Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Tota Roy Choudhury

Tota Roy Chowdhury: টলিউডের বেশির ভাগ মানুষের রাশি কর্কট, তাঁদের কাঁকড়াসুলভ আচরণ দেখলেই বোঝা যায়: টোটা

কর্ণের থেকে যে সম্মান পাচ্ছি বাংলায় হাতেগোনা কিছু মানুষ আমায় সেই সম্মান দিয়েছেন।

টোটা রায়চৌধুরী।

টোটা রায়চৌধুরী।

উপালি মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:০৯
Share: Save:

প্রশ্ন: অনুরাগীরা কোন নামে বেশি ডাকছেন, ফেলুদা না রোহিতদা?

টোটা:
দুটো নামেই ডাকছেন। যাঁর যেটা পছ্ন্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে ফেলুদা আর রোহিতদা সমান সমান যাচ্ছেন। তবে আমি টোটাদা শুনতে পেলে বেশি খুশি।


প্রশ্ন: মিম বলছে, মেয়েরা সম্বোধনে ‘দাদা’ জুড়লেই বুঝতে হবে সেখানে প্রেম আছে। সেই মিমে কিন্তু ফেলুদা নন, এগিয়ে রোহিতদা!

টোটা:
প্রায় ৬০ বছর ধরে ফেলুদার রাজ্যপাট। সে কি এত সহজে যাওয়ার? ফেলুদার আকর্ষণ আলাদা। এর জন্য আমার দীর্ঘ তপস্যা, অপেক্ষা। তবে এখন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রোহিত সেন। সবটাই লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য। ওঁর লেখনির জোরে রোহিত সেন এ ভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। আমার অভিনয় জীবনের লম্বা লড়াইয়ের পর এই সাফল্য। কখনও কখনও নিজের গায়েই চিমটি কেটে দেখতে ইচ্ছে করে, সব সত্যিই না স্বপ্ন দেখছি! তবে সবটা উপভোগও করছি।

প্রশ্ন: রোহিতদা টোটা রায়চৌধুরীর নামটাই ভুলিয়ে দিয়েছে...

টোটা:
এই ঘটনা আরও একবার হয়েছিল প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের সৌজন্যে। ওঁর ‘চোখের বালি’ ছবিতে ‘বিহারী’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম। তখনও টোটা রায়চৌধুরী নিজের পরিচয় ভুলে সাময়িক ‘বিহারী’ হয়ে গিয়েছিল (হাসি)।

প্রশ্ন: আবার বিয়ের সম্বন্ধও আসছে। স্ত্রী সামলাচ্ছেন কী করে?

টোটা:
(হেসে ফেলে) শর্মিলি এই ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। ‘চোখের বালি’-র সময়েও একই ঘটনা ঘটেছিল। ও পুরো বিষয়টা কী সুন্দর সামলে নিল! তখন ওকে শুনতে হত, ‘বিহারীর বৌ’। এখন শুনতে হচ্ছে, ‘রোহিত সেনের স্ত্রী’। শর্মিলি কিন্তু উপভোগ করে এ সব। বলে, যাক সবুরে মেওয়া ফলে সেটা তুমি আরও এক বার প্রমাণ করে দিলে।

প্রশ্ন: বিয়ের আগে আপনিও কি শর্মিলির ‘টোটাদা’ ছিলেন?

টোটা:
একেবারেই নয়। আমরা একে অন্যকে নাম ধরেই ডাকতাম। ও তখন ১৮ আমি ২২। এত রোম্যান্টিকও ছিলাম না। তবে প্রথম দেখেই মনে হয়েছিল, শর্মিলিকে ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ। প্রেম, বিয়ে যা কিছু ওর সঙ্গেই হবে।

প্রশ্ন: এই এক চরিত্রের জোরে ১৮ থেকে ৫৮ বছরের মহিলাদের হৃদয়ে বাস। আফসোস হয়, আরও আগে যদি এই ধরনের চরিত্র পেতেন?

টোটা:
উপরওয়ালা সবার জীবনের চিত্রনাট্য আগে থেকে লিখে রেখেছেন। আমার বেলায় বিধাতা হয়তো ভেবেছিলেন, সবই দেব। কিন্তু একটু দেরিতে। তার জন্য সবুর করতে হবে।

‘আমি সৃজিতকে তাড়া দিয়েছি তৃতীয় ফেলুদা সিরিজের জন্য।’

‘আমি সৃজিতকে তাড়া দিয়েছি তৃতীয় ফেলুদা সিরিজের জন্য।’

প্রশ্ন: সৃজিত মুখোপাধ্যায় এক মুঠো ছবি বানাচ্ছেন। কোনটায় আপনি আছেন?

টোটা:
কোনওটাতেই নেই। আমি সৃজিতকে তাড়া দিয়েছি তৃতীয় ফেলুদা সিরিজের জন্য। ওকে যে ভাবে মুম্বই অপহরণ করছে, খুব বেশি দিন হয়তো আর ধরে রাখা যাবে না।

প্রশ্ন: আপনিও মু্ম্বই-কলকাতার নিত্যযাত্রী। কম পারিশ্রমিকে কাজ করেন বলে নাকি ঘন ঘন ডাক পান...

টোটা:
(একটু থেমে) টলিউডের বেশির ভাগ মানুষের রাশি যে কর্কট, আমি জানি। সেটা তাঁদের কাঁকড়াপনা দেখলেই বোঝা যায়। ওঁরা জানেনই না, সর্বভারতীয় স্তরে যা পারিশ্রমিক সেটাই আমরা পাই বা নিই। ওঁদের মাথাতেও আসে না, কলকাতা থেকে অভিনেতা নিয়ে যাওয়ার খরচা বেশি। থাকা, খাওয়া, সব মিলিয়ে। বলিউডের থেকে শিল্পী নিলে বরং কম খরচে হয়ে যায়। তবু ওঁরা আমাদের ডাকেন কাজের মান দেখে। মুম্বইতে অডিশন নামক একটি বস্তু আছে। প্রথম সারির তারকা ছাড়া বাকি সবাইকে সেটা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। এক একটি চরিত্রের জন্য ১৫-২০ জন পরীক্ষা দেন। সেই পরীক্ষায় পাশ করলে আমরা ডাক পাই। দ্বিতীয়ত, বলিউডে আমরা টাটকা মুখ। সেই কারণেও ডাক পাই। পাশাপাশি, বাংলা ছবির কাজ ১৮ দিনে শেষ হয়। হিন্দি ছবি সেখানে সময় নেয় ৬০ দিন। অর্থাৎ, আমরা তুলনায় দ্রুত। সেটাও আমাদের ডাকার একটি কারণ। চতুর্থ কারণ, এখন বলিউডে শারীরিক গঠন, সৌন্দর্য, নাচাগানা কিন্তু পিছনের সারিতে। বদলে বিষয় নির্ভর কাজ হচ্ছে। যার জন্য বাংলার খ্যাতি বরাবরই। সেখানেও আমরা পোক্ত। তাই আমাদের ঘুরে ফিরে ডাক আসে।

‘যাঁদের নামে বিতর্ক তাঁরা সব দিক থেকে সফল।’

‘যাঁদের নামে বিতর্ক তাঁরা সব দিক থেকে সফল।’

প্রশ্ন: কর্ণ জোহরের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগছে?

টোটা:
অসম্ভব শিক্ষিত, ভদ্র, নম্র মানুষ। শিল্পীদের খুব সম্মান করেন। ওঁর থেকে যে সম্মান পাচ্ছি বাংলায় হাতেগোনা কিছু মানুষ আমায় সেই সম্মান দিয়েছেন। সবাইকে খুব আপন করে নেন। ওঁর সংস্থায় যাঁরা কাজ করেন তাঁরা কিন্তু কর্ণ বলতে অজ্ঞান।


প্রশ্ন: তা হলে ওঁর এত বদনাম কেন?

টোটা:
নাম হলেই বদনাম হবে। দুনিয়ার এটাই রীতি (হাসি)। বদনাম করার লোকের অভাব আছে নাকি ভারতে?

প্রশ্ন: চারিদিকে এত বিতর্ক, ‘রোহিতদা-র নামে কিন্তু কোনও বদনাম নেই! কেন?

টোটা:
যাঁদের নামে বিতর্ক তাঁরা সব দিক থেকে সফল। এক সঙ্গে অনেক কিছু সামলান। আমি বরাবরই একবগ্গা। অভিনয়কে পেশা বেছেছি। তাকে নিয়েই জীবন কাটছে। স্ত্রী যখন বান্ধবী ছিল, তখনও ওকে নিয়েই সংসারের স্বপ্ন দেখতাম। সেটাই হয়েছে। বই, শরীরচর্চা, একা একা হাঁটতে খুব ভাল লাগে। সে সব নিয়েই থাকি। কোনও জটিলতা নেই জীবনে। ফলে, আমার জীবনে গসিপও নেই!

অন্য বিষয়গুলি:

Tota Roy Choudhury Actors Karan Johar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy