ছবি: কৌশিক সরকার, জিম সৌজন্য: ক্রোনোজ
জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার কথা ভাবছেন? কিন্তু কিছুতেই উৎসাহ পাচ্ছেন না? গার্লফ্রেন্ড কিংবা বয়ফ্রেন্ড দাগা দিয়েছে। আর আপনি ভাঙা হৃদয় নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন। এই রকম পরিস্থিতিতে নিজের জিমেই খোঁজ পেতে পারেন নতুন বন্ধুর, নতুন ভালবাসার।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে ইদানীং অনেকে জিমের অচেনা বন্ধুদের মধ্যেই খুঁজে পাচ্ছেন ভালবাসার পাত্রকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন ব্যায়াম করার সময় শরীর থেকে এন্ডরফিনের মতো ‘ফিল গুড’ হরমোন নিঃসৃত হয়। মস্তিষ্ক থেকে বেরোয় প্রোটিন হরমোন।
ফলে জিম করার পর মন ভাল হয়ে যায়।
এখানে আপনিও প্রেমিক বা প্রেমিকার দেখা পেয়েও যেতে পারেন, কারণ এখন শরীর তৈরি করার তাগিদ ভেতর থেকে আসছে। সুচর্চিত শরীর সকলেই দেখাতে চাইছেন জিমে গিয়ে। এমনকী ট্রেনারের সঙ্গে ভাব ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়াও নতুন কোনও ব্যাপার নয়।
জিমে শরীরচর্চা করার পর শরীর-মন ফুরফুরে হয়ে ওঠে। তখন কথা বলতে, আড্ডা দিতে ভাল লাগে। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠাও সহজ হয়। ‘‘ফিলগুড হরমোন শরীরের আকাঙ্ক্ষাকেও উজ্জীবিত করে তোলে,’’ বলছেন মনস্তত্ত্ববিদ জ্যোতি সপ্রু।
‘‘জিমে দুই নারীপুরুষের পরস্পর মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ অঢেল। জিমের পরিবেশে ভারিক্কি ভাব নেই। হাল্কা মেজাজ। মুখে নেই মেকআপ। ফ্যাশনেবল জামাকাপড়েরও দরকার নেই। ফলে অনায়াসেই দু’জনের মধ্যে একটা অনাবিল সংযোগ গড়ে ওঠে। সেই মানসিক যোগাযোগের মধ্যে আন্তরিকতা আর সারল্যটাই প্রধান হয়ে ওঠে,’’ বললেন দিব্যা অরোরা— যিনি সম্প্রতি জিমে গিয়েই খুঁজে পেয়েছেন মনের মানুষকে।
জিম রোম্যান্সের নেপথ্যে
জিম করার সময় ‘ফিল গুড’ হরমোন বেরোয়। তা শরীরের আকাঙ্ক্ষাকে উজ্জীবিত করে তোলে
জিমে সঙ্গীদের সঙ্গে সহজেই মেলামেশা করা যায়। সেটা পরের ধাপে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়
দু’জনেই জিমে আসছেন। তার মানে একটা কমন ইন্টারেস্ট তো আছেই
‘‘লক্ষ করেছি সকাল ৬-টা থেকে ৯-টা আর বিকেলে ৫-টা থেকে ৮-টা জিমে ব্যস্ততা থাকে সব চেয়ে বেশি। এই সময়টা যাঁরা সিরিয়াসলি জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে চান, তাঁরা মেশিন পান না। কারণ এই প্রেমিক-প্রেমিকার জুটিরা এই সময়টা সব যন্ত্র দখল করে থাকেন,’’ বলছেন নিয়মিত জিমযাত্রী জয়ন্ত দাস।
ট্রেডমিলে আপনার বিপরীতে যদি কোনও মহিলাকে দেখেন দারুণ মেক আপ করে আছেন অথবা কোনও পুরুষ নিখুঁত ভাবে টি শার্টটি পরছেন, তা হলে জানতে হবে ব্যাপার অন্য রকম। আর তাঁরা যদি এক্সারসাইজের জায়গায় ইতস্তত ওজনযন্ত্র ছড়িয়ে রাখেন, তা হলে বুঝতে হবে ব্যাপার আরও গভীরে।
‘‘আজকাল বহু নারীপুরুষই জিমে যাচ্ছেন মনের মতো সঙ্গী খুঁজে পেতে। নাইটক্লাবের পরিবেশে সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার চেয়ে জিমে কারও সঙ্গে দেখা হওয়া অনেক বেশি সুন্দর বলেই মনে করছেন অনেকে,’’ বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুপরিচিত জিম ট্রেনার। তবে নিয়মিত জিম-সদস্য পিয়ালি দাস অভিযোগ তুললেন, ‘‘অনেক জিমট্রেনার মহিলাদের সঙ্গে জেনেবুঝে ফ্লার্ট করে।
পার্সোনাল ট্রেনিং করায়। যাতে টাকা বেশি পায়।’’
কিন্তু সবাই তো আর জিমে ফ্লার্ট করতে যাচ্ছেন না। কতগুলো নিয়ম থাকেই। যেমন কেউ কাউকে দেখানোর জন্য শরীরচর্চা করেন না। অথবা বিপরীত লিঙ্গের কারও মনোযোগ আকর্ষণের জন্য অতিরিক্ত শরীরচর্চাও করেন না। যে মেয়েটি জিমে আপনার দিকে তাকিয়ে হাসলেন, তার অন্য কোনও মানে করতে যাবেন না। মনে রাখবেন রোম্যান্স করার আদর্শ জায়গা সব সময় কিন্তু জিম নয়। ফিটনেসই যাঁর জীবনের মন্ত্র, সেই মহুয়া সরকার বললেন, ‘‘আমরা মেয়েরা জিমে যাই একটি লক্ষ্য নিয়ে। তা কী জানেন? যতটা সম্ভব ক্যালোরি পুড়িয়ে ফেলা। কোনও পুরুষ বা প্রেমিকের কথা না ভেবে আমরা তখন শুধুই ঘাম ঝরাই।’’
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়ের কাছে আবার অন্য কথা শোনা গেল। তিনি বলেন, ‘‘অনেক প্রেমপর্ব শুরুই হয় জিম থেকে। অনেক সময় ট্রেডমিলে জুড়িকে দেখেছি অযথা সময় ব্যয় করতে। আমি বাধ্য হয়ে সেখানে হস্তক্ষেপ করি। এখানে প্রেম হয়ে বিয়ে হয়েছে এমন জুড়িও দেখেছি।’’
জিমে গেলে হয়তো খুঁজে পেতে পারেন মনের মতো জীবনসঙ্গী।
সেই সম্পর্ক পরিণতি পেতে পারে বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy