ঐন্দ্রিলা ও জয়। —ছবি: সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে।
ঐন্দ্রিলাকে(শর্মা) আপনি চড় মেরেছেন?
না, চড় মারিনি। ঘটনাটা ঘটার পাঁচ মিনিট আগেও ঐন্দ্রিলার সঙ্গে আমার খুব ইয়ার্কি-ঠাট্টা হচ্ছিল। নরম্যালি যেটা হয়, আর্টিস্টকে শটে ডাকা মানেই শট দিতে রেডি হয়েই তিনি শটে যান। আমাকেও শটে ডাকা হয়েছিল। এসপি (সাজেশন প্রেফারেন্স) শট ছিল। সেটের সবাই রেডি। সাজেশনে আমি আর প্রেফারেন্সে ছিলেন আমার সহ অভিনেত্রী (ঐন্দ্রিলা)। কিন্তু তিনি অনেক ক্ষণ ধরে ফোনে কথা বলছিলেন। কার সাথে কথা বলছিলেন সেটা আমার জানার কথা নয়। আমি বলেছিলাম, সেটের বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলে যখন রেডি হবে তখন শটে আসতে। তখন উনি বললেন, “ও শট দিক, আমি চললাম।“তার উত্তরে আমি বলেছিলাম, “আপনি শট দিন। আমি চললাম।“দুজনেই একসঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সরু দরজা। দুজন একসঙ্গে বেরোনো সম্ভব নয়। বেরোনোর জায়গা করে নেওয়ার জন্য ওনার হাতটা ধরে সরিয়ে আমি বেরিয়েছি, বেরোনোর জন্য যেটুকু টাচ করা হয়। দিস ওয়াজ দ্য অনলি টাইম আই টাচড হার। উনি তখন আমাকে বললেন, “হাউ ডেয়ার ইউ টাচ মি!”তখন একটা হিটেড কনভারসেশন স্টার্ট হয়। উত্তেজিত হয়ে কথা বললে এক্সাক্টলি সব কথা তো মনেও থাকে না। কিন্তু থিঙ্কস গট আগলি। পরে ওঁর ইন্টারভিউয়ে পড়ছিলাম আমি নাকি ওঁকে হেড ব্যাং করেছি, অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছি।
সত্যিই এগুলো করেছিলেন?
আমি অস্বীকার করছি না যে গালাগালি দিয়েছি। একটা জিনিস তো মানবেন, এক হাতে তালি বাজে না। নিশ্চয় কিছু বলেছিলেন বলেই... মাথা দিয়ে ওর মাথা ঠুকে দিয়েছি বলছেন... ওইটুকু একটা মেয়ে... যদি সত্যিই মাথা ঠুকে দিতাম, উনিইঞ্জিওরড হয়ে হসপিটালাইজড হয়ে যেতেন। আমারও বাড়িতে তিন জন বোন আছে। একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি, উনি অ্যাটেনশন গ্রো করছেন। সেজন্য ভাবলাম বেটার টু বি সাইলেন্ট। আমি যা বলার আমার প্রোডিউসারকে বলব। কিন্তু দেখলাম, প্রোডিউসাররা ওঁকেই ফেভার করলেন। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, সিরিয়ালটা করব না।
কিন্তু শোনা যাচ্ছে, আপনাকে বাদ দেওয়া হয়েছে?
না। আমি বেরিয়ে এসেছি। আর্টিস্ট ফোরাম থেকে আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আমি ওকে টাচ করেছি কিনা। আপনাকে যা বললাম, ওখানেও তাই বলেছি।
আরও পড়ুন: ক্রমাগত প্রতিবাদ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই, বলছেন বাংলার শিল্পীরা
অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়।
আপনাকে আর্টিস্ট ফোরাম থেকে ব্যান করা হয়েছে?
আমাকে সেটাই জানানো হয়েছে। এটা জানার পর আমি ‘জিয়নকাঠি’ থেকে বেরিয়ে এসেছি এবং যা ঘটেছে সে বিষয়ে কিছু কমেন্ট করব না ঠিক করেছি।আর্টিস্ট ফোরাম যখন এটাই ডিসাইড...... জানি না ঐন্দ্রিলা ক’বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছে। কিন্তু আমি জানি, আমি ক’বছর কাজ করছি।আর্টিস্ট ফোরামের সবাই আমাকে চেনে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ফ্যামিলি কাইন্ড অফ ইন্ডাস্ট্রি।
কত দিনের জন্য ব্যান হয়েছেন?
প্রথমে এক বছর বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে ইম্পা (ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন) থেকে একটা টেক্সট সারকুলেট করা হয়েছে যে, আমাকে আগামি মে মাস পর্যন্ত ব্যান করা হয়েছে। এটা ভোটের পর আর্টিস্ট ফোরামের নতুন কমিটি করেছে। ঘটনাটা যখন ঘটেছিল, তখন পুরনো কমিটি ছিল।
আপনি সায়ন্তিকাকে নাকি আক্রমণ করেছিলেন? এই ঘটনার সঙ্গে সায়ন্তিকার ঘটনার রেফারেন্স টানা হচ্ছে।
মিডিয়া সেটাই প্রচার করেছিল। এখন দুটোকে রিলেট করছে। কিন্তু এরকম কিছু হয়নি। সায়ন্তিকা আর আমি খুব ভাল বন্ধু ছিলাম। একসঙ্গে থাকতাম। আমাদের অনেক জিনিসপত্র শেয়ার করতাম। এমনকি আমাদের গাড়িটা আমার না ওর ছিল তখন অব্দি ঠিক হয়নি।আমি রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলছিলাম।পুলিশ স্টেশনে ড্রাইভার কেস ফাইল করেছিল। একটা ছেলে আর মেয়ের ঝামেলা হলে লোকে ছেলেটিকেই খারাপ বলে। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড, আপনিও একজন মেয়ে এবং আমি বলছি না যে সায়ন্তিকা বা ঐন্দ্রিলা খারাপ। আমারও নিশ্চয় কিছু দোষ আছে। কিন্তু তালি কখনও এক হাতে বাজে না। নিশ্চয় কিছু ঘটেছিল বলেই আমি রিঅ্যাক্ট করেছি।
আরও পড়ুন: সৌরভের চরিত্রে হৃতিক?
ঘটনা দুটো ঘটে যাওয়ার পর সায়ন্তিকা বা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন?
সায়ন্তিকার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। ওর সঙ্গে এবং ওর মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। হয়নি। ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে... ছোটবেলায় স্কুলে যেমন পেরেন্টস-টিচার মিটিং হত সেরকম একটা হয়েছিল। কয়েকজন প্রোডিউসার ছিলেন। আমার মাকে নিয়ে আমি গেছিলাম। ঐন্দ্রিলা তাঁর বাবাকে নিয়ে এসেছিলেন। আমাকে তার আগেরদিন এবং সেদিন বলা হয়, সাষ্টাঙ্গে নমস্কার করে ঐন্দ্রিলার থেকে ক্ষমা চাইতে হবে। আমি পারিনি। এক একুশ বছরের মেয়ের কাছে মজার সেন্সেও মাটিতে শুয়ে পড়ে নমস্কার করা সম্ভব হয়নি।
‘জিয়নকাঠি’ ধারাবাহিকের দৃশ্যে জয় ও ঐন্দ্রিলা।
যার ফলেই কি আপনাকে সিরিয়াল ছাড়তে হল?
আমার মনে হয় তাই। যদি সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে বলতে পারতাম, “আপনি ঐন্দ্রিলা শর্মা। আপনি বিরাট বড় অভিনেত্রী।“ তাহলে আমাকে হয়তো... বলতে পারেন আমার চাকরি যেত না (হাসি)।
কী প্ল্যান এর পর?
‘চোখের তারা তুই’ করার প্রায় দু’বছর পর গেট ব্যাক করেছিলাম ‘জিয়নকাঠি’তে। ভাল রেসপন্সও পেয়েছিলাম। সিরিয়ালটা সান বাংলা চ্যানেলের টপারও হয়েছিল।মিডিয়া থেকে শুরু করে সবাই আমাকে খুব ভালভাবে প্রোজেক্ট করেছিল। আমার চরিত্রটা (ঋষি) এস্টাবলিশ হওয়ার পর ভাল ফিডব্যাকও পাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন ছেড়েই দিতে হল, বাড়িতে বসে থাকলে তো চলবে না। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে যখন ব্যান হয়েছি... এরকম তো নয় যে এই ইন্ডাস্ট্রিতেই আমার বন্ধুরা আছে। দেশের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতেও আমার বন্ধু আছে যারা হয়তো ভাবে না আমি মেয়েদের সঙ্গে ‘খারাপ’ ব্যবহার করে থাকি। সেইসব জায়গাগুলো অ্যাকসেস করার চেষ্টা করছি।
এখানে আর নয়?
দেখুন, মে মাস অব্দি ব্যান আছি। তারপর কাজ খুঁজতেও সময় লাগবে। বিভিন্ন চ্যানেলে যাদের চিনি তাঁদের ইন্ডিভিজুয়ালি গিয়ে গিয়ে বলা সম্ভব নয় যে আসলে কী ঘটেছে। সব মিলিয়ে অনেক সময় লাগবে। সেটা সম্ভব নয়। সেজন্যই অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে ট্রাই করছি। আমাকে কাজ করতে হবে, রোজগার করতে হবে। সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মাইনি যে বাড়িতে বসে বসে কাটিয়ে দেব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy