Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
sanghashree sinha mitra

চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে ছুঁতমার্গ নেই: সঙ্ঘশ্রী

‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’ ছবিতে সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে চমকে দিয়েছেন তিনি। সংঘশ্রী সিংহ মিত্র। অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, কস্টিউম ডিজাইনার থেকে ‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’-এ ব্লু ফিল্মস্টারের অভিনয়। আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতা।

থেকে ‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’-এ ব্লু ফিল্মস্টারের অভিনয় করে চমকে দিয়েছেন সঙ্ঘশ্রী। —সংগৃহীত।

থেকে ‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’-এ ব্লু ফিল্মস্টারের অভিনয় করে চমকে দিয়েছেন সঙ্ঘশ্রী। —সংগৃহীত।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৯ ১৫:১১
Share: Save:

‘ক্রস কানেকশন’, ‘লে ছক্কা’ থেকে এখন ‘শান্তিলাল ও প্রজাপতি রহস্য’। অভিনয়ের জার্নিটা কেমন?
২০০৮-এ ‘ক্রস কানেকশন’ ছবিতে এক জুনিয়র আর্টিস্ট এলেন না। আমি তখন ওই ছবির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। সুদেষ্ণাদি বললেন আমায় অভিনয় করতে। করলাম। এর পর আমি রাজ চক্রবর্তীকে অ্যাসিস্ট করছিলাম। ছবির নাম ‘লে ছক্কা’। ওখানে ঠিক সাত দিন আগে দেবলীনা দত্ত জানালেন, উনি কাজটা করবেন না। ওটাও করতে হয়েছিল, কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমি করলাম। এর পর সৃজিতকে অ্যাসিস্ট করেছি। সৃজিত একটা পার্টিতে বলল, ‘নন্দিনীর চরিত্রটা তুই করছিস।’ হায়দরাবাদে শুট হয়েছিল ‘অটোগ্রাফ’। বুম্বাদার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে ভেবে তো ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওই সময় থেকেই মনে হতে লাগল, অভিনয়টাই যদি করি। কাজ করতেও ভাল লাগে, আলাদা ট্রিটমেন্টও পাওয়া যায়।

সেখান থেকে একেবারে ‘রঞ্চি রোশনি’! ব্লু ফিল্মের অ্যাক্ট্রেস!
হ্যাঁ। খোলামেলা পোশাকে অভিনয়ে বেশ টেনশন ছিল আমার এই ছবিতে। প্রতিমকেও তো সে ভাবে চিনতাম না। বেশ গম্ভীর! বড় যে দৃশ্য আছে ছবিতে, সেখানে গায়ে কোনও আঁচল নেই। ব্লাউজের বোতাম খোলা... খুব চ্যালেঞ্জিং চরিত্র! আসলে এই চরিত্রের শরীর নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ নেই। সেটাই ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি।

সিনেমা থেকে আবার ধারাবাহিকে কেন ফিরলেন?
আমার রেগুলার ইনকামের প্রয়োজন ছিল। কী করব তখন? সকলেই বলছিল, অভিনয়টাই কর। এই জায়গাটাতেই থাক। আমিও অভিনয় নিয়ে থাকতে চাইছিলাম। কিন্তু কে আমায় কাজ দেবে? কাউকে ফোন করে বলতে হবে আমায় কাজ দাও? ইগোতে বাঁধছিল! কিন্তু থাকতে না পেরে সাহানাদিকেই ফোন করলাম। বললাম, আমি অভিনয় করতে চাই, কোনও কাজ থাকলে আমায় বোল। আচ্ছা বলুন, চাকরি যদি চাইতে পারি অভিনয় করতে চাইতে পারব না কেন?

আরও পড়ুন: মায়ের গয়না বন্ধক রেখে ফেলুদাকে নিয়ে তথ্যচিত্র বানিয়েছি: সাগ্নিক

তার পর কী হল?
সে দিন সন্ধেবেলাই ধারাবাহিকে কাজ করার সুযোগ আসে। সাহানাদি এমনিতে খুব কটকটে মুখের ওপর কথা বলে দেয়। কিন্তু আসলে যেমন কাজের মানুষ তেমনই মানুষের পাশে থাকার মানুষ। আমি সত্যি ওর কাছে কৃতজ্ঞ।

ইন্দ্রনীল ঘোষের ছবিতেও আপনি কাজ করেছেন...
এক দিন ফোন এল, ‘আমি চিঙ্কুদা বলছি’। আমি তো ভাবতেই পারিনি। চিঙ্কুদা বললেন, ‘আমি ইন্দ্রনীল ঘোষ বলছি। একটা ছবি করছি, তোমার ‘লে ছক্কা’য় কাজ দেখেছি। তোমার কাজ ভাল লেগেছে। আমার ছবিতে একটা চরিত্র আছে তোমায় করতে হবে।’ আমার কথা ভেবে কেউ চরিত্র লিখছেন, এই ভাবনা থেকেই আমি সে দিন খুব সম্মানিত বোধ করেছিলাম। চিঙ্কুদা আর দীপান্বিতাদি খুব যত্ন নিয়ে ‘শিরোনাম’ ছবিটা করেছেন। ছোট ছোট চরিত্রের প্রতিও ওঁরা খুব যত্নশীল। আমার তো মনে হয় এই জুটি ছবি তৈরির জন্যই এত দিন একসঙ্গে আছে। বিভিন্ন অশান্তির জন্য ছবিটা রিলিজ হচ্ছে না। আমি চাই খুব শিগগিরি ছবিটা আসুক। সব ছবির একটা সময় থাকে। সেটা যেন পেরিয়ে না যায়। দর্শক দেখুক ছবিটা। আর আমার অভিনয়ও দেখুক!

আপনি নিজেকে নিয়ে বেশ গর্বিত?
দেখুন, পারফর্মার মাত্রেই নারসিসিস্ট। সবাই স্বীকার করে না। আমি করছি। আমরা প্রত্যেকেই কাজের মধ্যে দিয়ে অ্যাটেনশন পেতে চাই। দেখুন, আমি যেটা মনে করি সেটাই বলি। এই কথা বললে তার পরিণাম কী হবে তা নিয়ে ভাবি না।

মানে আপনি সাহসী?
ছোট জামা বা হাতকাটা পোশাক পরার ব্যাপারে আমি সাহসী নই। কিন্তু যদি মাঝরাতে কারও জন্য মারপিট করতে হয়, আমি করব। সে দিক থেকে আমি সাহসী।

আরও পড়ুন: ‘বামা বড় হয়ে গেল, আমি কেন বড় হলাম না?’

বুম্বাদার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে ভেবে তো ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলাম: সঙ্ঘশ্রী।

মোটা বলে আপনাকে কটুক্তি শুনতে হয় না?
খুব হয়! আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলেই বলে, কেন এত মোটা? এত মিষ্টি দেখতে, রোগা হও না কেন?

মোটা চেহারার জন্যই কি চরিত্র পান?
হ্যাঁ। এটা এক হাজার ভাগ সত্যি। ইন্ডস্ট্রিতে মোটা চরিত্রের কদর আছে তো। অধিকাংশ চরিত্র সেই কারণেই পাই। দেখুন, অনেকেই বলেন কি ভাল অভিনয় কর! কই, তারা তো কাজ দেয় না!

আপনি নাকি ইন্ডাস্ট্রির হাঁড়ির খবর রাখেন?
আরে চোদ্দো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, ডিজাইনার, অভিনেতা, এরাই তো আমার বন্ধু। এদের খবর তো জানবই। এটা হাঁড়ি বা কড়াই যা-ই হোক, আমি এদের নিয়েই থাকি তো। এমনিতেই আমার পেটে কথা থাকে না। সবে কাজ শুরু করেছি। প্লিজ আর কিছু বলাবেন না আমায়। কোথা থেকে কী বলব, সব কাজ যাবে। প্লিজ...

সামনের দিনে কী কাজ হচ্ছে?
আমি আর আমার স্বপ্ন আছে। সেই নিয়েই চলি আমি। স্বপ্ন ছিল বলেই মালদহ থেকে কলকাতায় আসতে পেরেছি। স্লিম ফিগার না হয়েও কাজ পাচ্ছি। অনেক পরে অভিনয় জীবন শুরু করেছি। ভাবছি, বড় কোনও কাজ করব। বাচ্চাদের, বৃদ্ধদের পাশে থাকব, রাস্তার ইউনাকদের নিয়ে কাজ করব। সেই জন্য একটা এনজিও করেছি। তো সেই স্বপ্নের আর এক প্রান্তে আছে একটা বাচ্চা অ্যাডপ্ট করার ইচ্ছে। আমার মা বলে, আমি খুব ভাল মা হতে পারব... পৃথিবীতে সুন্দর ভালবাসায় থাকতে চাই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE