ছবি-ওয়ার
অভিনয়- হৃতিক রোশন, টাইগার শ্রফ, বাণী কপূর, আশুতোষ রানা
পরিচালনা- সিদ্ধার্থ আনন্দ
হৃতিক রোশন এবং টাইগার শ্রফ টুইটারে ভক্তদের অনুরোধ করেছিলেন ক্লাইম্যাক্সটা যেন কোনওভাবেই ফাঁস না করা হয়। ছবি দেখার পর বোঝা গেল ‘ক্লাইম্যাক্সটাই আসল রাজা’। ছবির নাম ‘ওয়ার’। ফার্স্টলুক প্রকাশের পর থেকেই দর্শকের মধ্যে ওই ছবিকে ঘিরে দানা বেঁধেছিল এক রাশ প্রত্যাশা, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘সুপার হাইপড মুভি’। আর হবে না-ই বা কেন? বলিউডের দুই অ্যাকশন হিরো প্রথম বার এক পর্দায়। এ সুযোগ মিস করা যায়?
ছবির শুরুতে দেখানো হচ্ছে ভারতীয় সেনার ‘অমুল্য সম্পদ’ কবীর (হৃতিক রোশন) এক আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য বিশেষ মিশনে যান। সেই সফরে তাঁর সঙ্গী খলিদ (টাইগার শ্রফ)। সঙ্গী না বলে বোধহয় শিষ্য বলাই ভাল। কারণটা খুলেই বলা যাক। যাওয়া যাক ফ্ল্যাশব্যাকে।
কবীরের হাতেই মরতে হয় খলিদের বাবাকে। বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল সে দেশের সঙ্গে। বিশ্বাসঘাতকের ছেলে বিশ্বাসঘাতকই হবে, এই ধারণায় যখন সেনা অফিসাররা খলিদকে ‘র’-তে নিতে অস্বীকার করে, ঢাল হয়ে দাঁড়ানহৃতিক। হাতে ধরে খলিদকে প্রশিক্ষণ দেন সব কিছু। বোঝান ডিফেন্সের সহজপাঠ।
যাই হোক। আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য যে মিশনে ওঁরা যান সেখানে গুরুতর আহত হন দু’জনেই। সেখান থেকে ফিরে আসা ছিল একেবারেই ‘মুশকিল নেহি নামুমকিন’।মিশন ব্যর্থ হলেও, প্রাণ নিয়ে ফেরেন তাঁরা।
এর পরই আসল খেল শুরু। মিশন থেকে ফিরেই কবীর (হৃতিক রোশন) বদলে যায় একেবারেই। প্ল্যান করে, ছক কষে মারতে থাকে সেনা বিভাগেরই কর্তাদের। কিন্তু কেন? কী বা উদ্দেশ্য তাঁর? অনেক চেষ্টা করেও উত্তর পাননা খলিদ এবং কর্নেলের ভূমিকায় আশুতোষ রানা। কবীর কি বদলে গেল? নাম লেখাল শত্রু শিবিরে? যে কবীর দেশের জন্য প্রাণ দিতেও রাজি থাকত হঠাৎ কী হল তাঁর?
নিজের গুরুকে এভাবে বদলে যেতে দেখে স্তম্ভিত খলিদও। কারণ জানতে চান এমন পরিবর্তনের। কবীর উত্তর দেয়, “আমার আর আমার টার্গেটের মধ্যে যে আসবে সে শেষ। এমনকি তুমিও।’’ না, এ কবীরকে চেনেন না খলিদ, দেখেননি কখনও।
যাই হোক, এ ভাবেই এগয় প্লট। যত দিন যায় কবীর হয়ে ওঠেন অদম্য। তাঁকে থামাতে পাঠানো হয় খলিদকে। কিন্তু গুরুকে নাগালে পাওয়া কি অতই সহজ?গোটা ছবিতেই টানটান উত্তেজনা, বাইক স্টান্ট, গাড়ির লড়াই— আপনার অ্যাড্রিনালিন রাশ বাড়াবে বেশ কয়েক গুণ। অ্যাকশন পরিচালকেরা সত্যি বাহবাযোগ্য।
হৃতিক রোশন এবং টাইগার শ্রফ
বাণী কপূরের উপস্থিতি বেশিক্ষণের নয়। তবু ওইটুকু সময়েই মনে দাগ কাটবেন তিনি। মজার বিষয় কি জানেন,বাণীকে নিয়েই দানা বাঁধে রহস্য। কী হয়, তা বলে দিলে গোটা গল্পটাই বলা হয়ে যাবে। কিন্তু সিঙ্গল মাদারের চরিত্রে তিনি যথাযথ। আশুতোষ রানাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। এই ছবিতেও হতাশ করেননি তিনি। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর মোটের উপর ভালই। ভিএফএক্স-এর ব্যবহার যেন হলিউডকেও টেক্কা দেবে।
এক কথায় ‘ওয়ার’ কেমন? বলি পাড়ার দুই হ্যান্ডসাম হাঙ্ক একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলে যে ধামালটা হত সেটাই দেখা গিয়েছে এই ছবিতে। প্রযোজক পয়সা খরচ করেছেন বেশ। হৃতিক-টাইগার জুটিও মন্দ নয়। কিছু দিন আগেই ‘সুপার ৩০’–র মতো ছবি করেছেন হৃতিক। এবার ‘ওয়ার’-এর মতো অ্যাকশন থ্রিলার। তিনি যে ভার্সেটাইল, প্রমাণ মিলল আরও এক বার।
তবে গল্পের স্টোরিলাইন জমল না একে বারেই।কোথাও গিয়ে কেমন যেন খাপছাড়া।জোর করে হাততালি কুড়নোর জন্যই যেন রাখা হয়েছে ‘ফাইট সিকোয়েন্স’।যদিও ক্লাইম্যাক্সে ছক্কা হাঁকিয়েছেন পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ। আপনি ভাববেন এক, আর হবে আর এক।
তবে, বিশুদ্ধ বিনোদনের স্বাদ পেতে পুজোর মরসুমে এক বার দেখেই ফেলুন ‘ওয়ার’। টাইগার শ্রফ আর হৃতিক রোশন একই ফ্রেমে— এ-ও কি কম পাওয়া?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy