Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
বর্ণময় জীবনকে ধরেছেন দু’মলাটে।মুখোমুখি কবীর বেদীর
kabir bedi

Kabir Bedi: ‘প্রতিবাদ হওয়ায় এখন হলিউডে বর্ণবৈষম্যের পরিবেশ পাল্টেছে’

বন্ড মুভির ভিলেন হওয়া আমার পরিচিতি এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল।

কবীর বেদী

কবীর বেদী

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩৭
Share: Save:

প্র: আত্মজীবনী লেখার কথা মাথায় এল কী ভাবে?

উ: লেখার ভাবনা অনেক দিন থেকেই ছিল। লকডাউনের সময়ে একটু ফুরসত পেতে ভাবলাম, সময়টা কাজে লাগাই। কারণ, ইট’স নাও অর নেভার।

প্র: আপনার ব্যক্তিগত জীবন বর্ণময়, কখনও বিতর্কিত। সব অধ্যায়ের প্রতি সৎ থাকতে পেরেছেন?

উ: ‘স্টোরিজ় আই মাস্ট টেল’ লিখতে শুরু করার সময়েই ঠিক করেছিলাম, জীবনের সব গল্প সৎ ভাবে মেলে ধরব। সন্তানশোকের কথা লিখতে গিয়ে যেমন যন্ত্রণায় বিহ্বল হয়েছি, আবার প্রথম ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে হলিউডে কেরিয়ার গড়ার অভিজ্ঞতা লিখতে গর্ববোধও হয়েছে।

প্র: ‘দ্য বিটলস’-এর স্মরণীয় সাক্ষাৎকারের কথা দিয়ে লেখা শুরু করেছেন, যেখানে আপনি জন লেননকে মাদকসেবন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?

উ: অল ইন্ডিয়া রেডিয়োর হয়ে সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলাম। এ দেশে এসে একমাত্র ইন্টারভিউ আমাকেই দিয়েছিলেন। পরে অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো ওই ইন্টারভিউ মুছে দেওয়ার পরে রেডিয়ো ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। মুম্বই পাড়ি দিই, ৭০০টাকা পকেটে নিয়ে।

প্র: শান্তিনিকেতনেও তো পড়াশোনা করেছেন কিছু দিন?

উ: হ্যাঁ, এক বছর পড়েছি। আমার মা-বাবা স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি ছোট থেকে পশ্চিমি স্কুলিংয়ে বড় হওয়ায় ওঁদের মনে হয়েছিল, ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আমার পরিচয় হওয়া দরকার। পাঠশালায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখা, গাছের তলায় বসে পড়াশোনা করা, বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলা, মাটিতে বসে খাওয়া... অজস্র স্মৃতি। বাংলা শিখেছিলাম, এখনও বলতে পারি!

প্র: আপনার পরিবারের সঙ্গে তো নেতাজির যোগাযোগও ছিল...

উ: হ্যাঁ। ওঁদের আলাপ হয়েছিল বার্লিনে। আমার মা-বাবা বামপন্থী ও মিশ্র বর্ণের হওয়ায় নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে সাবধানে থাকতেন। সেই সময়ে নেতাজির সঙ্গে ওঁদের বন্ধুত্ব হয়, যে বন্ধুত্ব আজীবন ছিল। বাবা ‘কনটেম্পোরারি ইন্ডিয়া’ প্রকাশ করতেন লাহৌরের প্রেস থেকে। নেতাজি সেখানে নিয়মিত লিখতেন।

প্র: সম্প্রতি প্রিয়ঙ্কা চোপড়া বলেছেন, ভারতীয় তথা এশীয় অভিনেতাদের হলিউডে গিয়ে সাফল্য পাওয়ার পথ প্রশস্ত করেছেন আপনি...

উ: তিনটে মহাদেশে বিস্তৃত আমার কেরিয়ার। আমি যখন হলিউডে গিয়েছিলাম, তখন কোনও এশীয় অভিনেতার জন্য আলাদা করে চরিত্র লেখা হত না। তা সত্ত্বেও ‘অক্টোপুসি’র মতো ছবিতে প্রাধান্য পেয়েছিলাম। বন্ড মুভির ভিলেন হওয়া আমার পরিচিতি এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। যেমন দিয়েছিল ইটালির ‘স্যান্ডোকান’ টিভি সিরিজ়। এ দেশে ‘খুন ভরি মাঙ্গ’-এর মতো ছবি। সে সময়ে দেখেছি, কী ভাবে অভিনেতাদের সাদা চামড়ার উপরে বাদামি রং করে কাজ চালিয়ে নেওয়া হত। পরে প্রতিবাদ হওয়ায় এখন বর্ণবৈষম্যের পরিবেশ পাল্টেছে।

প্র: আত্মজীবনীর কোনও অধ্যায় লিখতে গিয়ে আফসোস হয়েছে?

উ: নাহ... সব অধ্যায়ের কথা লিখতে পেরে আমি গর্বিত। ভুল সিদ্ধান্তও হয়তো নিয়েছি, তবে তা নিয়ে লজ্জিত নই। পরভিন বাবি যখন আমাকে ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছিল, অনেক অন্যায্য কথা বলা হয়েছিল, যেগুলো আমি শুধরোতে পারিনি। তখন তো আর সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না! সেটা থাকলে ইটালিতে আমার খ্যাতি সম্পর্কেও হয়তো এ দেশের মানুষ আঁচ পেতেন!

প্র: নাতনির (আলিয়া এফ) কাজ দেখেন?

উ: ওকে নিয়ে গর্বিত আমি। যেটুকু অর্জন করেছে, নিজের চেষ্টায়। প্রথম ছবির জন্যই পুরস্কার পেয়েছে। নেপোটিজ়ম নিয়ে কথা হবেই। কিন্তু পরিশ্রমের বিকল্প নেই, সেটার উদাহরণ আলিয়া। ভীষণ পরিশ্রমী মেয়ে ও।

অন্য বিষয়গুলি:

Bollywood kabir bedi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy