Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

সুবিচার হল কই?

‘জাস্টিস লিগ’ সিনেমার প্রথমার্ধ দেখে প্রথমে যা মনে হয় সেটা হল, এত তাড়া কীসের! লাইন দিয়ে প্রথমেই দেখানো হয়, কে কে সুপারম্যানের জন্য শোকপালন করছে।

ছবির একটি দৃশ্য

ছবির একটি দৃশ্য

সুনীতা কোলে
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share: Save:

জাস্টিস লিগ

পরিচালনা: জ্যাক স্নাইডার

অভিনয়: বেন অ্যাফ্লেক, হেনরি কাভিল, গ্যাল গ্যাডোট, এমি অ্যাডামস, এজরা মিলার, জেসন মোমোয়া, রে ফিশার, জেরেমি আয়রনস, ডায়ান লেন, কিয়ারান হাইন্ডস

৫.৫/১০

যেখানে ‘ব্যাটম্যান ভার্সাস সুপারম্যান’ শেষ হয়, সেখানেই শুরু এ সিনেমার। সুপারম্যানের (হেনরি কাভিল) মৃত্যুতে পৃথিবী শোকস্তব্ধ, সন্ত্রস্ত। সেই ভয় টেনে আনছে প্যারাডিমন বাহিনীকে। তাদের চালনা করছে ভিনগ্রহী শত্রু স্টেপেনউল্‌ফ। পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে তাই ব্যাটম্যান (বেন অ্যাফ্লেক) জড়ো করতে থাকে সুপারহিরোদের।

‘জাস্টিস লিগ’ সিনেমার প্রথমার্ধ দেখে প্রথমে যা মনে হয় সেটা হল, এত তাড়া কীসের! লাইন দিয়ে প্রথমেই দেখানো হয়, কে কে সুপারম্যানের জন্য শোকপালন করছে। তার পরেই আবির্ভাব ঘটতে থাকে ওয়ান্ডার উওম্যান (গ্যাল গ্যাডোট), ফ্ল্যাশ (এজরা মিলার), সাইবর্গ (রে ফিশার) ও অ্যাকোয়াম্যানের (জেসন মোমোয়া)। এদের মধ্যে শেষ তিন জনের ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সে (ডিসিইইউ) এটাই প্রথম আবির্ভাব। একটি চরিত্রকে ভাল ভাবে জেনে ওঠার আগেই হাজির হয়ে যায় আরও এক জন। ঠিকঠাক জমে না তাদের নিজেদের মধ্যে রসায়নও। আর এখানেই মার্ভেলের অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের থেকে পিছিয়ে পড়ে ‘জাস্টিস লিগ’।

ছবির দ্বিতীয় দুর্বলতা হল, গল্প এবং তা বলার ধরন। এমনিতে অনেক সুপারহিরো সিনেমারই গল্প বেশ ক্লিশে। কিন্তু পরিবেশনের গুণে তা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এই ছবি যেন শুধুই কিছু সুপারহিরোর ক্ষমতা প্রদর্শনের জায়গা। তাদের ব্যক্তিগত নৈতিকতা, অনুপ্রেরণা বা দ্বন্দ্ব প্রকাশের কোনও জায়গাই দেওয়া হয়নি। সুপারভিলেনটি কেন ধরাধামে হাজির হল, তা বোঝা গেলেও পৃথিবী ধূলিসাৎ করতে চাওয়ার কারণ তেমন খোলসা করা হল না। পৃথিবী যে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে, সেই নাটকীয়তাও ঠিক দানা বাঁধে না। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা, তা বোঝাতে বার বার একটি মাত্র পরিবারকে দেখানো হয়। বিশ্বজোড়া সঙ্কটের চেহারাটা আঁচ করতে না পেরে দর্শকের কোনও আত্মিক যোগ তৈরি হয় না চরিত্রগুলির সঙ্গে। ইমোশনাল কোশেন্ট সুপারহিরো ছবিকে কোন উচ্চতায় ‌নিয়ে যেতে পারে, তা কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে ‘লোগান’। এই কাজে আবহসংগীত খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারত। কিন্তু হতাশ করেছে তা-ও।

ছবির অ্যাকশন বেশ ভাল। ক্লাইম্যাক্সে অনিয়ন্ত্রিত শক্তির উৎসের প্রভাব এবং ফ্ল্যাশের দৌড়নোর দৃশ্যগুলি বিশেষ ভাবে মনে থাকে। তবে লড়াইয়ের সময়ে কাউকে আশপাশের দেওয়ালে আছড়ে ফেলা বোধহয় এই ছবির কুশীলবদের প্রিয় কাজ। ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ছবির কাছ থেকে এখানে আর একটু উদ্ভাবনী শক্তির প্রত্যাশা ছিল। বেন অ্যাফ্লেক আর হেনরি কাভিল অভিনয়টা পারেন। কিন্তু সুপারহিরো সাজলেই তাঁরা সুপার বোরিং হয়ে যান, কেন কে জানে! ওয়ান্ডার উওম্যান হিসেবে গ্যাল এক কথায় ওয়ান্ডারফুল! সমানে পাল্লা দিয়েছেন এজরা মিলার। ছবির হালকা মুহূর্তগুলো পাওয়া যায় মিলারের কাছ থেকেই। দু’জনের কমিক টাইমিংও ভাল। সাইবর্গের ভূমিকায় ফিশার যথাযথ। জেসন মোমোয়ার ‘সোয়্যাগ’ দেখার মতো, তবে অভিনয়ের বিশেষ সুযোগ তিনি পাননি।

নতুন চরিত্রের আমদানি ও পোস্ট ক্রেডিট দৃশ্য আগামী ছবির জমি তৈরি করে রাখে। ডিসিইইউয়ের ছবির মধ্যে ‘ওয়ান্ডার উওম্যান’-এর পরেই আসবে এই ছবি। কিন্তু ক্লাসে অন্যদের (পড়ুন ‘মার্ভেল’) টেক্কা দিতে গেলে পেরোতে হবে অনেক পথ।

অন্য বিষয়গুলি:

Justice League Zack Snyder Ben Affleck Gal Gadot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE