Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Jaya Ahsan

Jaya Ahsan: ‘চাঁন রাতে’ হাতে মেহেন্দি, লাল ঢাকাই আর মায়ের হাতের সিমাইয়ের পায়েসে আমার ইদ শুরু

ইসলামে কিন্তু ধনী আর দরিদ্রকে কোথাও আলাদা করা হয় না। বলা হয়, রাজা আর ফকির মসজিদে একসঙ্গে নমাজ পড়ে কোলাকুলি করবেন। এটাই আসল ইদ।

ইদ শুধু নিজেদের উৎসব নয়

ইদ শুধু নিজেদের উৎসব নয়

জয়া আহসান
জয়া আহসান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২২ ১৮:২২
Share: Save:

চারিদিকে খুশির রোশনাই। সোমবার যে আমাদের 'চাঁন রাত'। কাল ইদ। এই সোনাঝরা দিনের অপেক্ষাতেই থাকি। কলকাতায় যেমন দুর্গা পুজো উপলক্ষে অনেক রাত অবধি দোকান খোলা থাকে, আমাদের ঢাকাতেও ইদের জন্য রাত তিনটেও কেনাকাটার জন্য সব দোকান খোলা। এ ক'দিন রোজ রাত দশটার পর কেনাকাটা করতে গিয়েছি। ইদ মানেই দেওয়া-নেওয়ার পালা। প্রচুর উপহার যেমন পাই, তেমনই প্রচুর উপহার কিনি। টাকা খরচ করতে করতে আমার ভাঁড়ার শূন্য হয়ে যায়। তবে এই দেওয়ার মধ্যেই যত আনন্দ!

সোমবার আমার বোনের বাড়ি চাঁন রাতে মেয়েদের দল একসঙ্গে হব। এই রাত হাতে মেহেন্দি পরার। নিজেকে সুন্দর করে তোলার। চাঁদের আলোয় হারিয়ে যাওয়ার। এই মেহেন্দি পরতে পরতেই শুরু হবে রান্নার গল্প। হয়তো বোনের রান্নাঘর থেকে ভেসে আসবে সিমাইয়ের পায়েসের গন্ধ। এই গন্ধ আমার জীবনে ইদের বার্তা নিয়ে আসে। মনে পড়ে, মা এ ভাবেই বাড়িতে জাফরান দিয়ে সিমাইয়ের পায়েস রান্না করবে।

আমাদের বাড়িতে মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষের আসা যাওয়া শুরু হবে। প্রত্যেক বারের মতো মা সব ঝামেলা সামলাবে। মোরগ পোলাও, খাসির মাংস, কত রকমের মিষ্টি... আরও অনেক কিছু রান্না হবে।

সাত দিন ধরে চলবে উৎসব। দাওয়াত। সাজ আর খুশির হাওয়া। এই ইদে ছোটরা বড়দের সালাম করবেই। আর বড়রা ছোটদের হাতে 'ইদি' হিসেবে নতুন টাকার নোট দেবেন। এটা দিতেই হয়। ছোটবেলায় আমরা বাড়ির বড়দের সালাম করতে ছুটতাম। টাকা পাব, এই আনন্দে। এখন আমাকে টাকা দিতে হয়। ব্যাঙ্ক থেকে পঞ্চাশ টাকা, একশো টাকা, পাঁচশো টাকার কড়কড়ে নোট তুলে রেখে দিতে হবে সঙ্গে। কে কখন সালাম করবে, বলা তো যায় না। এখন তো দেখি ছেলেমেয়েরা সব কুড়ি-তিরিশ হাজার টাকা করে পায়। আমাদের ছোটবেলায় আমরাও পাঁচ-ছ'হাজার টাকা পেতাম। তাতেই কী মজা হত।

এই ইদ শুধু নিজেদের উৎসব নয়। চারপাশে যে সব মানুষ আমাদের মতো করে ইদ উদযাপন করতে পারছেন না, তাঁদের অর্থ বা সম্পত্তির একটি ছোট অংশ ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই ইদের সার্থকতা। একে আমরা জাকাত বলি। এই উৎসবে আমাদের প্রত্যেকের অর্থ বা সম্পত্তির কিছু অংশ 'জাকাত' হসেবে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতেই হয়। এই রমজান মাস জুড়ে আমি যেমন রাস্তায় আশ্রিত প্রচুর মানুষকে ঠিক করে ইফতার করালাম। পোশাক দিলাম। এই দেওয়ার আনন্দই আলাদা। প্রত্যেক মুসলমান এই ইদে মসজিদে নমাজ পড়তে যাবে। ইসলামে কিন্তু ধনী আর দরিদ্রকে কোথাও আলাদা করা হয় না। বলা হয়, রাজা আর ফকির এক মসজিদে একসঙ্গে নমাজ পড়ে। এক পাত থেকেই ইফতারের খাবার খায়। ইদের ‘জামাত’ শেষে কোলাকুলি করে। এটাই আসল ইদ। নমাজের পরে মসজিদের বাইরে লাইন দিয়ে অনেক মানুষ অপেক্ষা করেন, আর ছেলেরা নতুন পাঞ্জাবি থেকে নতুন টাকা বের করে তাঁদের দেন। অন্তরের আনন্দকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াই ইদের অনুভব। ইদের শান্তি।

অন্য বিষয়গুলি:

Jaya Ahsan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy