Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ফিল্ম রিভিউ ‘ডিটেকটিভ’: হালকা চালে হাস্যরসাত্মক উপস্থাপনা

মন্মথ ও সুধা,এই দুই তরুণ-তরুণী পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরস্পরের থেকে দূরে চলে যায়।কিন্তু তাদের ভালবাসা তো মরেনি। মন্মথর অনুরোধ মতো সুধা প্রতি সন্ধ্যায় একটি শেজবাতি জ্বালিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায় কিছুক্ষণের জন্য।মন্মথ দূর থেকে তাকে দেখে চলে যায়।

ছবির একটি দৃশ্য।

ছবির একটি দৃশ্য।

শতরূপা সান্যাল
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২০ ১৯:৪৯
Share: Save:

ডিটেকটিভ

অভিনয়ে: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, ইশা সাহা, সাহেব ভট্টাচার্য, তৃণা সাহা, কৌশিক চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ

পরিচালনা: জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

সারা দুনিয়া জুড়ে এখন করোনা অতিমারির কালো ছায়া। সিনেমা থিয়েটার মেলা খেলা সব বন্ধ। এখন বিনোদনের জন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মকেই অনেকটা নির্ভরযোগ্য মনে হচ্ছে। অনেকগুলো ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এরমধ্যে এসেও গিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, দর্শকের নিজের সময় অনুযায়ী যখন খুশি সিনেমা দেখা যায়। এই প্যানডেমিকের মধ্যে সম্ভবত এই প্রথম একটা নতুন বাংলা সিনেমা ওটিটি-তেই মুক্তি পেল। জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গল্প অবলম্বনে ‘ডিটেকটিভ’।

মহিমচন্দ্র একজন সরকারি ডিটেকটিভ।ইংরেজ শাসনের পুলিশে চাকরি করে সে।অল্পদিন হল বিয়েহয়েছেতার। স্ত্রীর নাম সুধামুখী ।কিন্তু নববধূর প্রতিতে মন কোনও আগ্রহ বা আকর্ষণ নেই তার।সর্বদা শার্লক হোমসের ডিটেকটিভ উপন্যাস পড়ায় মগ্ন এবং ওই রকম দুর্দান্ত একজন ডিটেকটিভ হওয়ার দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।সে এদেশের ক্রিমিনালদের উপর যার-পর-নাই বিরক্ত। কেননা, এদেশের ক্রিমিনালদের অপরাধ সংঘটনের মধ্যে কোনও প্যাঁচ নেই।বড় সাদামাটা।তার উপর আবার ক্রিমিনাল হিসেবে পাকড়াও করা হয় যেসব স্বদেশি আন্দোলন করা তরুণদের, তাদের অপরাধ তারা নিজেরাই স্বীকার করে নেয়। মহিমচন্দ্রের মনের মতো ডিটেকটিভগিরি আর করাই হয়না। মহিমচন্দ্রের সহকারী হল হুতাশন। মহিম তাকে ওয়াটসন বলে ডেকে তৃপ্তি পায়। হুতাশন ‘ওয়াটসন’হলেই তার পক্ষে ‘শার্লক হোমস’হয়ে ওঠা সম্ভব।

হুতাশনরূপী অম্বরীশ ভট্টাচার্য অসাধারণ। এই চরিত্রের টাইমিং,বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভাল লাগতে বাধ্য

সুধামুখী সুন্দরী,শিক্ষিতা,বুদ্ধিমতী। সুধার কাছে মহিমচন্দ্র তার সরকারি ডিটেকটিভ পরিচয়টা গোপন রেখেছিল। সুধামুখী জানেনা তার স্বামী কী চাকরি করে। সে নিজে ব্রিটিশ বিরোধী ও স্বদেশপ্রেমী। বিয়ের আগে সে ভালবেসেছিল তারই এক সতীর্থ মন্মথকে। মন্মথর সঙ্গে সে-ও ছিল স্বদেশি দলেরই একজন। মন্মথর প্রতি তার অনুরাগকেই তার অপরাধ হিসেবে দেখেছিলেনতাদের মাস্টারমশাই অরুণাভ।ফলে,সুধাকে দলে আসতে নিষেধ করে দেন তিনি।

মন্মথ ও সুধা,এই দুই তরুণ-তরুণী পরিস্থিতির শিকার হয়ে পরস্পরের থেকে দূরে চলে যায়।কিন্তু তাদের ভালবাসা তো মরেনি। মন্মথর অনুরোধ মতো সুধা প্রতি সন্ধ্যায় একটি শেজবাতি জ্বালিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায় কিছুক্ষণের জন্য।মন্মথ দূর থেকে তাকে দেখে চলে যায়।

ঘটনা পরম্পরায় মহিমচন্দ্রের উপর ভার পড়েব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মাতব্বরদের ধরার। অন্যদিকে, মন্মথর উপর দায়িত্ব পড়ে,ইংরেজ পুলিশের ডিটেকটিভ মহিমচন্দ্রকে নিকেশ করার।

গল্পের সমাপতন হয় অবশ্যই নাটকীয় ভাবে। বিষয়টা সিরিয়াস।কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পের চলনকে মাথায় রেখে, সেইরকম হালকা চালে কিছুটা হাস্যরসাত্মক ভাবে পরিবেশন করা হয়েছে ছবিটি। সিনেমার প্রয়োজনেই হয়তো, গল্পে বেশ কিছু চরিত্র ও ঘটনা সংযোজন করা হয়েছে।

এই প্রচেষ্টায় হুতাশনরূপী অম্বরীশ ভট্টাচার্য অসাধারণ। এই চরিত্রের টাইমিং,বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভাল লাগতে বাধ্য। মহিমচন্দ্র হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য যথাযথ। কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের মাস্টারমশাই-কে ভালই লাগবে। মন্মথ হিসেবে সাহেব ভট্টাচার্যের অভিনয় চরিত্রটির প্রতি সুবিচার করেছে।ইশা সাহার অভিনয়ে সুধামুখীকেও যথেষ্ট ভাল লাগল।

সম্পাদনা, ক্যামেরার কাজ ও পরিচালনা প্রশংসনীয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Detective Movie Review Tollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy