ম নগরপাল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাজের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে সাত কোটি টাকা আটক করেছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy