পাণ্ডব গোয়েন্দারা।
শুরুতেই হুলুস্থূল! ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ নিয়ে একাধিক অনুযোগ সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের। প্রোমো নিয়ে অনুযোগ দর্শকেরও। ধারাবাহিক আসার আগেই তাই টেলিপাড়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম।
সমস্যাটা কী?
আনন্দবাজার ডিজিটালকে ষষ্ঠীপদবাবু জানান, পাঁচ বছর আগেপ্রযোজক রানা সরকার তাঁর সঙ্গে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ নিয়ে একটি চুক্তি করেন। ২ লক্ষ টাকাও দেন চুক্তি অনুযায়ী। চুক্তির কপিও দেন। এর পর সব চুপ। চলতি বছরের জুলাইয়ে ফের ‘পঞ্চ পাণ্ডব’ নিয়ে এগ্রিমেন্টে সই হয় তাঁদের। টাকাও পান। কিন্তু চুক্তির কপি এখনও হাতে পাননি। ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র সমস্ত উপন্যাসের স্বত্ব কিনে নিয়েছেন প্রযোজক? নাকি নির্দিষ্ট উপন্যাস বা গল্প? ঠিক জানেনই না ষষ্ঠীপদবাবু! চুক্তিপত্রে সময়ের হিসেবের গন্ডগোলে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কেও। যিনি স্টার জলসায় একই বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন- রিয়া এবং মহেশ ভট্টের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন শত্রুঘ্ন সিনহা
এরই পাশাপাশি ষষ্ঠীপদবাবু অসন্তুষ্ট প্রোমো ব্যাকগ্রাউন্ডে রাজ চক্রবর্তীর ‘পরিণীতা’র গান বাজানোয়। বিরক্ত বাবলু, বাচ্চুর ‘ক্রাশ’ দেখানোয়। গল্পের পরিবর্তন ঘটিয়ে বাবলুর বাবাকে পুলিশ অফিসারে পরিণত করায়। এই নিয়ে দর্শক এবং পাঠক মহলও ফোনে স্রষ্টার কাছে উগরে দিয়েছে ক্ষোভ।
ফোনে কথোপকথনের সময়েই আশি ছুঁই ছুঁই ষষ্ঠীপদবাবু জানিয়েছিলেন, সোমবার চ্যানেলের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে আবার কথা হবে। কথা রেখেছে জি বাংলা।
‘‘ছোটপর্দায় কিশোর গোয়ন্দা ধারাবাহিক খুবই কম। সেই অভাব পূরণে জি বাংলার প্রয়াস ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’। সাত-আটের দশকে পুজোর গন্ধমাখা এই কিশোর উপন্যাস আজও বহু জনের ছেলেবেলা ফিরিয়ে দেয়। আজকের প্রজন্ম ডিটেকটিভ কাহিনির পোকা। ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের সৃষ্টির হাত ধরেসেই সময়ের বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে তাদের পরিচয় করানোই চ্যানেলের লক্ষ্য’’, বললেন জি বাংলার ক্লাস্টার হেড সম্রাট ঘোষ। চ্যানেলের পক্ষ থেকে সোমবার সকালে কয়েক জন এসেছিলেন লেখকের হাওড়ার বাড়িতে। ষষ্ঠীপদবাবু জানান, চ্যানেলের দাবি, পুরোটাই নাকি মিথ্যে বোঝানো হচ্ছে তাঁকে। তাঁর যা যা অভিযোগ, তেমন কিছুই নাকি দেখানো হয়নি প্রোমোতে! তাই নিয়ে অকারণ হুজ্জুতি। যদিও চুক্তির কপি তিনি এখনও হাতে পাননি।
সত্যিই তাই? প্রোমোর যে যে বিষয়ে দর্শক এবং লেখকের আপত্তি সেগুলো নিতান্তই অকারণ?
বিষয়টি পরিষ্কার করে দিলেন প্রযোজক শিবাজি পাঁজা, লেখককে কেউ ভুল বুঝিয়েছে, ‘পঞ্চ পাণ্ডব’-কে সাহায্যকারী পুলিশ অফিসারকেই বাবলুর বাবা হিসেবে ধারাবাহিকে দেখানো হচ্ছে। এটি বাজে রটনা। সে কথা তাঁরা লেখককে জানাতেই তিনি সন্তুষ্ট।
রাজ চক্রবর্তীর ছবির গান এবং বাবলু-বাচ্চুর ক্রাশ নিয়ে শিবাজির দাবি, ‘‘আমার দিক থেকে নিশ্চিন্ত করছি দর্শকদের, ধারাবাহিকের কোথাও পাঁচ জনের মধ্যে কোনও ক্রাশের গন্ধ পাবেন না।’’ গানের ক্ষেত্রে তাঁর দাবি, এই প্রজন্মের জন্মদিনের সেলিব্রেশনে এখনকার গান বাজতেই পারে। সেটা খুব দোষের?
কিন্তু কম্পিউটার উইজার্ড কেন ল্যাপটপ বা ব্লু টুথের বদলে টেপ রেকর্ডারে গান বাজাবে? এই ত্রুটিটুকু মেনে নিয়েছেন প্রযোজক।
বাকি চুক্তিপত্রের কপি, রাইটস এবং স্বত্বের সময়। প্রযোজক রানা সরকার কথায়, একবারই চুক্তি হয়েছে। গত জুলাইতে নতুন করে কোনও চুক্তি হয়নি। এর জন্য তিনি লেখকের বিস্মৃতিকেই দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, আজীবন ছোট, বড় পর্দা, ওয়েব সিরিজের জন্য তাঁরা পাণ্ডব গোয়েন্দার সমস্ত উপন্যাস, গল্প কিনে নিয়েছেন। শিবাজি ছোট পর্দায় পাণ্ডব গোয়েন্দাকে আনছেন। রানা আনবেন বড় পর্দায়। চুক্তি অনুযায়ী লেখককে সমস্ত টাকাপয়সাও মেটানো হয়ে গিয়েছে।
এখন শুধু অপেক্ষা ৭ সেপ্টেম্বরের। ওই দিন জি বাংলায় শাশুড়ি-বৌমা দ্বন্দ্ব সরিয়ে জেন ওয়াইকে ছোট পর্দার সামনে টেনে আনতে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় আসছে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’। আবহে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। টাইটেল ট্র্যাকে শোনা যাবে শান-এর গলা। পাঁচ কিশোর গোয়ন্দার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে যথাক্রমে রব দে (বাবলু), ঋষভ চক্রবর্তী (বিলু), ময়ূখ চট্টোপাধ্যায় (ভোম্বল), অনুমিতা দত্ত (বাচ্চু), শ্রীতমা মিত্র (বিচ্চু)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy