২০২৪ সাক্ষী থাকল এমন একাধিক সম্পর্কের যার মেয়াদ হঠাৎই শেষ হয়ে গেল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন
বিচ্ছেদে মেলায় নতুন প্রেম না কি বিতর্ক! ২০২৪ সাক্ষী থাকল এমন একাধিক সম্পর্কের যার মেয়াদ হঠাৎই শেষ হয়ে গেল। ‘দুজনে ছাড়াছাড়ি যমুনা তীরে’, থুড়ি আরব সাগরের তীরের টিনসেল টাউন সাক্ষী থাকল এমন অজস্র বিচ্ছেদের। সম্পর্কের সূচনা সাধারণত মধুরই হয়ে থাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সম্পর্ক সুখস্মৃতি জমায়। কিছু সম্পর্কের দেওয়ালে জমতে থাকে শ্যাওলা। কখনও তৃতীয় ব্যক্তির আগমন, কখনও বা বনিবনার অভাবে সেই শ্যাওলায় পা পিছলে যায়। এমনই এক বছর ২০২৪। বলা ভাল, এই বছরের শুরু থেকে শেষ জুড়েই যেন বিচ্ছেদের মরসুম।
তুমি সুখ যদি চাও, যাও সুখের সংসারে যাও...
বয়সের ব্যবধান থাকায় বার বার কটাক্ষ ধেয়ে এসেছিল তাঁদের দিকে। তবে সে সবের তোয়াক্কা করেনি বলিউডের ‘পাওয়ার কাপল’— মালাইকা অরোরা ও অর্জুন কপূর। কবে বিয়ে করবেন, তা নিয়ে জল্পনা ছিলই। কিন্তু সে পথে পা বাড়াননি তাঁরা। বরং প্রেমের সম্পর্কেই লাল-নীল সংসার গড়ে তুলেছিলেন। ২০২৪-এর জুনে হঠাৎ ছন্দপতন। পাঁচ বছর একসঙ্গে থাকার পরে বিচ্ছেদের রাস্তা বেছে নেন মালাইকা-অর্জুন। বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি কেউই।
সে চলে গিয়েছে তবুও যায়নি যেমন যায় না আসলে কেউ...
সম্পর্কে নিয়ে কখনওই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেননি তিনি। কিন্তু বিচ্ছেদ ঘোষণায় দুলে উঠল আসমুদ্র হিমাচল— এআর রহমান। সুরকারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুর ২৯ বছরের দাম্পত্য। সেই দাম্পত্যে হঠাৎই চিড়। বনিবনার অভাব ও তিক্ততা বৃদ্ধিতেই নাকি সরাসরি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। এমনই জানান সায়রা বানুর আইনজীবী। তবে এই সিদ্ধান্ত নিতে নাকি বুকে পাথর চাপা দিতে হয়েছিল দু’জনকেই। রহমানের স্বপ্ন ছিল, একসঙ্গে তিরিশটা বছর অন্তত কাটাবেন তাঁরা। কিন্তু ঠিক তার আগেই মেয়াদ ফুরোল দাম্পত্যের। যদিও পরস্পরের প্রতি নাকি রয়েছে এখনও টান। সুযোগ হলে নাকি দাম্পত্যে জোড়াও লাগতে পারে। তিন সন্তান যদিও মেনে নিয়েছেন বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। তবু কোথাও যেন তলানিতে পড়ে রয়েছে সামান্য আশা। সেই আশাই ফের এআর রহমান ও সায়রা বানুর সম্পর্ক জোড়া লাগায় কি না তা দেখতে হবে নতুন বছরে।
যা গেছে তা যাক যাক...
বলিউডে তাঁদের প্রেম নিয়ে গুঞ্জন ছিল। ধরা পড়েছিলেন ছবিশিকারিদের ক্যামেরাতেও। আদিত্য রয় কপূরের নাম শুনলেই অনন্যার চোখে মুখে প্রেমের আলো খেলে যেত। সেই প্রেমেও ভাঙন ধরেছে চলতি বছরে। দু’বছর একসঙ্গে ছিলেন অনন্যা ও আদিত্য রয় কপূর। কিন্তু সেই প্রেম স্থায়িত্ব পায়নি। সম্পর্ক ভাঙার পরে নাকি মন ভেঙেছিল অনন্যার। এক দিন নাকি প্রাক্তন প্রেমিককে অসংখ্য বার ফোন করেও কথা বলতে পারেননি। মন খারাপে শুধুই পোষ্যের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলেন অনন্যা। এর পরে অম্বানীদের বিয়েতে মন খুলে নাচতে দেখা গিয়েছিল অনন্যাকে। সেখানেই নতুন প্রেম খুঁজে পান অভিনেত্রী। প্রাক্তন মডেল তথা অম্বানীদের কর্মী ওয়াকার ব্ল্যাঙ্কোর সঙ্গে মন দেওয়া নেওয়া পর্ব চলে বিয়ের আসরেই। বর্তমানে সম্পর্কে থাকলেও মুখে কুলুপ অনন্যার।
তুমি অন্য কারও সঙ্গে বেঁধো ঘর...
ক্রিকেট তারকা হার্দিক পাণ্ড্য ও তাঁর স্ত্রী নাতাশা স্তানকোভিচের বিচ্ছেদের খবর চমকে দিয়েছিল নেটাগরিকদের। বহু দিনের জল্পনার পর নিজেরাই সমাজমাধ্যমে বিচ্ছেদের ঘোষণা করেন তাঁরা। বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের পর সার্বিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন নাতাশা। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের ছেলে অগস্ত্যকে। তবে বিচ্ছেদের রেশ কাটিয়ে ফের ভারতে ফিরে আসেন নাতাশা। কানাঘুষো শোনা যায়, হার্দিকের আত্মকেন্দ্রিক স্বভাবই নাকি বিচ্ছেদের কারণ। তবে বিচ্ছেদের আসল কারণ নিয়ে কিছুই বলেননি তাঁরা। দেশে ফেরার পরে নতুন করে কাজে মন দিয়েছেন নাতাশা। শরীরচর্চা প্রশিক্ষক বন্ধুর সঙ্গে প্রায়ই তাঁকে দেখা যায়। তাঁরা কি শুধুই বন্ধু? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
যে যায় সে যায়, যে থাকে সে থাকে...
২০১৬ থেকে ২০২৪— আট বছর ফরাসি প্রেমিক সিরিলের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন মল্লিকা শেরাওয়াত। ফরাসি ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন সমস্ত সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী একটাই কথা জানাতেন, তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। সম্প্রতি তিনি ‘ভিকি বিদ্যা কা উওওয়ালা ভিডিয়ো’ ছবি দিয়ে বলিউডে ফিরে আসেন। এর পরেই একাধিক সাক্ষাৎকারে মল্লিকা জানান, তিনি একা। প্রেম ভেঙেছে তাঁর। সাংবাদিকদের এ-ও বলেন, “আমাদের সম্পর্ক খুবই গভীর ছিল। আচমকা তাতে দাঁড়ি পড়ায় ভেঙে পড়েছি। ভীষণ একা আমি। সময় এতটাই জটিল যে ভরসা করার মতো চওড়া কাঁধ পাওয়া সত্যিই মুশকিল!” তাই আপাতত নতুন করে প্রেমে পড়ার কথাও ভাবছেন না অভিনেত্রী।
কেমন যেন আলাদা আলাদা সব...
২০২৪-এর শুরুর দিকেই সম্পর্কে ইতি টানেন হেমা-কন্যা এষা দেওল ও ভরত তখতানি। ২০১২ সালের জুন মাসে হিরে ব্যবসায়ী ভরত তখতানির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন এষা। ২০১৭ সালে প্রথম সন্তান রাধ্যার জন্ম দেন এষা। তার দু’বছর পর দ্বিতীয় সন্তান মীরার জন্ম। সাজানো-গোছানো সংসার হঠাৎ চিড়। শোনা গিয়েছিল, এষার স্বামী ভরত নাকি পরকীয়ায় জড়ান। বেঙ্গালুরুতে প্রেমিকার সঙ্গে একত্রবাসে ছিলেন। সেই কারণেই চরম সিদ্ধান্ত নেন এষা। যদিও বিচ্ছেদের খবর সিলমোহর দিয়ে এষা ও ভরত বলেছিলেন, “যৌথসম্মতিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে আলাদা হয়েছি। আমাদের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল কারণ আমাদের দুই সন্তান। এই সময় আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে গোপনীয়তা বজায় থাকবে এটাই আশা করব।”
কত কী যে সয়ে যেতে হয়...
দু’বছর ধরে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলছিল। আলাদা থাকছিলেন খ্যাতনামী দম্পতি ধনুষ-ঐশ্বর্যা। অবশেষে নভেম্বরে সেই বিচ্ছেদে পড়ে সিলমোহর। ২০০৪ সালে রজনীকান্তের মেয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন ধনুষ। এক যুগেরও বেশি সময় দাম্পত্য কাটানোর পর ২০২২-এ তাঁরা সমাজমাধ্যমে জানান, ১৮ বছর ধরে এক সঙ্গে জীবনের ভালমন্দ ভাগ করেছেন। পাশে পেয়েছেন দুই পরিবার, পরিজন, অজস্র বন্ধু এবং অসংখ্য অনুরাগীদের। তার পরেও আর এক সঙ্গে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। জোর করে ভাঙা সম্পর্ক নিয়ে এগিয়ে যেতে রাজি নন তাঁরা। বরং আগামীতেও যাতে বন্ধুত্ব অটুট থাকে এই ভাবনা নিয়ে তাঁরা বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন। দুই ছেলে যাত্রা আর লিঙ্গ। ছাদ আলাদা হলেও সন্তানদের দেখভাল তাঁরা এক সঙ্গেই করবেন, এ কথা জানিয়েছিলেন উভয়েই।
তীর ভাঙা ঢেউ...
বলিউডের ‘রঙ্গিলা’ কন্যা ঊর্মিলা মাতন্ডকরের জীবনেও ২০২৪ এনে দিয়েছে বিচ্ছেদ। বিয়ের আট বছর পর বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন অভিনেত্রী। স্বামী মহসিন আখতার মিরের বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছেন অভিনেত্রী। বিচ্ছেদের কারণ স্পষ্ট না হলেও, জানা গিয়েছে এই বিচ্ছেদ মসৃণ ভাবে হবে না। তাই আইনি লড়াইয়ে জড়াতে হয়েছে ঊর্মিলাকে। ২০১৬ সালে মহসিনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ঊর্মিলা। ভিন্ধর্মে বিবাহ এবং তার উপর মহসিনের থেকে প্রায় ১০ বছরের বড় ঊর্মিলা। ফলে, এই বিবাহ ঘিরে খানিকটা চাপানউতর ছিলই। তাই খুবই ব্যক্তিগত পরিসরে বিয়ে সেরেছিলেন অভিনেত্রী। সেই বিয়েতেও ভাঙন ২০২৪-এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy