সংহতি মঞ্চে। —নিজস্ব চিত্র।
কেউ গাঁয়ে ছোট্ট মুদির দোকান চালান। চাষাবাদ করেই কারও সংসার চলে। কিন্তু প্রতিনিয়ত এঁদের বাঁচার অক্সিজেন জোগায় নাটক। মুখে রং মেখে গ্রামগঞ্জে যাত্রাপালায় অভিনয় করা এ সব ‘প্রান্তিক’ মানুষগুলো কখনও হয়তো ভাবেননি পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় পরবর্তী সিনেমা ‘ইয়ে: দ্য এক্সপ্লোরার’ জন্য বেছে নেবেন কাটোয়া-কেতুগ্রামের যাত্রাশিল্পীদের। সম্প্রতি তারই মহড়া হল কাটোয়ার সংহতি মঞ্চে।
জনা বারো স্থানীয় যাত্রাশিল্পীদের নিয়ে দু’দিনব্যাপী সিনেমার বিশেষ মহড়া করলেন দেবেশবাবু। আজ, শুক্রবার সেই দৃশ্যের চূড়ান্ত শ্যুটিং হওয়ার কথা কাটোয়া সংলগ্ন মুর্শিদাবাদের দক্ষিণখণ্ডতে। কমার্সিয়াল রিলিজ না করে বরং প্রথমে হায়দ্রাবাদ ফিল্ম ফেস্টিভাল’এ মুক্তি পাবে এই ছবি। আগামী বছর প্রেক্ষাগৃহে পাওয়া যাবে গ্রামীণ যাত্রাশিল্পীদের অভিনীত এই ছবি।
কী ভাবে যোগাযোগ হল?
শিল্পী বাবলু পাল, তপন রায়রা বলেন, ‘‘সাগ্নিক নাট্যসংস্থার সঙ্গে বছর পনেরো ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিনয় করেছি। সংস্থার সম্পাদকের সঙ্গে দেবেশবাবু যোগাযোগ করেছিলেন বলেই শুনেছি।’’ তবে পারিশ্রমিক নয়, এক রকম নেশার টানেই ছবিতে অভিনয়ে রাজি হয়েছেন এই বারো জন। সংলাপ মুখস্ত করতে ব্যস্ত প্রবীর দাস, শিশির ঘোষরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের যাত্রা কখনও এত গুরুত্ব দিয়ে পর্দায় আনা হবে ভাবিনি। শুধুমাত্র মুখের ভঙ্গিমা নয়, শরীরী অভিব্যক্তির মাধ্যমেও যে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে হয় তা শিখছি।’’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে থাকছেন দেবশঙ্কর হালদার, অর্পিতা ঘোষ, নিত্য গঙ্গোপাধ্যায়রা।
গ্রামের নাট্যশিল্পীদের দিয়ে ছবিতে অভিনয় কেন? দেবেশবাবু জানালেন, সুইৎজারল্যান্ডের পিটার বিকলসের গল্প ‘কিন্ডারগার্টেন স্টোরিজ’ অবলম্বনে কৌশিক রায়চৌধুরীর চিত্রনাট্যে তৈরি এই সিনেমা সমাজের সেই সব মানুষদের গল্প, যাঁরা অন্যরকম স্বপ্ন দেখার সাহস রাখেন। বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে সেই ডানার শিকড় খুঁজতে চেয়েছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কারও ইচ্ছে-স্বপ্ন-ভাবনা যদি আর পাঁচ জনের থেকে আলাদা হয়, তা হলেই কেন সে ব্রাত্য থাকবে। এককথায় ‘ইয়ে’?’’ এমন উদ্যোগে স্থানীয় শিল্পীরা আরও উৎসাহিত বলে মত নাট্যকর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy