নিজের এলেমে, নিজের মতো করে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন পরীমণি।
কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর ঢাকার সংবাদমাধ্যমকে পরীমণি জানিয়েছেন এত দিন তিনি দুঃস্বপ্ন দেখছিলেন, এ বার কাজে মন দেবেন। তিনি বললেন, ‘‘দুঃস্বপ্নের ডিউরেশনটা একটু লং। ২৭ দিন হয়ে গেছে, টেরই পাইনি। ২৭ দিন ঘুমে ছিলাম, এটাকে দুঃস্বপ্ন মনে করছি।’’
গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পরীমণি জানিয়েছেন তাঁর সমস্ত অনুভূতি হারিয়ে গেছে। এত দিন স্বাভাবিক জীবনে তিনি ছিলেন না। তবে ওই সময়েই তিনি জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। তিনি দেখেছেন তাঁর গ্রেফতারের পর বাংলাদেশের কিছু সংখ্যক মানুষ আনন্দে নাচছিলেন। আবার তাঁর মুক্তির পরেই সেই মানুষের কয়েক জন পরীমণিকে ‘লাভ ইউ’, ‘মিস ইউ’ বলে লিখতে শুরু করেছেন। এই ঠুনকো ভালবাসা তিনি চান না। পরীমণির দাবি, যে মানুষেরা তাঁর মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছিলেন তারাই তাঁর প্রকৃত ভালবাসার মানুষ। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি প্রত্যেককে প্রণাম জানিয়েছেন।
পরীমণি হতাশ। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেই তাঁর কাছে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ আসে। কোথায় যাবেন তিনি? ঢাকার সংবাদমাধ্যমকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘এখন কি তা হলে আমার বসবাসের অধীকার পর্যন্ত কেড়ে নিচ্ছে ওরা? ওরা যা চেয়েছিল, তা-ই কি হচ্ছে? আমি কি তা হলে ঢাকা ছেড়ে চলে যাব, নাকি দেশ ছেড়ে চলে যাব?।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘আমি তো খুন করিনি বা দেশ ছেড়ে পালিয়েও যাচ্ছি না। তবুও আমার সঙ্গে এ রকম ব্যবহার করা হচ্ছে কেন?’’ হতাশ পরীমণি জানান, তাঁর বাড়ির নীচে সারাক্ষণ ক্যামেরা নিয়ে সাংবাদিকরা দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ পুলিশ চলে আসছে। ক্লান্তি নিয়ে তিনি বললেন, “এই বাড়িতে শুধু আমি থাকি না। অন্য অনেক পরিবার থাকেন। তাঁদের এ ভাবে নিয়ত বিরক্ত করার অধিকার কারওর নেই। এ ভাবে চারদিক থেকে আমায় ঘিরে ধরা হচ্ছে! আমি আর পারছি না!”
পরীমণি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেই তাঁর কাছে একটি প্রশ্নের উত্তর বার বার চাওয়া হয়েছে। কেন তিনি হাতে লিখেছিলেন, ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’? কারাগারে মেহেন্দি বা পেলেন কী করে? “যে দিন ছুটি পেলাম সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে যখন গেটের ওখানে এসে বসলাম, জানলাম আমার খালু আসছে। দেরি হচ্ছিল। বসে থাকতে থাকতে একটা বাচ্চা আসে। তার কাছেই মেহেন্দি ছিল। তার থেকে নিয়েছি। বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতে 'ডোন্ট লাভ মি বিচ' লিখেছি“, বললেন পরীমণি।
আর কিছুকে ভয় পান না তিনি। বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) অভিযান চালিয়েছিল অভিনেত্রীর বাড়িতে। তাঁর বাড়িতে বিপুল পরিমাণে বিদেশি মদ রয়েছে বলে খবর পেয়েছিল তারা। পরীমণির বাড়িতে অভিযান চালাতেই লাইভে এসে নিজের আতঙ্কের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সংবাদমাধ্যমের খবর, অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে প্রায় ৩০টি বিদেশি মদের বোতল পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও এলএসডি নেশা করার জন্য ব্লটিং কাগজ এবং কিছু পরিমাণ মাদক উদ্ধার করেছে তারা। পরীমণির বাড়িতে প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাসি চালানোর পর তাঁকে বাড়ি থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল র্যাব। তবুও তাঁকে দমিয়ে রাখা যায়নি। কলঙ্কের তোয়াক্কা করেন না তিনি।
অল্প বয়সের সুন্দরী মেয়ে ঢাকায় এসে অভিনয় করে সকলকে চমকে দিয়েছিল। সমাজ তাঁকে স্বাভাবিক ভাবে নেয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার এক অভিনেত্রীর কথায়, “সবাই ওকে ছিঁড়ে খেয়েছে। যে যখন পেরেছে ব্যাবহার করেছে।’’ এই ব্যবহারের বোঝা হয়ে লড়াইয়ের ময়দান থেকে অবশ্য সরে যাননি পরীমণি। নিজের শর্তে, নিজের এলেমে, নিজের মতো করে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy