Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

তারকাদের অন্দরমহল

ফ্ল্যাট বা বাড়ি যাই হোক না কেন দিনের শেষে নিশ্চিন্ত আশ্রয় নিয়ে কী বলছেন তারকারা? নিভৃত আস্তানা সকলেই খোঁজে। সে এক কামরার ছোট ফ্ল্যাট হোক কি বাগান বাড়ি। কারও পছন্দ আকাশ ছুঁইছুঁই বাড়ি। কারও দক্ষিণের বারান্দা না হলে মন ভরে না।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০০:৪৭
Share: Save:

নিভৃত আস্তানা সকলেই খোঁজে। সে এক কামরার ছোট ফ্ল্যাট হোক কি বাগান বাড়ি। কারও পছন্দ আকাশ ছুঁইছুঁই বাড়ি। কারও দক্ষিণের বারান্দা না হলে মন ভরে না।

শহর জুড়ে রিয়েল এস্টেটের বড়-বড় হোর্ডিংয়ে স্বপ্নের বাড়ি কেনার হাতছানি। টলিউ়়ডের সেলিব্রিটিরাও সেই বিজ্ঞাপনে মুখ দেখাচ্ছেন। প্রসেনজিৎ, কোয়েল, দেব, জিৎ, শ্রাবন্তী কোনও না কোনও বিজ্ঞাপনের শরিক। কিন্তু এঁদের অন্দরমহল ঠিক কেমন?

সত্যজিৎ-ঋতুপর্ণ দু’জনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি উৎসবকে ঘিরে। ওখানেই ‘নায়ক’-এর শ্যুটিং করেছিলেন সত্যজিৎ। সেই বাড়িটা কিনেই নিজের মতো করে রেনোভেট করেন প্রসেনজিৎ। ঋতুপর্ণ ‘খেলা’র শ্যুটিং করেছিলেন। প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘দুই লেজেন্ডের স্মৃতি জড়িয়ে আছে বাড়িটা ঘিরে।’’ জানালেন, উৎসবের ইট পর্যন্ত নিজে হাতে কিনেছেন। বাড়ির অন্দরসজ্জার সবটাই তাঁর মস্তিকপ্রসূত। বাড়ির কোন জায়গাটা তাঁর সবচেয়ে আরামের? বললেন, ‘‘তিনটে জায়গা। বাগান, নীচের অফিস আর উপরে বসার ঘরে একটা জায়গা যেখানে সিনেমা দেখি।’’

কোয়েলের ভবানীপুরের মল্লিকবাড়ি একেবারে সাবেকী ধাঁচে তৈরি। পাঁচ বছর বয়সে সেখান থেকে গলফ ক্লাবের বাড়িতে চলে যান নায়িকা। বললেন, ‘‘ওই বাড়ি আমার বাবা-মায়ের প্রাণ। বাবা দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ির প্রত্যেকটা ইট গাঁথিয়েছিলেন। মা তৈরি করেছিলেন তাঁর সাধের বাগান।’’


বিয়ের পর কোয়েল বালিগঞ্জ ফাঁড়ির অভিজাত একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। বললেন, ‘‘১৬ তলার এই ফ্ল্যাট ইট, কাঠ, পাথরের দেওয়ালে নয় রানে আর আমার ভালবাসায় মেশানো এক খোলা প্রান্তর।’’ বাড়ি মানে চোখের আরাম। কোয়েলের বাড়ির রং তাই সাদা। ‘‘আমরা দু’জনেই সাদা পছন্দ করি। তাই বেডরুমের পরদাও সাদা। বারান্দাগুলো এতটাই বড় যে পা ছড়িয়ে আড্ডা দেওয়া যায়। কয়েকটা কুশন রেখেছি ওখানে। কুশন জড়িয়ে রাতের আকাশে তারারা দিব্যি কাছাকাছি চলে আসে,’’ বললেন কোয়েল। অ্যান্টিক জিনিস দিয়ে বাড়ি সাজিয়েছেন তিনি। জানালেন, রানে একবার বারোটা মোমবাতি নিয়ে এসেছিলেন। বিশেষ দিনগুলোতে বাড়ির সব আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেন দু’জনে! পরিবেশটাই মধুর হয়ে যায়।

লোপামুদ্রা মিত্রর আবার একটু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না থাকলে ভাল লাগে না। হেসে বললেন, ‘‘বাড়ির যে অংশটা অগোছালো। ম্যাগাজিন আর বই টেব্‌ল ছাড়িয়ে মাটিতে সেটাই আমার জায়গা। খুব বেশিদিন এক বাড়িতে থাকতে আমার মন চায় না। সামনের আকাশটা বড্ড ছোট হয়ে গিয়েছে। আগের মতো কৃষ্ণচূড়ার দেখাও মেলে না।’’ তবে স্বামী জয়ের বকুনির ভয়ে বাড়ি বদলের কথা আর মুখে আনেন না লোপামুদ্রা। গায়িকা বেড়াতে ভালবাসেন। রাজস্থান থেকে রুপোর বাজনদারের মূর্তি, বর্ধমান থেকে সারিন্দা নিয়ে এসেছিলেন বাড়ির জন্য। বাগান লোপামুদ্রার কাছে নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা। লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে এক চিলতে বাগানে লেবু, টমেটো, লঙ্কা ফলিয়েছেন। বললেন, ‘‘ওই বাগানটাতেই নিজেকে খুঁজে পাই।’’

আরও পড়ুন: নাবালিকা অপহরণে ধৃত গুণিন

বাগান ভালবাসেন মিমিও। ছোটবেলার উত্তরবঙ্গের বাড়ি আর বাগান এখনও মিস করেন। ‘‘একটু ছড়ানো জায়গা না হলে চলে? আমার পোষ্য ম্যাক্স আর চিকুর জন্য বাগান বাড়ি হলে দিব্যি হত। তবে কলকাতায় তো সেটা সম্ভব নয়। হাউজিং কমপ্লেক্সেই চালিয়ে নিতে হয়’’ বললেন মিমি। কসবায় নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন। কাজের চাপে সময় দিতে পারছেন না। ইন্টিরিয়র ডিজাইনারই ভরসা। মিমি এখন যেখানে থাকেন সেই বাড়ির দেওয়ালে তাঁর ছোটবেলার আঁকা ছবি রয়েছে। নতুন ফ্ল্যাটের নতুন পেন্টিং করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।

ছাদ আর বারান্দা দু’টোই যদি মেলে তা হলে তো সোনায় সোহাগা। সেটাই হয়েছে পার্নো মিত্রর। দক্ষিণ-পূর্ব খোলা বারান্দায় কফি হাতে বসতে দিব্যি লাগে তাঁর। সল্টলেকের ফ্ল্যাট ছেড়ে বালিগঞ্জে নতুন আস্তানা নিয়েছেন পার্নো। পুরনো আমলের বাড়ির একটা অংশ কিনেছেন তিনি। নিজের মতো করে রেনোভেট করেছেন। এখনও পুরোপুরি সাজিয়ে উঠতে পারেননি। জবরজং বসত বাড়ি তাঁর পছন্দ নয়। ডিজাইনার নয়, পার্নো নিজেই বাড়িটা সাজাচ্ছেন। ‘‘বাড়ির টাইলস, মার্বেল, ল্যাম্প শেড প্রতিটা জিনিস নিজের হাতে কিনেছি,’’ বললেন পার্নো।

রাজ চক্রবর্তী অবশ্য তাঁর বাড়ি সাজানোর পুরো দায়িত্বটা ডিজাইনারের হাতেই দিয়েছেন। তাঁর ৩১তলা উঁচু ফ্ল্যাট থেকে আকাশটা বড্ড কাছের মনে হয়। হালিশহরে রাজের দু’টো বাড়ি। একটায় ছোটবেলায় থাকতেন। ওখানেই মায়ের জন্য আর একটা বাংলো তৈরি করে দিয়েছেন রাজ।

আজও ইচ্ছে আছে পুরনো বাড়ি কেনার। আপাতত বান্ধবী ইকার সঙ্গে খয়েরি, সবজেটে রং দিয়ে বাড়ি সাজিয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ‘‘বাড়িতে প্রচুর জিনিস এনে সাজিয়ে রাখব।
বাড়িটা হোটেলের মতো ঝাঁ চকচকে করে রাখতে চাই না। বরং আমার পছন্দ পুরনো আসবাব।’’ দেশি-বিদেশি ছবির পোস্টার দিয়ে বাড়ি সাজিয়েছেন পরম। হিরণ মিত্রর আঁকা তাঁর বাবা-মায়ের পোট্রেট পরমব্রতর খুব পছন্দের। বাড়ির স্টাডিটাই পরমের সবচেয়ে পছন্দের জায়গা। আড্ডা থেকে ছবির কাজ সবই এখানে বসে করেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Tollywood Prosenjit Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy