জয়া আহসান।
ছবির নায়িকা সিনেমা হলের টিকিট কাউন্টারে বসে ছবির টিকিট বিক্রি করছেন। কখনও বা ম্যাজিশিয়ান হয়ে ম্যাজিক দেখাচ্ছেন। কখনও ছুটে যাচ্ছেন ফুটবল মাঠে। ছবির নাম ‘দেবী’ আর নায়িকা জয়া আহসান।
বিষয়টার গভীরে যেতে চাইলে লেখাটা বোধহয় এ ভাবে শুরু করা উচিত...
জ-তে জয়া।
দ-তে দেবী।
C-তে Cinema।
তিনটে এক করলে বোঝা যাচ্ছে অভিনেত্রী জয়া নন, তাঁর নাম দেওয়া ‘সি তে সিনেমা’র প্রযোজক জয়া আহসান তাঁর প্রযোজনার প্রথম ছবি নিয়ে সারা বিশ্ব ছুটে বেড়াচ্ছেন।
ঢাকা থেকে ফোনে উত্তেজিত জয়া বললেন, ‘‘ফর্মুলা মাফিক ছবি না করে যে ভাবনায় বিশ্বাসী সেই ভিন্ন ভিন্ন ধারার ছবি করার বিশ্বাস থেকেই আমার প্রযোজনায় আসা। ‘মিসির আলি’ যেমন বাংলাদেশের এক বিশেষ চরিত্র। তাঁকে ‘দেবী’ ছবিতে ধরতে চেয়েছি। দেবী হরর ফিল্ম। বাংলাদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। এক মাসের বেশি হয়ে গেল মাল্টিপ্লেক্সে হাউজফুল। এমনকি গ্রামের হলগুলোতেও ‘দেবী’ দারুণ ব্যবসা করছে। এটা আমি ভাবিনি।’’
আরও পড়ুন, মুম্বইয়ে দীপবীরের মিনি রিসেপশন, রাতভর পার্টিতে কী কী হল
শুধু কি বাংলাদেশ? তাসমানিয়া আর নিউজিল্যান্ডে ‘দেবী’ দেখানো হয়েছে। অন্য দিকে জয়া জানালেন, ‘‘কোনও বাংলা ছবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এত শো পায়নি ‘দেবী’ যা পেয়েছে। কানাডায় ৫২টা আর অস্ট্রেলিয়ায় ২২টা শো হয়েছে'।
প্রযোজনার এ হেন সাফল্য তিনি তাঁর সহকর্মী রুম্মান রশিদ খানের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান। অভিনেত্রী হিসেবে ভাল ছবিতে কাজ, সাফল্য, পুরস্কার সব পেলেও প্রযোজক হিসেবে এ রকম ছবির জন্য ব্যবসায়িক সাফল্য পেয়ে যারপরনাই খুশি তিনি।
প্রযোজনার দ্বিতীয় ছবির ভাবনাও ভাবা হয়ে গিয়েছে তাঁর।
কিন্তু কলকাতার মানুষ কি ‘দেবী’ থেকে বঞ্চিত হবে?
‘‘একেবারেই না। আমি খুব চেষ্টা করছি ছবিটা কলকাতায় আনার’’ আবেগ জয়ার কণ্ঠে।
আপনি কি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর নায়িকা?
আগামী বছর মুক্তি পাবে উনডোজ প্রোডাকশনের ছবি ‘কণ্ঠ’। দর্শকরা যেমন জয়া আর শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেখার অপেক্ষায় তেমনই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিজয়া’-তে তারা পদ্মা (জয়া) আর নাসিরকে (আবির চট্টোপাধ্যায়) দেখার অপেক্ষায়। ‘বিজয়া’-র কথা বলতেই বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন জয়া, ‘‘এ বারে ‘বিজয়া’ করতে গিয়ে পদ্মার অন্য অনেক রূপের হদিশ পেলাম। যারা ‘বিসর্জন’ দেখেননি, তাঁদেরও ‘বিজয়া’ দেখে ভাল লাগবে সেটা অভিনয় করতে গিয়ে বুঝেছিলাম। কিন্তু ডাবিং করার সময় ছবির সবটা দেখে চমকে গেছি। ‘বিসর্জন’-এর চেয়েও আরও অনেক বেশি লেয়ারে সম্পর্ককে ধরেছেন কৌশিকদা।’’
সামনের বছর আসছে জীবনানন্দ দাশের বায়োপিক আর ‘বৃষ্টি তোমাকে দিলাম’।
আড্ডার প্রসঙ্গ বদলাই। ছবির হিসেবনিকেশের বাইরে গিয়ে প্রশ্ন করি জয়াকে, আপনি কি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির এক নম্বর নায়িকা?
সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে বলেন জয়া, ‘‘শুনুন এক নম্বরের পরে আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনও নম্বর হয় না। তাই আমি এক নম্বরে কোনও দিন থাকতে চাই না। আর সত্যি বলতে কি, এই নম্বরের রেটিং তাঁদের জন্য যাঁরা ফর্মুলার ছবি করেন। আমি তো তা করি না। আমি যে সব শিল্পমানের ছবি করি তার প্রেক্ষিতে দর্শক যদি বলেন, আমি অভিনয় জানি, পারি। আমি তাতেই খুশি।’’ হেসে উঠল যেন জয়ার আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠ।
আরও পড়ুন, বিয়ের জন্য অতিথিদের কাছে উপহারও চেয়ে নিলেন প্রিয়ঙ্কা! দেখে নিন তালিকা
তবে তিনি জানেন এই সময়ে শুধু ভাল অভিনয় করলেই এক নম্বরের র্যাঙ্কিং বা সফল অভিনেত্রী হওয়া যায় না। ‘‘ও সব অর্জন করতে স্ট্র্যাটেজি লাগে। আমি স্ট্র্যাটেজি মেকার হতে চাই না। স্টুডেন্ট হয়ে আজীবন অভিনয় শিখে যেতে চাই’’, সাফ জবাব জয়ার।
কিন্তু সফল নায়িকা হিসেবে গসিপ সামনে এসেছে বহু বার। বিশেষ করে এক পরিচালকের সঙ্গে আপনার প্রেম নিয়ে...
থামিয়ে দেন জয়া। বলেন, ‘‘এই পরিচালককে নিয়ে আমায় জড়িয়ে গসিপটা এ বার বন্ধ করুন না। প্রসঙ্গ ওঠা মানেই অযথা বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া। তবে নায়িকাদের জীবনে রটনা, খ্যাতির সঙ্গে কুৎসাও আসে।’’
সামনের বছর আসছে জয়া অভিনীত জীবনানন্দ দাশের বায়োপিক আর ‘বৃষ্টি তোমাকে দিলাম’।
তাই বলে কি জয়া আহসান প্রেমে পড়েন না?
‘‘অবশ্যই পড়ি। তবে খেয়াল করে দেখবেন আমি একটু সাবধানে থাকি। আমাকে সারা ক্ষণ পার্টিতে দেখবেন না। ছবির জন্য সাক্ষাৎকার বা কাজ করলাম, কথা বললাম। এমনই মুখ দেখাতে আজও লজ্জা পাই। সারা ক্ষণ পাবলিকের সামনে থাকতে চাই না।’’
কিন্তু ইদানীং ইনস্টাগ্রামে হট, গ্ল্যামারাস ছবি দিচ্ছেন...ব্যাপার কী?
‘‘আপনাদেরও ছবি দেব। আমি যেমন শাড়ি পরি তেমনই অন্য রকম গ্ল্যামারাস পোশাকও পরি। এটাই আমি,’’ হাসলেন জয়া।
বাংলাদেশ তাঁকে নিয়ে স্পর্শকাতর। প্রায়ই তাঁকে শুনতে হয়, ‘‘তুই কি ইন্ডিয়ার হয়ে গেলি?’’ জয়া জানেন, বাংলাদেশের নদী, মাটি, বাতাস তাঁকে নিয়ে ‘পজেসিভ’।
‘‘আসলে ঘরের মেয়ে নিয়ে একটা ইনসিকিওরিটি তো কাজ করবেই। এটাও সে রকম,’’ মিঠা গলায় সহজ করে বললেন হেলেঞ্চার ঝোপ আর এক ঝাড় জোনাকি দেখা জয়া আহসান। কথায় কথায় ইংরেজি বলেন না। বরং কম উচ্চারিত হয় এমন মিঠে সহজ বাংলা তাঁর শব্দ হয়ে ফেরে। বাংলাদেশ আর কলকাতার মানুষকে এক ক্যানভাসে ধরার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ‘‘দুই দেশ মিলিয়ে যদি ছবি করতে পারি...।’’
আরও পড়ুন, ফের বিয়ে সুজানকে? হৃতিকের পোস্টে নয়া জল্পনা
বাংলাদেশ তাঁকে রক্তমাংসে গড়েছে। মাটি দিয়েছে। আর কলকাতার দর্শক জানিয়েছে, শিল্পীর জন্য কাঁটাতার নয়। রাজনীতি নয়। দু’দিকেরই বড় টান।
তাই হয়তো জয়া তাঁর প্রিয় কবি বিনয় মজুমদারের কবিতায় বলেন, ‘‘আমরা বিশুদ্ধ দেশে গান হবো, প্রেম হবো, অবয়বহীন/সুর হয়ে লিপ্ত হবো পৃথিবীর সকল আকাশে।’’
জয়া এ দেশের সন্ধ্যাতারা তো ও দেশের শুকতারা!
তারার তিমিরে তাঁর অবগাহন।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy