Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Movie Review

মুভি রিভিউ: ঘরে-বাইরে গান আর প্রেমের আখ্যান

এক কথায়, আপনার বং কানেকশন বা অটোগ্রাফ দেখে যেমন লেগেছিল, এই ছবি তার অতিরিক্ত কিছু নয়। কিছুটা রবি ঠাকুর আর কিছুটা ব্যোমকেশ-কাকাবাবুর পপুলার ককটেল।

কিছুটা রবি ঠাকুর আর কিছুটা ব্যোমকেশ-কাকাবাবুর পপুলার ককটেল মৈনাক ভৌমিকের ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’।

কিছুটা রবি ঠাকুর আর কিছুটা ব্যোমকেশ-কাকাবাবুর পপুলার ককটেল মৈনাক ভৌমিকের ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ১৯:০১
Share: Save:

বাংলা রোমান্টিক কমেডি ঘরানার ছবি আসলে বাঙালির চেয়ে অনেক বেশি বংদের চোখে দেখা কলকাতা। মৈনাক ভৌমিকের ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ তার ব্যতিক্রম নয়। এক কথায়, আপনার বং কানেকশন বা অটোগ্রাফ দেখে যেমন লেগেছিল, এই ছবি তার অতিরিক্ত কিছু নয়। কিছুটা রবি ঠাকুর আর কিছুটা ব্যোমকেশ-কাকাবাবুর পপুলার ককটেল। ক্রাইসিস বলতে প্রেম-বিয়ে। আর তারও সলিউশন রয়েছে শেষে শুভ পরিণয়ে। অতএব, থ্রি-ডি সানাই বাজবেই। আপনার কাজ শুধু সিনেপ্লেক্সে ডায়েট কোক কিনে ঢুকে পড়া।

বরাবরই পপুলার মোড়কে বিকল্প নাগরিক সম্পর্কের গল্প বলতেই চান মৈনাক। প্রথম ছবি ‘আমরা’ থেকেই সে যাত্রা তাঁর। কিন্তু গল্প বলার ধরনটিও তাঁর ছবিতে হয়ে উঠছে ক্রমশ জটিলতা পেরিয়ে মূল ধারার। তাই এই ছবিতে অমিত আর লাবণ্য (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ থেকে নেওয়া নামগুলি) তিন বছর আগে ছাড়াছাড়ি হওয়া প্রেমকেই খুঁজে চলে। এবং ছবির শেষে তা পেয়েও যায় সহজেই।

মিউজিক ছিল তাঁদের ছেলেবেলার সম্পর্কের সাঁকো। তাঁদের ব্যান্ডের নাম ছিল ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’। কিন্তু প্রেম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যায় তাঁদের ব্যান্ড-ও। মুম্বই চলে যায় অমিত। কিন্তু ভালবাসা থেকে যায় কোথাও গোপনে। আর, সেই ভালবাসার টানেই তিন বছর পর ফের শহরে ফেরে সে। কমন বন্ধুর বিয়েতে দেখা হয় লাবণ্যের সঙ্গে। লাবণ্য তত দিনে এনআরআই পাত্রের দখলে। ও দিকে নিজের শহর ছেড়ে মুম্বইতে কিছুতে মানাতে পারছিল না অমিত। শেষ চেষ্টা করে সে। বাংলা গান আর প্রেম— দুটো স্বপ্ন ফের যদি সত্য হয়। হিন্দুস্তান রোডের নিজের বাড়ি বিক্রি করে ফ্ল্যাট কিনতেও বাজি লড়ে সে। কিন্তু তার আগেই শেষরক্ষা হয়। লাবণ্য এনআরআই পাত্রের বদলে অমিতের ডাকেই সাড়া দেয়। এবং অমিতের নতুন কাফের নাম হয় ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’।

আরও পড়ুন:

রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে আমায় কোনও স্ট্রাগল করতে হয়নি

মৃত্যুর তিন বছর পর মুক্তি পেল এই টলিউড অভিনেত্রীর শেষ ছবি

আপাত এই মিষ্টি প্রেমের গল্পে বিনোদন ছাড়া তবে আমরা কী দেখতে পারি? দেখতে পারি নতুন এক শ্রেণিকে, যাদের মূল ছিল গড়িয়াহাটে বা রাসবিহারীতে। যারা এখন এনআরআই বিয়ে করাকে বেটার কেরিয়ার অপশন হিসেবে দেখে। যারা রুবি বা রাজারহাটে ফ্ল্যাট কিনতে চায়। যারা চায় কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে কাফে খুলতে। সেই নিউ জেনারেশনের প্রতিনিধিত্ব করে অমিত-লাবণ্যরা। যারা ভীষণ ভাবেই ভাসছে। কখনও কাফেতে তো কখনও শপিং মলে। অথচ তাঁদের মূল কিছুতেই ভেতরে আলগা হয় না যেন।

অনুপমের গান নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে, গোয়েন্দা নিয়োগ করে বিয়ের পাত্র নির্বাচনের বিষয়টি সত্যিই মজার। পাশাপাশি, একঝাঁক নতুন থিয়েটার কর্মীকে দেখা গেল এ ছবিতে, যার জন্য অবশ্যই মৈনাকের সাধুবাদ প্রাপ্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE