অভিষেক বসু
প্র: গঙ্গারাম আর অভিষেক কি এখন সমার্থক হয়ে গিয়েছে?
উ: (হাসি) আগে ছিলাম নেতাজি, এখন গঙ্গারাম। চরিত্রটার ব্যাপারে প্রথম যখন শুনি, নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে হয়েছিল। কারণ গঙ্গারামের মতো ‘গান আছে, তাই প্রাণ আছে’ ব্যাপারটা আমার মধ্যেও রয়েছে। ক্লাস সিক্স থেকে ক্লাসিক্যাল শিখেছি, চণ্ডীগড় ঘরানা। ‘গঙ্গারাম’ ধারাবাহিকে অভিনয় শুরু করার পর থেকে ফের গান প্র্যাকটিস করতে, মিউজ়িক্যাল দেখতে শুরু করেছিলাম। তা ছাড়া গঙ্গারামের মতো আমিও হাসিঠাট্টা, হুল্লোড় করতে পছন্দ করি। তাই চরিত্রটাকে আমার নিজেরই একটা অংশ বলা যায়। আবার এর আগে নেতাজির সময় নিজের সিরিয়াস সত্তাটাকে বেশি প্রশ্রয় দিতে হয়েছিল।
প্র: নেতাজির হেয়ারস্টাইল নাকি পুরোটাই আপনার নিজের করা ছিল?
উ: হ্যাঁ, অল্প করে চুল কাটতে কাটতে গিয়েছিলাম। যাতে গ্র্যাজুয়াল হেয়ারফলের ব্যাপারটা বোঝা যায়। আসলে ধারাবাহিকে প্রস্থেটিক্স নিয়মিত ব্যবহার করা এমনিই একটু মুশকিল। চেয়েছিলাম, আমার লুকটা যাতে ন্যাচারাল লাগে। যত দিন ধারাবাহিক চলেছিল, বাইরের কেউ আমাকে টুপি ছাড়া দেখেননি। চুল বড় করাটাও ছিল এক দীর্ঘ অপেক্ষা! এখন আবার গঙ্গারাম চুলটা পেতে আঁচড়ায়। তাই আমাকেও একটু সতর্ক থাকতে হয়। সেটে মাঝে মাঝেই জিজ্ঞেস করে ফেলি, আমাকে বেশি স্মার্ট দেখাচ্ছে না তো? আসলে যে কোনও চরিত্র করার সময়েই একটা ক্যারেক্টার স্কেচ মাথার মধ্যে থাকে। কমিক বুকের চরিত্র হিসেবে মনে মনে এঁকে নিই তার লুকটা।
প্র: আপনার পড়াশোনা তো মাল্টিমিডিয়া নিয়ে। চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে এলেন কেন?
উ: সেন্ট জ়েভিয়ার্সে ব্যাচেলর্স ইন মাল্টিমিডিয়া পড়াকালীনই ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলাম। গ্রাফিক ডিজ়াইনিং, অ্যানিমেশন আমার বরাবরই পছন্দের। তবে ছোট থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম, চাকরির পাশাপাশি অভিনয়ও করতে হবে। পরে বুঝলাম, দুটো একসঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া বেশ মুশকিল। তাই চাকরিটা ছেড়ে দিলাম এক সময়ে। তবে ধারাবাহিক নয়, আমাকে প্রথম বার টিভিতে দেখা গিয়েছিল একটা ডান্স রিয়্যালিটি শোয়ে। সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্রও করেছি। ‘বোঝে না সে বোঝে না’ আমার করা প্রথম ধারাবাহিক।
প্র: ‘নেতাজি’কেই কি কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বলবেন?
উ: সেই অর্থে ‘নেতাজি’ই আমার করা প্রথম লিড চরিত্র। খুব চ্যালেঞ্জিংও ছিল চরিত্রটা। নেতাজিকে নিয়ে তৈরি প্রায় সব সিনেমা, সিরিজ় দেখে ফেলেছিলাম। ‘আমি সুভাষ বলছি’, ‘আমি নেতাজিকে দেখেছি’, ‘নেতাজি ঘরে ফেরে নাই’-এর মতো অনেক বই পড়েছি। তবে টার্নিং পয়েন্ট যদি বলতেই হয়, তা হলে একটা সময়ের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। সেই সময়ে এক দুর্ঘটনার ফলে আমার বাবা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ওই কঠিন সময়ে পরিবারে একমাত্র ভাল খবর ছিল আমি ‘ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ’-এ অর্জুনের চরিত্রটা পেয়েছি। ‘সীমারেখা’র জন্যও পুরস্কার পেয়েছিলাম। ২০১৩ থেকে কাজ করছি টেলিভিশনে। ‘নেতাজি’ বা ‘গঙ্গারাম’-এর জন্য যে ভাবে সাড়া পেয়েছি দর্শকের, তাতে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে হয়।
প্র: অভিনয়ের জন্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া সেরা কমপ্লিমেন্ট কী?
উ: সম্প্রতি মমতাশঙ্কর ‘গঙ্গারাম’-এর একটা এপিসোড দেখে আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেছেন, ‘আমি তোমার ফ্যান হয়ে গিয়েছি।’ এটা আমার কাছে কত বড় প্রাপ্তি, বলে বোঝানো কঠিন। আর একবার কলামন্দিরে এক অনুষ্ঠানে এক ভদ্রমহিলা আমাকে দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। ভদ্রমহিলার বাবা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে ছিলেন। আর সেই সময় ‘নেতাজি’ করতাম আমি।
প্র: প্রেমিকা দিয়া মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনা কবে?
উ: এখনই কোনও প্ল্যান নেই। ওর সঙ্গে ‘সীমারেখা’র সময় থেকে আলাপ। একই পেশায় আছি বলে কাজ নিয়ে আলোচনা করতেও সুবিধে হয়। তা ছাড়া পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব দিয়েই তো কেটে গেল এতগুলো দিন। সেটাই সারা জীবন ধরে রাখতে চাই।
প্র: লকডাউনে দেখাসাক্ষাৎ কমে গিয়ে কি মুশকিল হয়েছে?
উ: নাহ... মুশকিল আর কী! এই পরিস্থিতি যতদিন চলবে, ফোন কিংবা ভিডিয়ো কলই ভরসা। পুলিশের মার খেয়ে কি আর প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করা যায়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy