Meenakshi Seshadri's Adieu Paved The Way for Madhuri Dixit in Bollywood dgtl
meenakshi shesadri
বিবাহিত গায়কের সঙ্গে ব্যর্থ প্রেমে মীনাক্ষীর অকাল বলিউড বিদায়ে নাকি লাভ হয় মাধুরীর
কয়েক বছর পরে মাধুরী তাঁকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে গেলেন অনেকটাই। বরং, অকালেই ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে বিদায় নিলেন মীনাক্ষী শেষাদ্রি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ১৫:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৬
মীনাক্ষী শেষাদ্রি যখন তারকা হিসেবে খ্যাতির মধ্যগগনে, তখন বলিউডে কেউ চিনতই না মাধুরী দীক্ষিতকে। গুঞ্জন, তাঁর সঙ্গে চেহারায় সাদৃশ্য ছিল বলে তাঁরই প্রতিমূর্তি হিসেবে মাধুরীকে পেশ করা হত।
০২২৬
কিন্তু কয়েক বছর পরে মাধুরী তাঁকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে গেলেন অনেকটাই। বরং, অকালেই ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে বিদায় নিলেন মীনাক্ষী শেষাদ্রি।
০৩২৬
মীনাক্ষীর জন্মগত নাম শশীকলা। একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে তাঁকে দেখে পছন্দ হয় মনোজ কুমারের। তিনি তাঁকে নিজের পরবর্তী ছবি ‘পেন্টার বাবু’-তে সুযোগ দেন।
০৪২৬
ছবিটি সফল হয়নি। কিন্তু মীনাক্ষীর সৌন্দর্য মুগ্ধ করল পরিচালকদের। শো ম্যান সুভাষ ঘাই তাঁকে কাস্ট করলেন ‘হিরো’ ছবিতে। আগেই অভিনয় জীবন শুরু হলেও সুভাষ ঘাই তাঁর ‘হিরো’ ছবির পোস্টারে মীনাক্ষীর নামের আগে ‘ইন্ট্রোডিউসিং’ শব্দটি রাখেন।
০৫২৬
তাঁর নাম কে পরিবর্তন করেছিলেন, তা নিয়ে অবশ্য দ্বিমত আছে। শশীকলা নামে অতীতে নায়িকা ছিলেন। তাই মনোজ কুমারই নাকি নতুন নাম দেন।
০৬২৬
আবার শোনা যায়, ‘ম’ দিয়ে নামের প্রতি দুর্বলতা ছিল সুভাষ ঘাইয়ের। তিনি-ই ‘মীনাক্ষী’ নাম দেন নবাগতাকে।
০৭২৬
জ্যাকি শ্রফ এবং মীনাক্ষী শেষাদ্রির জুটিতে ‘হিরো’ সুপারহিট হয়। রাতারাতি তারকা হয়ে যান জ্যাকি ও মীনাক্ষী দু’জনেই।
০৮২৬
এর পর সুভাষ ঘাইয়ের পরিচালনায় ‘মেরি জঙ্গ’ ছবিতেও অভিনয় করেন মীনাক্ষী। কিন্তু এর পর আর এই জুটিকে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি।
০৯২৬
বলিউডের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, সুভাষের কিছু শর্ত মানতে রাজি ছিলেন না মীনাক্ষী। তাই তিনি এই সুঅভিনেত্রীকে এক সময় বাতিল করে দেন।
১০২৬
তা ছাড়া সুভাষ তখন নতুন নায়িকা পেয়েও গিয়েছিলেন। তাঁর নজর তখন মাধুরীর উপর। ফলে মীনাক্ষীকে ছেড়ে সুভাষ ব্যস্ত হয়ে পড়লেন মাধুরী দীক্ষিতের বলিউডযাত্রার পথ সুগম করে তুলতে।
আশির দশকের মাঝামাঝি মীনাক্ষী তখন বলিউডের প্রথম সারির ব্যস্ত নায়িকা। পারিশ্রমিকের দিক দিয়েও বাকিদের তুলনায় এগিয়ে অনেকটাই। ‘ঘায়েল’ ছবির সময় রাজকুমার সন্তোষী মুগ্ধ হন মীনাক্ষীকে দেখে। তিনি প্রোপোজও করে বসেন।
১৩২৬
পরে রাজকুমার সন্তোষী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানান, মীনাক্ষী তাঁর প্রস্তাব খুব ভদ্রভাবেই নাকচ করেছিলেন। মীনাক্ষী চাননি, রাজকুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ হোক। আবার, তাঁর প্রণয়ী হতেও তিনি রাজি ছিলেন না।
১৪২৬
মীনাক্ষীর প্রেমে পড়েন কুমার শানুও। তখন তিনি বিবাহিত। এ বার কিন্তু মীনাক্ষী পিছিয়ে আসেননি। গায়কের সঙ্গে সম্পর্কে তাঁর সায় ছিল। তাঁরা তিন বছর নিজেদের প্রেম গোপন রেখেছিলেন।
১৫২৬
কিন্তু এই সম্পর্কের কথা জেনে যান কুমার শানুর স্ত্রী। তিনি প্রকাশ্যে এই সম্পর্কের জন্য একতরফা ভাবে মীনাক্ষীকেই দায়ী করেন। এক বার কুমার শানুর তৎকালীন সেক্রেটারি সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছিলেন কুমার শানুর বান্ধবী ছিলেন।
১৬২৬
সেক্রেটারির কাছে কুমার শানুর তৎকালীন বান্ধবীর নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি নাম না করে মীনাক্ষীর দিকেই নির্দেশ করেছিলেন।
১৭২৬
১৯৯৪ সালে কুমার শানুর স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। কারণ হিসেবে তিনি দায়ী করেন মীনাক্ষীকেই।
১৮২৬
এই ত্রিকোণ প্রেম সে সময় আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছিল। কিন্তু কুমার শানু বা মীনাক্ষী, দু’জনের কেউ এই প্রসঙ্গে কোনও দিন কিছু বলেননি। কুমার শানু বা তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেননি মীনাক্ষী।
১৯২৬
সে সময় গুঞ্জন ছিল, ডিভোর্সের পরে মীনাক্ষীকে বিয়ে করবেন কুমার শানু। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে যান মীনাক্ষী। তাঁদের সম্পর্ক আর কোনও দিন স্বাভাবিক হয়নি।
২০২৬
অন্য দিকে রাজকুমার সন্তোষীর প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও তাঁর সঙ্গে মীনাক্ষীর সুসম্পর্ক বজায় ছিল। প্রত্যাখ্যান করার পরেও তিনি অভিনয় করেছিলেন রাজকুমারের ‘দামিনী’ এবং ‘ঘাতক’ ছবিতে। দু’টিই বক্স অফিসে সুপারডুপার হিট হয়েছিল।
২১২৬
‘ঘাতক’-এর পরে মীনাক্ষী ঠিক করেন তিনি এ বার বলিউড ছেড়ে চলে যাবেন। কারণ কুমার শানুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ঘিরে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভাবমূর্তি।
২২২৬
১৯৯৫ সালে হরিশ মাইসুরুকে বিয়ে করেন মীনাক্ষী। এর পর আমেরিকাতেই নতুন জীবন শুরু হয় তাঁর। তিনি বলিউড থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। বহু বছর তাঁর কোনও সন্ধান ছিল না।
২৩২৬
২০১৫ সালে আমেরিকায় গিয়ে মীনাক্ষীকে আবিষ্কার করেন ঋষি কপূর। ‘দামিনী’-র নায়িকার সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করেন ঋষি। অনেক দিন পরে সবাই নস্টালজিক হয়ে পড়েন আশির দশকের সেরা নায়িকাকে দেখে।
২৪২৬
ঋষির পোস্ট থেকেই জানা যায়, আমেরিকার টেক্সাসে স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মীনাক্ষী এখন ব্যস্ত গৃহিণী। সেখানে তাঁর একটি নাচের স্কুল আছে। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যকলার প্রশিক্ষণ দেন তিনি।
২৫২৬
২০১৫-এই ভারতে এসেছিলেন মীনাক্ষী। সে সময় তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমেরও। জানিয়েছেন, ভাল ছবিতে সুযোগ এলে তিনি অবশ্যই বলিউডে অভিনয় করবেন।
২৬২৬
হিন্দি ছবির দর্শকদের অনেকেই মনে করেন, ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যার জন্যই মীনাক্ষীকে অকালে কেরিয়ার থেকে বিদায় নিতে হয়। তিনি অভিনয় ছেড়ে দেওয়ায় মাধুরী দীক্ষিতের উত্তরণের পথ সুগম হয় বলে ধারণা অনেক চলচ্চিত্রপ্রেমীরই।