Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
sandhya ray

‘ঘুঁটে দিয়েছিলাম সন্দেশের মতো’

সাত বছর পর  আবার তিনি সিনেমায়। রাজনীতি, সিনেমা ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বললেন সন্ধ্যা রায়ঋতুপর্ণ ঘোষ ‘বাড়িওয়ালি’ ছবিটা আমাকে ভেবেই লিখেছিলেন। কিন্তু করতে পারলাম না, কারণ তখন যাত্রায় ব্যস্ত। তা-ও মাঝেমধ্যে বেশ কিছু ছবির অফার পেয়েছি। স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয়নি।

 সন্ধ্যা রায়। ছবি প্রতিবেদকের

সন্ধ্যা রায়। ছবি প্রতিবেদকের

ঊর্মি নাথ
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: দীর্ঘ দিন পরে আপনি আবার সিনেমায়...

উ: প্রায় সাত-আট বছর পর। শেষ ছবি পিনাকী চৌধুরীর ‘আরোহণ’। রাজনীতিতে আসার পর সময়ের বড্ড অভাব। কখনও দিল্লিতে, কখনও আমার কেন্দ্রে। দৌড়াদৌড়ি লেগেই থাকে। রাজনীতির আগে যাত্রা করতাম। অনেকেই আছেন, একই সঙ্গে যাত্রা, সিনেমা, থিয়েটার... সব করছেন। আমি পারি না। ঋতুপর্ণ ঘোষ ‘বাড়িওয়ালি’ ছবিটা আমাকে ভেবেই লিখেছিলেন। কিন্তু করতে পারলাম না, কারণ তখন যাত্রায় ব্যস্ত। তা-ও মাঝেমধ্যে বেশ কিছু ছবির অফার পেয়েছি। স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয়নি।

প্র: ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’তে এমন কী ছিল যে আপনি ‘না’ করতে পারলেন না?

উ: গল্পটা আমার পড়া ছিল না। শুনেছিলাম, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অনবদ্য রচনা। দ্বিতীয়ত, বাচ্চাদের ছবি। এখন তো বাচ্চাদের জন্য ছবিই হয় না। আমি চাই বাচ্চাদের কথা ভেবে অনেক ছবি হোক। তৃতীয়ত, এই ছবির পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তখন আমার দিল্লিতে লম্বা সেশন চলছে। ফাঁক পেয়ে ১০ দিনের জন্য কলকাতায় এসেছিলাম। সেই সময় অনিন্দ্য বাড়ি এসে আমার কাছ থেকে পাঁচটা দিন দাবি করে বসলেন। উনি ও প্রযোজকমশাই বলেছিলেন, ওঁরা কলেজ পালিয়ে আমার ছবি দেখতে যেতেন! ভক্তদের কথা রাখতেই হল।

প্র: আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়?

উ: অবশ্যই ওটা বড় কারণ। ‘বাঘিনী’, ‘মণিহার’, ‘সংসার সীমান্তে’, ‘গণদেবতা’... একাধিক ছবি সৌমিত্রদার সঙ্গে করেছি। আমিই সম্ভবত সৌমিত্রদার নায়িকা হয়েছি সবচেয়ে বেশি। এত দিন পর ওঁর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মনে হল না অনেক দিন পরে আমরা এক সঙ্গে কাজ করছি।

প্র: রানিমার চরিত্রটার জন্য ঘুঁটে দেওয়া শিখতে হয়েছিল নিশ্চয়ই?

উ: (প্রবল হাসি) না, মোটেও শিখতে হয়নি। কিন্তু এটাও ঠিক, এর আগে আমি কখনও ঘুঁটে দিইনি। আমি গ্রামের মেয়ে। তাই ঘুঁটে দেওয়া দেখেছি। পাড়ার দিদি-মাসিদের ঘুঁটে কুড়োতে সাহায্য করতাম। ঘুঁটে দেওয়ার শটটা কিন্তু এক বারে ওকে হয়েছে। কী পারফেক্ট! ঠিক যেন একটা সন্দেশ! তবে, আমার চরিত্রটা বড্ড ছোট। করে মন ভরেনি। ভেবেছিলাম, কিছু সংলাপ নিজেই যোগ করব। তার পর মনে হল থাক, কৌতুকটা যদি কেটে যায়।

প্র: রানিমার হবি ঘুঁটে দেওয়া, আপনার?

উ: সংসারের কাজ করা। আর সময় পেলেই সারাক্ষণ টিভিতে খবরের চ্যানেলগুলো দেখি। আগে পড়ার অভ্যেস ছিল না, এখন খবরের কাগজটা পড়ি। একটা সময় বাগানের শখ ছিল, এখন আর সময় পাই না।

প্র: আর রান্না?

উ: আমি রান্না করি না। গত চার বছর ধরে কলকাতায় থাকলে হোম ডেলিভারি খেয়ে বেঁচে আছি। আমার জন্য বেশ হালকা করে চমৎকার রাঁধে ওরা।

প্র: ছবি তৈরির কায়দা অনেক কিছুই তো পাল্টে গিয়েছে। টেকনিক, পরিচালনা... আপনার চোখে কোনটা ভাল?

উ: উন্নত টেকনিকের প্রয়োজন খুব। আগে একটা ছবি ছ’মাস বা এক বছর লাগত তৈরি করতে। এখন ২০ দিনে আড়াই ঘণ্টার ছবি তৈরি হয়ে যায়! এক জন শিল্পীর হাতে এখন সময়টা বেশ কম, পেলে হয়তো ছবি আরও ভাল হতো। বিশেষ করে সময় দরকার নতুনদের জন্য। তাঁরা প্রত্যেকে বুদ্ধিমান। সময় পেলে আরও ভাল করবেন। আগে এক টেকে সিন ওকে করতে পারলে সুনাম হতো। বারবার সংলাপ ভুলে শট নষ্ট হওয়া লজ্জার ব্যাপার ছিল। এখন সে সব নেই।

প্র: ষাট বছরের ফিল্মি কেরিয়ারে প্রায় সাড়ে চারশো ছবি করেছেন। সু-অভিনেত্রী হিসেবে আপনি বিখ্যাত। কিন্তু চার বছর আগেও রাজনীতির অ আ ক খ জানতেন না। অথচ অল্প সময়ের মধ্যে সাংসদ হিসেবে মানুষের কাছ থেকে সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন...

উ: এটা সত্যি যে, আমার কোনও পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল না। তবে ছায়াছবি এবং রাজনীতি, এই দুটো জায়গায় একটা জিনিস কমন। তা হল, মানুষ। দুটোতেই কাজ করতে হয় মানুষের জন্য। আমি রাজনীতির মোটা মোটা বই পড়িনি। এখনও অনেক পলিসি বুঝে উঠতে পারিনি। তবে সরল ভাবে বুঝেছি যে, এই কাজটা মন দিয়ে করলে মানুষের উপকার হবে এবং তাঁদের ভালবাসা পাওয়া যাবে।

প্র: ছবি করতে গিয়ে তো সুবিধে-অসুবিধের কথা বলা যায়। রাজনীতির ক্ষেত্রে?

উ: রাজনীতিতে বলা যায় না। সুপ্রিমোর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হয়। আর সেটা হওয়াও উচিত। আমাদের নেত্রীর কোনও জবাব হয় না।

প্র: এমন একটা চরিত্র যা করতে মন চায়।

উ: ‘ঠাকুরমার ঝুলি’র ঠাকুরমার চরিত্রটি।

প্র: পরিচালনা বা প্রযোজনার কথা ভাবছেন?

উ: না। সে সময় চলে গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tollywood Actor Actress Film
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy