‘ভাইয়া জি’ ছবির দৃশ্যে মনোজ বাজপেয়ী। ছবি: সংগৃহীত।
‘এক বিহারী, সব পর ভারী’ এই কথাটির সঙ্গে মনোজ বাজপেয়ীর শততম ছবি ‘ভাইয়া জি’ দেখার পর খুব ভাল ভাবে অনুধাবন করা যাবে।
গল্প শুরু হয় বিহারের এক গ্রামে। সেখানে রামচরণ ত্রিপাঠী (মনোজ) থাকে তার পরিবারের সঙ্গে। সে ‘ভাইয়া জি’ নামেও পরিচিত। তার প্রভাব চারিদিকে। গ্রামবাসী, জেলা— সর্বত্র ভাইয়া জির নামে সবাই ভয়ে কাঁপে। ভাইয়া জি তার বাবাকে কথা দিয়েছিল, তাই হিংসা ছেড়ে সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করে। ভাইয়াজির আর একটি পরিচয় হল, সে ‘রবিনহুডের বাবা’। কারণ, গরিবের দুঃখে-কষ্টে সে সব সময়েই কাতর। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়, যাতে ভাইয়া জি আবার আগের মতো রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে বাধ্য হয়। প্রতিশোধের আগুন এমন ভয়াবহ যে, তাতে পুরো গ্রাম ভাইয়া জির সঙ্গে সেই লড়াইয়ে শামিল হয়। প্রতিশোধের এই গল্প হিন্দি ছবিতে আমরা একাধিক বার দেখেছি, ‘ভাইয়া জি’-তে তাই কোনও নতুনত্ব নেই। আর সেখানেই ছবির সবচেয়ে বড় খামতি।
এই ছবির প্রধান সম্পদ মনোজ বাজপেয়ী। হিন্দি ছবিতে সাধারণত আমরা দেখি ‘সিক্স প্যাক্স অ্যাবস’ নায়কেরা অ্যাকশন দৃশ্যে ভরপুর ‘স্টান্ট’ করছেন। কিন্তু মনোজের না আছে ‘সিক্স প্যাক্স’, না আছে সে রকম পেটানো শরীর। কিন্তু মনোজ বিহারের সেই দবাং ভাইয়া জির চরিত্র করেছেন, যার আছে সাহসী ‘জিগরা’। নিজে বিহারী হওয়ার দরুন মনোজ এই চরিত্রের সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পেরেছেন। মনোজের প্রেমিকার ভূমিকায় জোয়া হুসেনের কাজ দর্শককে বিস্মিত করবে। ছবির প্রথম ভাগে জোয়ার কোনও সুযোগ না থাকলেও, বিরতির পর যে দক্ষতার সঙ্গে জোয়া অ্যাকশন করেছেন, তা দেখার মতো। কোনও কোনও দৃশ্যে মনোজের থেকেও ওঁর ‘স্টান্ট’ দর্শককে অবাক করবে। এ ছাড়া যতীন গোস্বামী, বিপিন শর্মা, সুভিন্দর পাল ভিকির অভিনয় উল্লেখযোগ্য। ছবির প্রথম ভাগ খুব ধীর গতিতে চলে, দ্বিতীয় ভাগে চোখের পলক পড়ার অবকাশ থাকে না। আড়াই ঘণ্টার এই ছবিকে দু’ঘণ্টায় অনায়াসে বানানো যেত। প্রতিশোধের ছবিতে সংলাপ এবং চিত্রনাট্য টানটান হলে দর্শকদের বেঁধে রাখা যায়, কিন্তু ‘ভাইয়া জি’-তে তার বড়ই অভাব।
অবশ্য অনস্বীকার্য যে, ছবির সঙ্গীত এবং আবহ কার্যকরী। অনেক দিন পর ছবিতে ‘আইটেম’ গানের ব্যবহার দেখা গেল। ছবির শুরুতেই ‘চক্কা জাম হো যায়ে’ একটা আলাদা মজা এনে দেয়। ভোজপুরী, বিহারী আচারানুষ্ঠানের অনেক কিছু এই গানের মাধ্যমে জানা যায়।
পরিচালক অপূর্ব সিংহ করকি এবং মনোজের দ্বিতীয় কাজ ‘ভাইয়া জি’। আগে এই জুটিকে ‘সির্ফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’-তেও দেখা গিয়েছে। আফসোস, এই ছবিতে আমরা সেই ম্যাজিক দেখতে পাই না। কোথাও না কোথাও মনে হয়েছে, পরিচালক করকি অভিনেতা মনোজের কাছে হার মেনে নিয়েছেন। বলা যায়, মনোজের ১০০তম ছবি ‘ভাইয়া জি’ একটি ব্যর্থ প্রয়াস। এর জন্য অপেক্ষা যদি করেনই, তা হলে ওটিটি মুক্তির জন্য করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy