পরীমণি এবং তসলিমা নাসরিন।
‘সন্তান জন্ম দেওয়ার এত দরকার কেন? মেয়েরা, এমনকী প্রতিষ্ঠিত, সমাজের নানা নিয়ম ভেঙে ফেলা সাহসী মেয়েরাও, তিরিশ পার হলেই সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে!’ মঙ্গলবার রাত থেকে তসলিমা নাসরিনের এই পোস্ট প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, নাম না করে বাংলাদেশের প্রথম সারির নায়িকা পরীমণিকেই কি বিঁধলেন তিনি? সোমবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর ফেসবুকে নিজেই জানান অভিনেত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তোলপাড় দুই বাংলা। পরী জানান, তিনি অভিনেতা শরিফুল রাজের সন্তান গর্ভে ধারণ করেছেন। ওই দিনই রাজ-পরীর গোপন বিয়ের খবরও জানেন সবাই। তার পরেই তসলিমার পোস্ট নজরে পড়ে সবার। দুই তারকার অনুরাগীদের অনুমান, এই পোস্ট সম্ভবত বাংলাদেশি নায়িকার উদ্দেশেই লেখা।
যৌন হেনস্থা থেকে মাদক মামলা--- সম্প্রতি পরীমণির জীবনে ঘটে যাওয়া একের পর এক অঘটনে তাঁকে খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছেন জনপ্রিয় এই লেখিকা। পরীমণির সাহস তাঁকে মুগ্ধ করেছিল সে সময়ে। তার পরেই বাকি মেয়ের মতোই গোপনে বিয়ে এবং প্রকাশ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া বোধ হয় ব্যতিক্রমী নায়িকার থেকে আশা করেননি তিনি। তসলিমা যে কোনও বিষয়েই তাঁর মতপ্রকাশের জন্য বেছে নেন ফেসবুককে। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। লেখিকার মতে, ‘এই ব্যাকুলতা কতটা নিজের জন্য, কতটা পুরুষতান্ত্রিক রীতিনীতি মানার জন্য? আমি কিন্তু মনে করি নিজের জন্য নয়। মেয়েরা সন্তান জন্ম দিতে চায় সমাজের দশটা লোকের জন্য। বাল্যকাল থেকে শুনে আসা, শিখে আসা 'মাতৃত্বেই নারীজন্মের সার্থকতা' জাতীয় বাকোয়াজ মস্তিস্কে কিলবিল করে বলেই মনে করে ইচ্ছেটা বুঝি নিজের।’
তসলিমার এই কথার কিছুটা সমর্থন মিলেছে পরীমণির কথাতেই। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ‘গুণিন’ ছবির ছোট্ট ঝলক পোস্ট করা হয়। সেখানে নেপথ্য কাহিনি হিসেবে রাজ-পরীর বিয়ের দৃশ্য (পর্দায় না বাস্তবে?) দেখানো হয়েছে। বেনারসি, গয়নায় সেজে ওঠা পরী প্রতি মুহূর্তে নিজেকে আয়নায় দেখতে ব্যস্ত। তার পর রাজের সঙ্গে মালাবদল। পাল্কি চড়ে তিনি শ্বশুরবাড়ির পথে। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এই রকম বিয়ের স্বপ্নই আমি বরাবর দেখে এসেছি!’’ তা হলে কি তসলিমার কথাই ঠিক?
উত্তর অজানা। তবে তসলিমার যুক্তি, ‘পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা প্রায় আটশ' কোটি। এত ভিড়ের পৃথিবীতে আপাতত কোনও নতুন জন্ম কাঙ্ক্ষিত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মেয়েরা যদি ভেবে নেয় জন্ম না দিলে তাদের জীবনের কোনও অর্থ নেই, তা হলে তারা যে ভুল তা তাদের বোঝাবে কে! সন্তানের জন্ম তারা দিতেই পারে যদি এমনই তীব্র তাদের আকাঙ্ক্ষা, তারপরও এ কথা ঠিক নয় জন্ম না দিলে তাদের জীবনের কোনও অর্থ নেই। কোনও কোনও মানুষ তাদের জীবনকে শখ করে অর্থহীন করে। তা ছাড়া, কারও জীবনই অর্থহীন নয়। বরং যে ভ্রূণ আজও জন্মায়নি, সে ভ্রূণ অর্থহীন!
যুগে যুগে পৃথিবীর প্রচুর শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ে বিয়ে করেননি, সন্তান জন্মও দেননি!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy