Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Tollywood

‘শ্রীময়ী-রোহিতরা এক হয় না, মা-কাকিমার প্রেমিক ফিরলে মানতে পারবেন সবাই?’

ইউরোপ পর্বে কী দেখতে পেতেন দর্শক? সেই রহস্য অবশ্য এখনই ফাঁস করতে রাজি নন ইন্দ্রাণী।

শ্রীময়ী-রোহিতের রসায়ন নিয়ে দিনে দিনে দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে।

শ্রীময়ী-রোহিতের রসায়ন নিয়ে দিনে দিনে দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে।

উপালি মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ১৭:২৪
Share: Save:

৩০০ পর্ব পেরিয়ে গেল হট অ্যান্ড হ্যাপেনিং ‘শ্রীময়ী’। গত বছর থেকেই সব কাজ সেরে বা দূরে রেখে এক সাদামাটা মেয়ের জন্য ছোটপর্দায় আধ ঘণ্টা ‘বুক’ করে রাখার নেপথ্য কারণ কী, খুঁজে দেখল আনন্দবাজার ডিজিটাল।

লকডাউনের পর আগের মতোই ‘শ্রীময়ী’-কে ঘিরে শোরগোল টেলিপাড়ায়। এই মুহূর্তে সকলের মনেই ঘুরছে, ‘কী হয় কী হয়’ প্রেম! সঙ্গে অবশ্যই গ্ল্যামারাস জুন আন্টির মহিমা। সব মিলিয়ে সম্পর্কের রসায়নে ভাসছে ‘শ্রীময়ী’র দর্শককুল। ধারাবাহিকটি পর্দায় আসার ঠিক আগে ‘শ্রীময়ী’ ইন্দ্রাণী হালদার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, তাঁর আর চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের জুটি সুপারহিট হবে। দর্শক নড়তে পারবেন না সন্ধে ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা।

সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলতেই প্রথম ফোন ইন্দ্রাণীর কাছে। ‘শ্রীময়ী’ নট আউট ৩০০, অতীতের দিকে ফিরে তাকালে কী অনুভূতি হচ্ছে? ফোনের ওপারের হাসি বলে দিল, ভীষণ খুশি অভিনেত্রী, ‘‘ভীষণ গর্ব হচ্ছে এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে। আন্তরিক ধন্যবাদ দর্শকদের, যাঁদের জন্য আমরা ৩০০ পর্ব পার করলাম। কৃতিত্ব লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের, যিনি তাঁর টানটান লেখনি দিয়ে পুরো মেগাকে বেঁধেছেন। আমরা সবাই এক হয়ে পরিশ্রম করেছি। এটা তারই ফসল।’’

সেই সঙ্গে আফসোসও ইন্দ্রাণীর, মার্চ মাসে চিত্রনাট্য মেনে ইউরোপ ভ্রমণের কথা ছিল। সেটি করোনার করুণায় আপাতত বন্ধ। ফলে, গল্পটা যে দিকে যাওয়ার কথা ছিল সে দিক থেকে ঘুরে গিয়েছে। ইউরোপ পর্ব বন্ধ না হলে মেগা আরও টানটান হত। সেটা খচখচ করে বিঁধছে ‘শ্রীময়ী’র।

ইউরোপ পর্বে কী দেখতে পেতেন দর্শক? সেই রহস্য অবশ্য এখনই ফাঁস করতে রাজি নন ইন্দ্রাণী।

শ্রীময়ী-রোহিত জুটিও এত সফল হবে, বুঝতে পেরেছিলেন আগেভাগে? প্রশ্ন উঠতেই ফের আত্মবিশ্বাসী শ্রীময়ী, ‘‘আমি-টোটা ক্লিক করব, এটা নিশ্চিত না থাকলেও এটা বুঝেছিলাম, যিনিই এই চরিত্রে আসবেন তিনিই দর্শক মনে পাকা জায়গা করে নেবেন। সে দিক থেকে টোটা পারফেক্ট এই চরিত্রের জন্য। সব থেকে বড় কথা, পর্দায় আমাদের খুব ভাল দেখাচ্ছেও। তাই বোধহয় এত কৌতূহল। পাশাপাশি টেনশনও ছিল। যেহেতু শ্রীময়ী একদম ঘরোয়া, তাই তার সঙ্গে রোহিতের এই রসায়ন কেমন লাগবে দর্শকদের, ভাবতাম তাই নিয়ে। দিনে দিনে আমাদের নিয়ে দর্শকদের ক্রমশ বেড়ে চলা আগ্রহে আমি নিশ্চিন্ত।’’

আরও পড়ুন: চিনা অ্যাপ টিকটককে বিদায় দিয়ে দুই তারকা সাংসদ মিমি-নুসরত কী বললেন?

তা হলে, সামাজিক দূরত্বের নির্দেশিকা উঠলে নিশ্চয়ই শ্রীময়ী-রোহিত সেন ঘনিষ্ঠ হবে? ‘‘কী হবে কে জানে!’’ চাপা উত্তেজনা ইন্দ্রাণীর গলায়। সেই সঙ্গে হালকা হতাশাও, ‘‘সামাজিক দূরত্ব মেনে অভিনয় যে কী কষ্টের, কী বলব! অনেক দৃশ্যে হয়তো মনে হয়, মাথায় একটু হাত রাখি রোহিতের। সে সবে জলাঞ্জলি। আমাদের মধ্যে এখন ৬ ফুটের বাধা। মুখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে অভিনয়টাও করতে পারছি না। এর মধ্যে যে কী করে প্রেম করতে হচ্ছে, হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি!’’

শুরু থেকে না থাকলেও মেগার টার্নিং পয়েন্টে শ্রীময়ীর জীবনে রোহিত সেনের প্রবেশ। ফলে, মেগায় তিনিও প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ। শুভেচ্ছা জানাতেই আন্তরিক টোটা রায়চৌধুরী। লীনার সঙ্গে আগেও কয়েক বার অন্য ধারাবাহিকে কাজের কথা হয়েছিল। কোনও না কোনও কারণে হয়নি। এ বার রোহিত সেনের অফার পেতে তাই আর কোনও দিকে তাকাননি টোটা। এবং দাবি, ‘‘রোহিত প্রথম দিন থেকে আমায় যা ফিডব্যাক দিয়েছে সেটা একটি ভাল ছবি করার সমান। এই বয়সে, কেরিয়ারের এই জায়গায় পৌঁছে এমন চরিত্রই তো আমাকে মানায়!’’

শ্রীময়ীর স্বামী অনিন্দ্যের জীবনে বান্ধবী জুন আসার জন্যই কি শ্রীময়ীর জীবনে রোহিত এসেছে?

আরও পড়ুন: সিদ্ধার্থের জন্যই সুশান্তের সঙ্গে অশান্তির দাবি রিয়ার, অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম কিন্তু বলছে অন্য কথা

ঠিক একই ভাবে ডে ওয়ান থেকে ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তাঁর অদ্ভুত সাবলীল বোঝাপড়া। এটা কার কৃতিত্ব? টোটা এই ভূমিকাতেও এগিয়ে রাখলেন তাঁর ‘শ্রীময়ী’কেই, ‘‘দুটো বড় কারণে। আমরা ১০ বছর আগে প্রথম করি অতনু ঘোষের ‘অংশুমানের ছবি’। ইন্দ্রাণীর পরিচালনায় একটি ছোট ছবিও করেছিলাম আমি আর অপরাজিতা ঘোষ দাস। ফলে, কমফোর্ট জোন ছিলই। তার ওপর ইন্দ্রাণীর অভিনয় নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। ওর বিপরীতে কাজ করতে গেলে এমনিতেই ভাল অভিনয় হয়ে যায়।’’

ইন্দ্রাণীর মতো টোটাও মিস করছেন ইউরোপ শুটিং। কথায় কথায় জানালেন, ‘শ্রীময়ী’র এই অংশ বাংলা মেগায় নতুন ইতিহাস লিখত। সম্ভবত এই প্রথম দেশের বাইরে গিয়ে শুট হত কোনও ধারাবাহিকের। আপাতত করোনা তাতে দাঁড়ি টেনেছে।

করোনার জন্য দূরে দূরে প্রেম। এতখানি প্লেটোনিক লাভ অভিনয় করতে গিয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে? এ বিষয়ে টোটার মত দু’টি। এক, চিত্রনাট্যে কোথাও খুব কাছাকাছি শ্রীময়ী-রোহিত আসবে সেটা বলা বা দেখানো হয়নি। ফলে, এই দূরত্ব তাঁর কাছে স্বাভাবিক। টোটার দ্বিতীয় পয়েন্ট আরও জোরালো, ‘‘হাতে হাতে রেখে প্রেম বোঝানো খুব সহজ। এক ফ্রেমেও দূরে থেকে সেটা দেখানো ততটাই শক্ত। যদিও শ্রীময়ী-রোহিতের যা বয়স তাতে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে গিয়ে লীনাদি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। আমিও উপভোগ করছি।’’

৩০০ পর্ব পেরিয়েছে ধারাবাহিক, আনন্দবাজার ডিজিটালের থেকেই প্রথম জেনেছেন ‘শ্রীময়ী’র স্রষ্টা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। শুরুতে একদম আটপৌরে মেয়ের গল্প। তারপর পরিস্থিতির চাপে পড়ে তার আগুনে চেহারা, আর এখন লড়াই করতে করতে কলেজ জীবনের প্রেমিককে পাওয়া... প্রশ্নের আগে লীনার জবাব, ‘‘এটাই দেখাতে চেয়েছিলাম। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এক জন অতি সামান্য মেয়ে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ায়, এই জার্নিটাই আমার মেগার বিষয়। সবার প্রচণ্ড পরিশ্রম সেই ভাবনাকে বাস্তব করেছে। এ বারের প্রার্থনা, আরও ৩০০ পেরোক মেগা।’’

শ্রীময়ীর স্বামী অনিন্দ্যের জীবনে বান্ধবী জুন আসার জন্যই কি শ্রীময়ীর জীবনে রোহিত এসেছে? ‘‘একেবারেই না’’, বললেন লীনা। তাঁর দাবি, এটা হওয়ারই ছিল। চিত্রনাট্যের শুরুতে বলা হয়েছিল, কলেজ জীবনে শ্রীময়ীর এমনই এক জন প্রেমিক থাকবে যে পরে ফিরে আসবে। রোহিত সেই চরিত্র।

অনিন্দ্য-জুন এক ছাদের নীচে। শ্রীময়ী-রোহিত হবে না? বোঝালেন লীনা, সবার থেকে কি সব কিছু আশা করা যায়! নাকি মানায় সবাইকে? প্রত্যেক মা-কাকিমার জীবনে এমনই এক প্রেমিক ছিলেন যিনি বরাবর দূর থেকে ভালবেসে গিয়েছেন। রোহিতও তাই। তাঁরা মা-কাকিমার জীবনে ফিরে এলে আমাদের অনেকেরই যেমন মেনে নিতে কষ্ট হবে, তেমনই এখানেও। আমি তো অবাস্তব কিছু দেখাতে চাই না!

৩০০ পর্বে ফাঁস হল না শ্রীময়ী আর রোহিত মিলবে কি না! আগামী পর্বগুলি কি মিলিয়ে দেবে তাদের?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy