Mithoon Sharma's Career Was Undisturbed Even After War of Words With Salman Khan dgtl
bollywood
সলমনের চোখে চোখ রেখে উত্তর দিয়েও বলিউডে পায়ের নীচের জমি শক্ত করেছেন এই সঙ্গীত পরিচালক
খোঁচা হজম করেও সলমন তাঁর মেজাজ শান্ত রেখেছিলেন। ঠাট্টার মেজাজেই তিনি মিঠুনকে বলেন, ‘‘কী করব! আপনার গায়কই তো প্রায় ঘুমন্ত অবস্থায় এলেন।’’ এর পর সলমন মজা করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে মিঠুনের পা স্পর্শ করারও চেষ্টা করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ১৩:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
বিবেক ওবেরয় থেকে অরিজিৎ সিংহ। বলিউডে সলমনের কোপে পড়ে অনেকেই পিছিয়ে পড়েছেন কেরিয়ারে। কিন্তু সলমনের সঙ্গে কথায় টক্কর দিয়েও নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন? বিরল হলেও সেই নজিরও আছে ইন্ডাস্ট্রিতে। তিনি সঙ্গীত পরিচালক মিঠুন শর্মা। চেনা স্রোতের উল্টো দিকে পাড়ি দিয়ে তিনি টক্কর দিয়েছিলেন সলমনের সঙ্গে।
০২২২
সলমন-মিঠুন মুখোমুখি হয়েছিলেন এক পুরস্কার বিতরণী রাতে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সলমন খান। এই অনুষ্ঠানেই ভাইজানের সঙ্গে টক্কর দিতে গিয়ে তাঁর বিরাগভাজন হয়ে পড়েছিলেন অরিজিৎ সিংহ।
০৩২২
সেই পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠানে অরিজিৎ গিয়েছিলেন কিছুটা সাধারণ পোশাক পরে। তিনি যখন পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠেছিলেন, সঞ্চালক সলমন প্রশ্ন করেছিলেন, “ঘুমিয়ে পড়েছিলে না কি?”
০৪২২
উত্তরে অরিজিৎ বলেছিলেন, “কী করব! আপনারা ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছেন তো।” এই ঘটনার তখন সলমনের দিক থেকে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু তিক্ততা অপেক্ষা করেছিল অরিজিতের জন্য।
০৫২২
অভিযোগ, এর পর সলমনের রোষে একের পর এক গানের সুযোগ চলে যেতে থাকে অরিজিতের কাছ থেকে। প্রথমে তাঁর কথা ভাবা হলেও শেষে সুযোগ চলে যায় অন্য শিল্পীর কাছে। দলাদলির শিকার হয়ে অরিজিৎ একটা পোস্ট করেন সলমনের বিরুদ্ধে। সেটা ভাইরালও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে নিজের পোস্ট মুছে দেন অরিজিৎ।
০৬২২
কিন্তু অরিজিৎ এখনও সলমনের নেকনজরে ফিরতে পারেননি বলেই ইন্ডাস্ট্রিতে শোনা যায়। অরিজিতের পরে সলমন সে রাতে সঙ্গীত পরিচালক মিঠুনের সঙ্গেও প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
০৭২২
সঙ্গীত পরিচালক মিঠুন একাধারে গায়ক, গীতিকার ও সুরকার। সে রাতে ‘আশিকি টু’ ছবির ‘তুম হি হো’ গানের জন্য তিনি সেরা গীতিকার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
০৮২২
মিঠুনের মঞ্চে ওঠার আগেই দর্শকদের সবাই সাক্ষী ছিলেন সলমন-অরিজিৎ কথোপকথনের। ফলে কিছুটা তিক্ততার রেশ ছিলই মিঠুনের মধ্যেও। তা ছাড়া পুরস্কার পাওয়ার আগে তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল প্রায় ছ’ঘণ্টা।
০৯২২
সব মিলিয়ে, পুরস্কার নিতে যাওয়ার সময় মিঠুনের মেজাজ ভাল ছিল না। পুরস্কার নেওয়ার পরে সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর পরিবর্তে মঞ্চে দাঁড়িয়ে মিঠুন বলেন, ‘‘অরিজিতের এই গান সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়নি। বরং, জাগিয়ে তুলেছে।’’
১০২২
খোঁচা হজম করেও সলমন তাঁর মেজাজ শান্ত রেখেছিলেন। ঠাট্টার মেজাজেই তিনি মিঠুনকে বলেন, ‘‘কী করব! আপনার গায়কই তো প্রায় ঘুমন্ত অবস্থায় এলেন।’’ এর পর সলমন মজা করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে মিঠুনের পা স্পর্শ করারও চেষ্টা করেন।
১১২২
সেই সময় সলমন দেখতে পান, মিঠুনের ট্রাউজার্স থেকে একটি নেমট্যাগ ঝুলছে। অর্থাৎ শো-এর অতিথিদের জন্য চেয়ার চিহ্নিত করে যে নাম লেখা ট্যাগ লাগানো থাকে, সেটা কোনও ভাবে মিঠুনের পোশাকের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল।
১২২২
দেখতে পাওয়ার পরে সলমন বার বার ওই নেমট্যাগ খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু যত বার তিনি কাছে যাচ্ছিলেন, তত বার সরে যাচ্ছিলেন মিঠুন। শেষে তিনি যখন মঞ্চ থেকে নামছেন, তখনও এক বার সলমন বলেন, পিছন থেকে নেমট্যাগ খুলে নিতে।
১৩২২
সে সময় মঞ্চে ছিলেন পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা-ও। তিনি মিঠুনের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন। এ বার তিনি মিঠুনের ট্রাউজার্স থেকে ওই নেমট্যাগ খুলে দেন। এত ক্ষণে মিঠুন বুঝতে পারেন সলমন কী বলতে চাইছেন।
১৪২২
এ বার সলমন মজা করে বলেন, ‘‘তোমার গায়ক হয়তো ওটা আটকে দিয়েছে।’’ এই কথার পরে মেজাজ হারান মিঠুন শর্মা। তিনি সলমনের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে বেশ রুষ্ট হয়েই বলেন, ‘‘আপনারা পুরস্কার দেওয়ার আগে ছ’ঘণ্টা বসিয়ে রাখলে এ রকমই হবে।’’
১৫২২
এর প্রত্যুত্তরে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেননি সমলনও। সবার সামনেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি মিঠুনকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। চিৎকার করে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেন। তাঁর এই প্রতিক্রিয়ার পরে দর্শকদের মধ্যে তখন পিন পড়ার নিস্তব্ধতা।
১৬২২
সলমনের এই আচরণেও কিন্তু মিঠুন ভয় পাননি। একটুও না ঘাবড়ে তিনি মাইক্রোফোনের সামনে বলেন, ‘‘স্যর, আমি কিন্তু ভয় পাইনি।’’ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক স্বরে এই পাল্টা উত্তরে এ বার থতমত হয়ে যান সলমন খান।
১৭২২
এর পর পুরো ঘটনাকে রসিকতার মোড়ক দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না সলমনের। তিনি মিঠুনকে জড়িয়ে ধরেন এবং মঞ্চ থেকে বিদায় জানান।
১৮২২
পরে মিঠুন বলেছিলেন, তাঁর মনে কারও প্রতি কোনও তিক্ততা ছিল না। সে রাতে ঘটনার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ তিনি ওই কথাগুলি বলে ফেলেছিলেন। পরেও এই নিয়ে তিনি কোথাও কোনও বিরূপ মন্তব্য করেননি।
১৯২২
সলমনের চোখে চোখ রেখে এই উত্তর দেওয়ার পরেও মিঠুনের কেরিয়ারে কোনও প্রভাব পড়েনি। রুদ্ধ হয়নি তাঁর কাজের গতিও। ‘এক ভিলেন’, ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’, ‘হমারি অধুরি কহানি’, ‘কবীর সিংহ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে তিনি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেন।
২০২২
কিন্তু অরিজিতের ক্ষেত্রে ছবিটা ছিল পুরো অন্যরকম। সলমনের বিরাগভাজন হয়ে তিনি ক্ষতি করেন নিজের কেরিয়ারের। এই পার্থক্যের জন্যেও সবাই দায়ী করেন স্বজনপোষণকেই।
২১২২
মিঠুনের পরিবারে কয়েক প্রজন্ম বলিউডের সঙ্গে জড়িতে। তাঁর ঠাকুরদা পণ্ডিত রামপ্রসাদ শর্মা অসংখ্য শিক্ষার্থীকে গান শিখিয়েছেন। যাঁরা পরে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে বলিউড ফিল্ম দুনিয়াকে শাসন করেছেন। মিঠুনের বাবা নরেশ শর্মা মিউজিক অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করেছেন নামী সঙ্গীত পরিচালকদের সঙ্গে। লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল জুটির প্যায়ারেলাল হলেন মিঠুনের কাকা।
২২২২
বলিউডে এ রকম শিকড় থাকার ফলে মিঠুনের গায়ে সলমনের আঁচড় অবধি পড়েনি, ধারণা অনুরাগীদের। অন্য দিকে অরিজিৎ সিংহ বহিরাগত হওয়ার ফলে সহজেই রোষানলের শিকার হন।