Have a look at the colourful life of geeta kapoor dgtl
Geeta Kapoor
ভালবাসার বহু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে উঠতি মডেলের সঙ্গে প্রেম, ৪৬-এও অবিবাহিত ‘গীতা মা’
মুম্বইয়ের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া গীতা কপূর আজ বলিউডের প্রথম সারির কোরিওগ্রাফার। ছিল না বলিউডি কানেকশন, ছিল না কোনও খানদানি তকমাও। নিজের ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করেই জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে গীতা মা। এসেছে প্রেম, ভেঙেওছে। কেমন ছিল সেই যাত্রাপথ? দেখে নেওয়া যাক।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২০ ১৭:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
মুম্বইয়ের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া গীতা কপূর আজ বলিউডের প্রথম সারির কোরিওগ্রাফার। ছিল না বলিউডি কানেকশন, ছিল না কোনও খানদানি তকমাও। নিজের ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করেই জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে গীতা মা। এসেছে প্রেম, ভেঙেওছে। কেমন ছিল সেই যাত্রাপথ? দেখে নেওয়া যাক।
০২১৮
১৯৭৩ সালের ৫ জুলাই গীতার জন্ম। ছোট থেকেই ভালবাসতেন নাচতে। শিখতেনও নিয়মিত। কিন্তু তথাকথিত নৃত্যশিল্পী হওয়ার ইচ্ছে কোনওদিনই ছিল না তাঁর। তিনি চেয়েছিলেন আকাশ ছুঁতে। বিমানসেবিকা হওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
০৩১৮
সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু বাধ সাধে তাঁর চোখ। ছোটবেলাতেই দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ায় তিন বার বিমান সেবিকার পরীক্ষা দিলেও শারীরিক পরীক্ষার সময় বাদ পড়ে যান তিনি। এ দিকে সংসারের দায়িত্বও বাড়ছিল।
০৪১৮
বাধ্য হয়েই মাত্র ১৫ বছর বয়সে গীতা যোগদান করেন ফারাহ খানের নাচের গ্রুপে। এ দিকে কলেজে পড়ার সময়েই গীতার কাছে আসতে থাকে ছোট ছোট কাজের অফার। নিজেও কাজ করতে শুরু করেন জুনিয়ত আর্টিস্ট হিসেবে। শ্রীদেবীর 'খুদা গাওয়া', অনিল কপূরের 'নায়ক' ছবিতে খুব ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি। একইসঙ্গে চলছিল নাচের তালিমও।
০৫১৮
ফারাহের সঙ্গে গীতার পরিচয়টাও খানিক অদ্ভুত। ফারাহার গায়ে বলিউডের গন্ধ রয়েছে। গীতার গায়ে নেই। তা সত্ত্বেও তাঁদের আলাপ হল কী করে? সে এক মজার কাণ্ড।
০৬১৮
ফারাহের নাচ দেখে গীতার বাবা এক দিন মেয়ের সামনেই প্রশংসায় ফেটে পড়েন। ভীষণ রেগে যান গীতা। মনে মনে হিংসেও হয়। বাবা অন্য কোনও মেয়ের নাচ তাঁর থেকে ভাল বলবে, তা কী করে হয়? এর কিছু দিন পরেই গীতার কাছে একটি অনুষ্ঠানে নাচের প্রস্তাব আসে।
০৭১৮
জানা যায়, ওই অনুষ্ঠানে যাঁর মূলত নাচ করার কথা ছিল, তিনি হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ায় গীতার ডাক পড়েছে। গীতাও মন-প্রাণ ঢেলে দেন সেই শো-তে। তাঁর বাবাও মেয়ের নাচ দেখে মুগ্ধ। এমনকি যে শিল্পীর আদপে সেই অনুষ্ঠানটি করার কথা ছিল তিনিও গীতাকে অভিবাদন জানান।
০৮১৮
সেই শিল্পী আর কেউ নন, ফারাহ খান। নাচ দেখে তিনিই নিজেই গীতাকে তাঁর দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। গীতাও পুরনো হিংসা ভুলে যোগ দেন সেখানে। ফারাহর জন্যই কুছ কুছ হোতা হ্যয় ছবির 'তুঝে ইয়াদ না মেরি আয়ি' গানটি কোরিওগ্রাফ করার সুযোগ পান গীতা। নিজে অভিনয়ও করেন।
০৯১৮
এর পর দিল সে ছবির 'ছাঁইয়া ছাঁইয়া'-সহ আরও বেশ কিছু ছবিতে কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। বাড়তে থাকে পরিচিতও। কিন্তু ফারাহর দলের অংশ হয়ে কাজ করা আর বেশিদিন ভাল লাগছিল না তাঁর। গীতা চাইছিলেন বলিউডে নিজের পরিচয় তৈরি করতে।
১০১৮
যেমন ভাবা সেই কাজ। গীতা বেরিয়ে আসেন ফারাহর গ্রুপ থেকে কিন্তু এটা বলিউড। এ খানে শুধু মাত্র গুণ থাকলেই হয় না। একই সঙ্গে দরকার নেটওয়ার্কিং, যা গীতার ছিল না। ফলে ব্যর্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে আসেন ফারাহর কাছেই।
১১১৮
ফারাহও তাঁকে ফেরাননি। কাছে টেনে আবার কাজ দিতে শুরু করেন। এ দিকে ফারাহ সিনেমা পরিচালনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে তাঁর নাচের গ্রুপের অনেকটা দায়িত্বই গীতার কাঁধে এসে পড়ে। এর পর আর থামেননি গীতা। 'ম্যায় হু না’, 'থোড়া প্যায়ার থোড়া ম্যাজিক', 'হে বেবি'-সহ বিখ্যাত প্রযোজনা সংস্থাগুলির ছবির ডান্স কোরিওগ্রাফ করার দায়িত্ব তখন তাঁর উপর। পরিচিত বাড়তে থাকে ক্রমশ।
১২১৮
এরই মধ্যে ফারাহর ভাই সাজিদ খান প্রেমপ্রস্তাব দেন গীতাকে। কিন্তু গীতা তা ফিরিয়ে দেন। শুধু সাজিদ খানই নন, ইন্ডাস্ট্রির অনেক নামি দামি পরিচালক, অভিনেতাও তাঁকে বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু সেখানেও সটান না বলে দেন গীতা কপুর। তিনি চেয়েছিলেন নিজের কেরিয়ার সাজাতে, আরও পোক্ত করতে।
১৩১৮
টাকা পয়সার অভাব কাটিয়ে উঠছিলেন, ইন্ডাস্ট্রির মানুষজনও তাঁকে ক্রমশ চিনতে শুরু করেছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ? নায়ক-নায়িকাদের নাচের পিছনে যে আরও বেশ কিছু মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম থাকে সেই কনসেপ্টটাই তো অজানা ছিল সে সময়।
১৪১৮
ঠিক এই সময়েই গীতার জীবনে আশীর্বাদের মতো আসে রিয়ালিটি শো 'ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স'-এ বিচারকের আসন। গীতাও রাজি হয়ে যান। ছোট পর্দার মাধ্যমেই জায়গা করে নেন দর্শকের বসার ঘরে। এই সময়েই শোনা যায়, গীতা নাকি প্রেম করছেন।
১৫১৮
কিন্তু কার সঙ্গে? উঠতি মডেল এবং কোরিওগ্রাফার রাজীব। যদিও সে কথা গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দেন গীতা। বলেন তাঁরা বন্ধু। একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় হাজির হলেও কখনও এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি তিনি।
১৬১৮
গীতার বয়স ৪৬। তিনি আজও অবিবাহিত। বিয়ের প্রসঙ্গ উঠলেই বারেবারেই বলেছেন, এখনও সময় আসেনি। কিন্তু তা সত্বেও গীতা কপূর গীতা মা হয়ে গেলেন কী করে?
১৭১৮
পুরো ক্রেডিটটাই তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের। গীতার নাচের অ্যাকাডেমিতে এক ছাত্র, নাম ফিরোজ। তিনিই প্রথম তাঁকে মা বলে ডাকতে শুরু করেন। যে ভাবে পরম মায়ায় কাজ শেখাতেন গীতা, তা যেন একেবারে মায়ের মতোই। ব্যস সেখান থেকেই শুরু। রিয়ালিটির শো'র মঞ্চ হোক বা সাধারণ জনগণ, সবার কাছেই আজ তিনি ‘গীতা মা’।
১৮১৮
আকাশ ছুঁতে চেয়েছিলেন গীতা, ছুঁলেনও। তবে বিমানসেবিকা হয়ে নয়। নাচের মধ্যে দিয়েই পৌঁছে গেলেন উন্নতির শিখরে।