প্রোফেসর শঙ্কু ও এল্ ডোরাডো ছবির দৃশ্য।
প্রোফেসর শঙ্কু ও এল্ ডোরাডো
পরিচালনা: সন্দীপ রায়
অভিনয়: ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়
৬.৫/১০
কিছু চরিত্র, কিছু রচনা নিয়ে বাঙালির নস্ট্যালজিয়া বাড়াবাড়ি রকমের বেশি। সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট প্রোফেসর শঙ্কুর কাণ্ডকারখানা তার বাইরে নয়। সুতরাং শঙ্কুকে পর্দায় দর্শাতে হলে ভক্তদের কঠিন মাপকাঠি পেরোতে হবে। সন্দীপ রায়ের ‘প্রোফেসর শঙ্কু ও এল্ ডোরাডো’ কিছু ক্ষেত্রে তা পেরেছে, কিছু ক্ষেত্রে পারেনি।
ছবির জোরের জায়গা হল, গল্প বলার ধরন। বিশেষত যারা প্রথম বার শঙ্কু সম্পর্কে জানছে, তাদের ভাল লাগবে। যেহেতু শঙ্কুকে নিয়ে এটি প্রথম ছবি, তাই ‘নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো’ কাহিনির সঙ্গে শঙ্কুর আবির্ভাবের প্রথম গল্প ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়েরি’র খানিকটা মেলানো হয়েছে। শঙ্কুর ডায়েরি উদ্ধার এবং নিখোঁজ রহস্যকে ছুঁয়ে মূল কাহিনিতে চলে গিয়েছেন পরিচালক। তাঁর লিনিয়ার ন্যারেশন পর্দায় ভাল লাগে।
সন্দীপ রায় তাঁর শঙ্কুকে সমকালীন করেছেন। এমনিতেই চরিত্র হিসেবে শঙ্কু আধুনিক। তার ট্রেডমার্ক গ্যাজেট অ্যানাইহিলিন পিস্তল, মিরাকিউরল ছবিতে রয়েছে। বিধুশেখর, নিউটন, প্রহ্লাদও বিরাজমান। একধাপ এগিয়ে হলোগ্রাম স্টাইলে ভিডিয়ো কল বা শঙ্কুচিত মোবাইল ফোন দেখিয়েছেন পরিচালক। তাতে এ যুগের কচিকাঁচারা আগ্রহী হবে।
যাঁরা ছোট থেকে শঙ্কু গুলে খেয়েছেন, তাঁদের কাছে চরিত্রের একটা অবয়ব তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। পর্দার শঙ্কুর সঙ্গে যার মিল না-ও থাকতে পারে। কেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়কে শঙ্কুর চরিত্রে নিয়েছেন, সে যুক্তি আগেই দিয়েছেন সন্দীপ। তাঁর যুক্তি তাঁর কাছে একদম যথাযথ। ধৃতিমানের নিজস্ব কিছু ম্যানারিজ়ম রয়েছে, যা হয়তো চরিত্রের বদলে অভিনেতাকেই বেশি তুলে ধরে। কিন্তু আদপে তো তিনি ভাল অভিনেতা, তাই বিষয়টি দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ছবিতে বেশ কিছু বিদেশি অভিনেতা রয়েছেন। তাঁরা সকলেই মানানসই। নকুড়বাবুর চরিত্রে শুভাশিস মুখোপাধ্যায় মন্দ নন।
শঙ্কুর কর্মকাণ্ডের পরিধি আন্তর্জাতিক। বাংলা ছবির সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে তা উপস্থাপন করা সত্যিই বড় চ্যালেঞ্জ। সেই জায়গাতে কিছু খামতি রয়ে গিয়েছে। ব্রাজিলের জঙ্গল এবং অ্যাডভেঞ্চারের অংশগুলো দুর্বল। ক্লাইম্যাক্সে যতটা সাসপেন্সের প্রয়োজন ছিল, সেখানেও খামতি নজরে আসে। গল্প জানা থাকলে তো বটেই, না জানা থাকলেও। পাশাপাশি শঙ্কুর মতো অ্যাম্বিশাস প্রজেক্ট যে বাংলাতেও সম্ভবপর এটাও ভাবা প্রয়োজন।
যাঁরা সত্যজিৎ আর শঙ্কুর নস্ট্যালজিয়ায় মজে, তাঁরা কি ততটা রোমাঞ্চিত হবেন? কিন্তু হালফিলের ছেলেমেয়েরা যদি ছবির মাধ্যমে শঙ্কুর সঙ্গে পরিচিত হয়, সেটাও কম প্রাপ্তি নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy