শরদ মলহোত্র
কলকাতার ছেলে শরদ মলহোত্র। শহর ছেড়েছেন প্রায় পনেরো বছর। তবে বালিগঞ্জের বাড়িতে তাঁর পরিবার এখনও রয়েছে। গত বছর এই শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাঁর বিয়ের রিসেপশন। ‘‘গত বছর বিয়ের পরেই রাখির জন্য এসেছিলাম কলকাতায়। সেটাই শেষ আসা। আমি পুরোদস্তুর জ়ভেরিয়ান। স্কুল এবং কলেজ দুটোই সেন্ট জ়েভিয়ার্স। স্কুল-কলেজে ক্রিকেটও খেলতাম চুটিয়ে। এখানে বাংলা বিজ্ঞাপন, টেলিফিল্ম, ক্যাম্পেন শুট করেছি। তবে কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট এসেছিল ‘সিনেস্টার কী খোঁজ’ জেতার পরে,’’ কলকাতার স্মৃতি বলতেই নাগাড়ে কথাগুলো বললেন শরদ। সাক্ষাৎকারের মাঝে বাংলায় কথা বলে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, শিকড়ের টান এখনও অটুট।
‘নাগিন ফাইভ’-এ প্রথম বার ধূসর চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতাকে। নারীকেন্দ্রিক ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে কতটা লাইমলাইট কেড়ে নিতে পারবেন শরদ? ‘‘সিরিয়ালের নামটা দেখেই বোঝা যায়, এটি নারীকেন্দ্রিক। সত্যি কথা বলতে, টেলিভিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধারাবাহিকের টার্গেট দর্শক মহিলাই। তাই ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রেও তাঁদের বেশি দেখা যায়। কিন্তু গত পনেরো বছরে যে ক’টা শো করেছি, সব ক’টাতেই আমার চরিত্র নিয়ে কথা হয়েছে। তাই অভিনেতা হিসেবে মনে করি, একটা চরিত্রকে দর্শকের সামনে আকর্ষক করে তোলা আমার দায়িত্ব। কে কতটা লাইমলাইট নিয়ে নিল, সে ভাবনা আমার কোনও দিনই নেই,’’ জবাব অভিনেতার।
গুডবয় ইমেজ ছেড়ে কি নেগেটিভে ভোলবদল খুব জরুরি ছিল? ‘‘অবশ্যই। আমি রোম্যান্টিক হাজ়ব্যান্ডের চরিত্র করেছি, যোদ্ধা হয়েছি। অভিনেতা হিসেবে তো চাইব, নতুন নতুন চরিত্র করতে। আর টেলিভিশনের অন্যতম বড় ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ‘নাগিন’। সেখানে সুযোগ পাওয়াই অনেক বড় ব্যাপার। আর ইমেজ বদলের যে দায়িত্ব একতা কপূর আমার কাঁধে দিয়েছেন, সেটা নিয়ে টেনশনও রয়েছে,’’ হাসতে হাসতে জবাব দিলেন শরদ।
কলকাতায় অভিনয়ের ওয়র্কশপ ও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন শরদ। রিয়্যালিটি শো থেকে তাঁর যাত্রাপথ শুরু। মুম্বইয়ের কঠিন ইন্ডাস্ট্রিতে জমি পেতে কখনও কি বঞ্চনার শিকার হয়েছেন? ‘‘আমার এত দিনের সফরকে বলব ‘ড্রিম রান’। অভিনেতা, পরিচালক, টেকনিশিয়ান... সেরাদের সঙ্গেই আমি কাজ করেছি। তার পরেও হয়তো ভেবেছি, কোনও শো পাব বলে কিন্তু পাইনি। তবে এটাকে ফেভারিটিজ়ম বলব না। কারণ এটা এই পেশা ও ইন্ডাস্ট্রির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুষে রাখায় বিশ্বাসী নই,’’ মন্তব্য তাঁর।
‘নাগিন’-এর জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রস্তাবও ছেড়েছেন শরদ। সুযোগ এলে প্রাক্তন প্রেমিকা দিব্যাঙ্কা ত্রিপাঠীর সঙ্গে পর্দায় জুটি বাঁধতে দ্বিধা নেই তাঁর। ‘‘আমরা দু’জনেই এখন বিবাহিত, যে যার স্পেসে খুশি। মনে হয় না, পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ রয়েছে। আর অভিনেত্রী হিসেবে দিব্যাঙ্কার প্রশংসা করেছি সব সময়ে। ওর সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধে নেই। আশা করছি, ও তেমনটাই ভাবে আমার সম্পর্কে,’’ দোলাচল রেখেই জবাব দিলেন অভিনেতা।
লকডাউনের সময়টা তাঁর কাছে আশীর্বাদের মতো। স্ত্রী রিপকি ভাটিয়ার সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে পেরেছেন এই সুযোগে। ‘‘গত বছর দু’জনেরই কাজ ছিল। লকডাউনে রান্নাবান্না, ঘর পরিষ্কার, মেডিটেশন করেছি একসঙ্গে। আবার বই পড়া, সিরিজ় দেখা, পোষ্যর সঙ্গে খেলা করা... মানে ফ্যামিলি টাইম উপভোগ করেছি,’’ জবাব তাঁর। মুম্বইয়ে পনেরো বছর কাটিয়ে ফেললেও শরদের আক্ষেপ, ‘‘কলকাতার আড্ডা খুব মিস করি। বিশেষ করে দুর্গাপুজোর যে গমগমে পরিবেশ, তা মুম্বইয়ে আর কোথায়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy