(বাঁ দিক থেকে) ধারাবাহিক ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’, ‘বঁধুয়া’, ‘দ্বিতীয় বসন্ত’, ‘কনস্টেবল মঞ্জু’। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
দেবী দুর্গা আসছেন। হাজার সমস্যার মধ্যেই সাজ সাজ রব। টেলিপাড়াতেও চূড়ান্ত ব্যস্ততা। পুজোর জন্য বাড়তি পর্বের শুটিং। সঙ্গে মহালয়ার বিশেষ প্রভাতী অনুষ্ঠান। অভিনেতা, টেকনিশিয়ানদের দম ফেলার ফুরসৎ নেই। তার মধ্যেও মনখারাপের চোরা স্রোত। একের পর এক ধারাবাহিক বন্ধের খবরে বিষণ্ণ ছোট পর্দার কিছু অভিনেতা ও টেকনিশিয়ান। তালিকায় স্টার জলসার ‘বঁধুয়া’, সান বাংলার ‘দ্বিতীয় বসন্ত’, ‘কনস্টেবল মঞ্জু’, জ়ি বাংলার ‘কে প্রথম কাছে এসেছি।’
এর মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জি বাংলার ধারাবাহিকটি। পাঁচ মাসের মধ্যে থমকে গেল ঋক-মধুবনীর যাত্রা। খবর, ঘটনায় মুষড়ে পড়েছিলেন ধারাবাহিকের নায়িকা মোহনা মাইতি। ২২ সেপ্টেম্বর শেষ সম্প্রচারের আগে তিনি জানিয়েছিলেন, আচমকা চ্যানেল থেকে খবর পেয়ে তিনি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি। পরে জানতে পারেন, শেষ হয়ে যাচ্ছে ধারাবাহিক। কেন এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে গেল এই ধারাবাহিক? কেউ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে ধারাবাহিকের সেট থেকে খবর ছড়িয়েছে, এর জন্য দায়ী রেটিং চার্ট। ভাল ফল করতে না পারার জন্যই নাকি দাঁড়ি পড়েছে। এই ফাঁক ভরাট করেছে নতুন ধারাবাহিক ‘আনন্দী’।
পুজোর আগে উদ্যাপনের আবহে ধারাবাহিক বন্ধ মানে উপার্জনেও ভাটা। বিষয়টি কতটা সমস্যায় ফেলেছে ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ও অন্যান্য কলাকুশলীদের? সদ্য শেষ হয়েছে স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘বঁধুয়া’। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয়ে হাতেখড়ি জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডুর। তিনিই নায়িকা ‘পেখম’। তাঁর কাছে প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
জ্যোতির্ময়ী অস্বীকার করেননি বিষয়টি। কারও সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও কথা হয়নি তাঁর। না হলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাননি। জানিয়েছেন, ধারাবাহিকে কাজ মানে নিয়মিত পারিশ্রমিক। পুজোর আগে প্রত্যেকেরই খরচ থাকে। আচমকা উপার্জন অনিয়মিত হয়ে পড়লে অবশ্যই কপালে ভাঁজ পড়ে অনেকের। তাঁর কথায়, “হয়তো আমি ভাবছি না। কিন্তু টেকনিশিয়ান বা যাঁরা তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন তাঁদের কাছে বিষয়টি ভাবার মতোই।” তবে, উপার্জন নিয়ে না ভাবলেও প্রথম কাজ এত তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ায় মনখারাপ এড়াতে পারছেন কি? এই প্রসঙ্গে পর্দার ‘পেখম’ বললেন, “সব শুরুর শেষ রয়েছে। মনকে এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছি। মাত্র সাত মাসে দর্শকের থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি আপাতত তাকেই আঁকড়ে ধরেছি।” একই সঙ্গে পরের কাজের প্রতীক্ষায় তিনি।
কথা বলেছেন একই ধারাবাহিকের নায়ক ‘আদিত্য’ ওরফে রিজ়ওয়ান রব্বানি। তাঁর বক্তব্য অন্য। নায়কের কথায়, “এই রেওয়াজ এ বার চালু হতে চলেছে। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আর আগের মতো দীর্ঘ সময় ধরে মেগা দেখানোর পক্ষপাতী নয়। এই ভাবনা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত করতে চলেছে কালার্স বাংলা। তাদের আগামী ধারাবাহিক ১০০ পর্বের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।” দর্শক কি আর আগের মতো ধারাবাহিক দেখছেন না? তাই এই সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন ছিল রিজ়ওয়ানের কাছে। তাঁর দাবি, “দর্শকেরা কাকে বলবেন! পুরোটাই চ্যানেলের সিদ্ধান্ত। ওরা রেটিং চার্টের ফলাফল দেখছে না। তার আগেই ধারাবাহিক বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।” নায়কের মতে, শেষ হওয়ার খবরে দর্শকেরা বরং মনমরা। তাঁরা সমাজমাধ্যমে সে কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন।
সান বাংলার ধারাবাহিক ‘দ্বিতীয় বসন্ত’ এক বছর ধরে চলেছে। কথা ছিল, ডিসেম্বরে শেষ হবে পথচলা। গল্প অনুযায়ী, নায়ক-নায়িকা উভয়েই বিবাহবিচ্ছিন্ন। সন্তানদের নিয়েই তারা ফের বিয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়তে চায়। সমসাময়িক থাকতে আরজি কর-কাণ্ডের ছায়াও পড়েছে ধারাবাহিকে। তার পরেও কেন বন্ধ হয়ে গেল? তা-ও আবার পুজোর আগে? প্রশ্ন ছিল ধারাবাহিকের নায়িকা সোহিনী গুহ রায়ের কাছে। রবিবার শেষ হয়ে যাওয়া ধারাবাহিকের স্থায়িত্ব নিয়ে বিস্মিত তিনিও। তাঁর কথায়, “রেটিং চার্টে ভাল ফল। দর্শকের থেকেও আমরা উৎসাহী মন্তব্য পাচ্ছিলাম সমাজমাধ্যমে। সেই জায়গা থেকে ধারাবাহিকের পথচলা নিয়ে আমাদেরও কোনও সংশয় ছিল না।” তার পরেও আচমকা ধারাবাহিক বন্ধের খবর আসতেই হতচকিত টিমের প্রত্যেকে, জানিয়েছেন তিনি। পুজোর আগে নিয়মিত উপার্জনে বাধা এসেছে বলে অখুশি তিনিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy